মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট
আরডুইনো প্রোগ্রামিং সম্পর্কে বেসিক ধারনা

Image Source:Adafruit Learning system
আরডুইনো প্রোগ্রামিংকম্পিউটারকে নির্দেশনা দিয়ে বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের উপায় হচ্ছে প্রোগামিং। সি, সি প্লাস প্লাস, জাভা, পাইথন ইত্যাদি নানা ধরনের প্রোগ্রামিং এর নাম আমরা জানি। ইদানীং আরডুইনো নামক প্রোগামিং এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আমরা অনেকেই হয়তো এটির সাথে খুব একটা পরিচিত না তবে যাদের ইলেকট্রনিক্স নিয়ে ধারণা আছে তারা এটির সাথে খুবই পরিচিত।আমাদের মধ্যে অনেকেরই রোবোটিক্সে কাজ করার আগ্রহ থাকে বা কাজ করতে চায়। রোবোটিক্সে কাজ করার জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আরডুইনো।যারা রোবোটিক্সে ভালো করতে চায় তাদেরকে অবশ্যই আরডুইনো বা মাইক্রোকন্ট্রোলার শিখতে হবে।
ইলেকট্রনিক্স কে কন্ট্রোল করার একটি টুল হচ্ছে এই আরডুইনো। আরডুইনো সম্পর্কে জানার আগে আমাদের মাইক্রোকন্ট্রোলার সম্পর্কে জানতে হবে। এটি আসলে আইসি(IC)এর মতো একটি চিপ যাকে কোড করা যায় অর্থাৎ কোনো কিছু কোড করার দরকার হলে এটি করে দিবে। আরডুইনোতে একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার থাকে। মাইক্রোকন্ট্রোলার এর অসুবিধা হচ্ছে একে সরাসরি কোড করা যায় না। একে কোড করতে হলে কোড লোডার এর দরকার পরে।কোনো একটা সার্কিটে মাইক্রোকন্ট্রোলার এর সাথে আমরা যদি কোড লোডার ব্যবহার করি তখন সার্কিট টাকে অনেক জটিল মনে হয়। কিন্তু আরডুইনো তে মাইক্রোকন্ট্রোলার এর সাথে কোড লোডার যুক্ত থাকায় আলাদা করে আর কোড লোডার এর প্রয়োজন হয় না তখন একে সরাসরি কোড করা যায়। তাই কোডিং এর কাজটা আরডুইনোতে অনেক সহজভাবেই করা যায়।
অনেকেরই আগ্রহ থাকে আরডুইনো দিয়ে প্রোগ্রামিং শিখার। আরডুইনো শিখার জন্য আরডুইনো এবং সাথে আরো কিছু জিনিসপত্র কিনার প্রয়োজন হয় যদি প্র্যাক্টিকেলি ব্যবহার করতে চাই। কিন্তু এই প্রোগ্রামিং এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এই প্রোগ্রামিং শিখার জন্য এসব জিনিসপত্র না কিনলেও চলবে অর্থাৎ ওয়েবসাইটে সিমুলেশন এর মাধ্যমে কোডিং করেও শিখা যাবে খুব সহজেই। সেই ওয়েবসাইটে সার্কিট ডিজাইন করে তারপর কোড করে কোডটা ঠিকমতো কাজ করছে কিনা সেটা দেখা যাবে। পরবর্তীতে আরডুইনো যদি কিনা হয় তখন ওয়েবসাইটের সিমুলেশন এর মতো করে ঠিকঠাক কানেকশন দিয়ে কোডটা আপলোড করে দেখে নেওয়া যাবে যে আসলেই কোডটা কাজ করছে কিনা। সুতরাং আরডুইনো যাদের কাছে নেই তারা ওয়েবসাইটে সিমুলেশন এর মাধ্যমে অন্তত কোডিং টা শিখে রাখতে পারবে যাতে পরবর্তীতে কাজগুলো করা সহজ হয়ে যায়। এছাড়া আমরা আরডুইনো এর যে সফটওয়্যার আছে সেটিও আমরা আমাদের কম্পিউটারে ডাউনলোড করে আরডুইনো বোর্ডে কোডিং করতে পারব ।

আরডুইনো দিয়ে বিভিন্ন ধরনের প্রজেক্ট বানানো যায়। আমরা চাইলে বাসার লাইট, ফ্যান অটোমেটিক করতে পারব যেমন কেউ যদি রুমে ঢুকে তখন অটোমেটিক লাইট বা ফ্যান জ্বলে উঠবে বা রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যাবে। বাসার বাইরে থেকে লাইট বা ফ্যান অফ অন করা যাবে। এভাবে আমরা কন্ট্রোল করতে পারব। ড্রোনের মত একটা কমপ্লেক্স জিনিসও এর সাহায্যে চাইলে আমরা বানাতে পারব। সিকিউরিটি রিলেটেড কাজও আমরা করতে পারি এর সাহায্যে যেমনঃদরজার মধ্যে লক সিস্টেম সেট করে দেওয়া। এছাড়া এলইডি লাইট জ্বালানো নিভানো, লাইটকে ব্লিংক করানো, এলসিডি ডিসপ্লেতে কোনো ভেল্যু দেখানো, ক্যালকুলেটর বানানো এরকম অসংখ্য কাজ করা যায়। বিগিনারদের জন্য এটি অনেক সহজ।
আরডুইনো বোর্ড তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক বোর্ড এর তুলনায় দামে অনেক কম। এটি একটি ওপেন সোর্স প্লাটফর্ম। কোনো প্রজেক্ট এর ইনপুট আউটপুট কে কন্ট্রোল করতে চাইলে আরডুইনো দিয়ে সেটা করতে পারব। আরডুইনো প্রোগ্রামিং নিয়ে কাজ করতে চাইলে এর জন্য বেসিক কিছু প্রোগামিং রুলস সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।এর বিভিন্ন ফাংশন নিয়ে ধারণা থাকতে হবে। যেমনঃ ভয়েড সেটআপ, লুপ, পিনমোড, ডিলেয় ইত্যাদি। জব মার্কেটে কোডিং বা প্রোগ্রামিং স্কিল এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।তাই নতুন কোনো প্রোগ্রামিং শিখতে পারলে এটি পরবর্তীতে ফিউচারে বিভিন্ন কাজে আসবে।
লিখেছেনঃআফসারা তাসনিম