ক্যারিয়ার গড়তে সিভি লেখায় সঠিকতা

 ক্যারিয়ার গড়তে সিভি লেখায় সঠিকতা

tylermcginnis.com

চাকরির এই প্রতিযোগিতামূলক বাজারে সিভির সঠিক নিয়ম জানাটা যে কতটা জরুরি তা হয়তো অনেকে বুঝে উঠেও বুঝতে পারছে না।কারণ এত এত ইউটিউব বা ফিচার পড়ে সঠিক নিয়ম জানাটা সত্যিকার অর্থেই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।সময়ের অভাবে অনেকে দোকান থেকে কপি পেস্ট করে দেন যা আপনার ইন্টারভিউয়ার অনুৎসাহিত করে তোলে। তাই আজ আমি আপনাদের সামনে সিভি তৈরি করার সঠিক নিয়মটা তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

প্রথমে আপনাকে ওর্য়াড ফাইলে সিভির ডান পাশে নাম, পূর্ণ ঠিকানা, মোবাইল নাম্বার ও ইমেইল দিতে হবে। অবশ্যই বর্তমান ঠিকানা দেওয়া চাই কারণ চাকরি বা ইন্টারভিউয়ার আপনার সাথে যোগাযোগে ব্যর্থ হলে সেই ব্যর্থতা কিন্তু আপনারই। এরপর ঠিক বাম পাশে আপনার পার্সপোট সাইজের ছবি দিবেন।

খেয়াল রাখবেনঃ

  • ছবিটা যেন মার্জিত হয়।
  • কোন সেলফি বা গর্জিয়াস লুকের ছবি যেন না দেওয়া হয়।
  • ছবির পরিমাপ যেন খুব বড় বা ছোট না হয়
  • আপনার বুকের উপর থেকে মাথা পর্যন্ত যেন ক্লিয়ার বোঝা যায়।

কোন মনমরা বা রাগী আবার বেশি হাস্যজ্বল ছবি না দিয়ে স্মীত হাস্যজ্বল ছবি দিবেন। অনেকে ভাবেন ছবি তেমন গুরুত্বপূর্ণ না বলে যেনতেন দিয়ে থাকেন কিন্তু এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।

পরের ধাপে যে চাকরির জন্য আপনি আবেদন করবেন তার ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ অনুসারে আপনার ক্যারিয়ার অবজেক্টিভগুলো লেখবেন।খেয়াল রাখবেন অল্প ও সাজানো কথায় তুলে ধরতে। বাড়তি জিনিস লিখতে যাবেন না।

এরপর আসবে আপনার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাসমূহ। আপনি আপনার শিক্ষাগত জীবনে কি ধরনের কাজ করেছেন, সেই কাজ থেকে আপনার শেখা অভিজ্ঞতা লিখবেন। কোন পার্ট টাইম জব করে থাকলে এই জায়গায় কি ধরনের জব করতেন, আপনার পদ, কতদিন করেছেন এবং সেই প্রতিষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিবেন।

এখন আপনি আপনার অ্যাকাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড এর ক্ষেত্রে গ্রাজুয়েশন, এইচ.এস.সি. ও এস.এস.সি. এর গ্রেড ও প্রতিষ্ঠানের নাম বলবেন, পাশের সাল জানাবেন। শুরুটা করবেন সর্বশেষ ডিগ্রী দিয়ে।

Image:creativemarket.com

পরের ধাপে আপনার এক্সটা ক্যারিকুলার এর বিস্তারিত বিবরণ জানাবেন সেগুলো যোগ না করলেই নয়। আপনার এক্সটা ক্যারিকুলার এ বিশেষ অর্জন থাকলে সেটাও অবশ্যই উল্লেখ করবেন।

পার্সেনাল ডিটেইলস এ আপনার নাম (সার্টিফিকেট নাম) বাবা মার নাম, তাদের পেশা দেওয়ার প্রয়োজন নেই, ও জন্ম তারিখ জানেবেন।

রেফারেন্স এ আপনি যদি কোন জায়গায় কাজ করে থাকেন তাহলে সেই জায়গার উর্ধতন কর্মকর্তার বিস্তারিত জানাবেন। খেয়াল রাখবেন তিনি যেন আপনাকে ভালো ভাবে চিনেন। যাকে রেফারেন্সে নিবেন তাকেও অবশ্যই বলে রাখবেন কেন, কোথায় ও কিসের জন্য এপ্লাই করেছেন।  আবার আপনার কোন অভিজ্ঞতা নেই তাহলে আপনার টিচারদের বিস্তারিত দিবেন যেন তারা আপনার ব্যাপারে ভালো ধারণা রাখে।

সবশেষে আপনার স্বাক্ষর স্ক্যান করে যোগ করবেন।

এই বিষয়গুলোই শেষ নয়। কিছু কিছু বিষয় আছে যেটা আমরা খেয়াল করিনা। সিভিতে লাল, সবুজ, হলুদ এই কালার গুলো ব্যবহার করবেন না। মেইন পয়েন্ট যেমন ক্যারিয়ার অবজেক্টিভ, পার্সোনাল ডিটেইলস এগুলোর ফ্রন্ট ১৪ এবং বর্ণনামূলক লেখার ফ্রন্ট সাইজ হবে ১২ আপনি চাইলে মেইন পয়েন্ট নীল কালার ব্যবহার করতে পারেন অথবা লম্বা লাইন দিতে পারেন।

সিভি পাঠানোর ক্ষেত্রে ওয়ার্ড ফাইলকে পিডিএফ আকারে পাঠানো বেটার বলে মনে করি কারণ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের সুবিধা অনুযায়ী মাইক্রোসফট অফিস ভার্সন ব্যবহার করে থাকেন।ধরুন আপনি মাইক্রোসফট অফিস ২০০৭ দ্বারা আপনার সিভি তৈরি করেছেন কিন্তু যার কাছে সেটি যাবে তিনি ২০১৬ ব্যবহার করেন। এক্ষেত্রে যেটা হয় অনেক সময় আপনার সাজানোটা এলেমেলো হয়ে যেতে পারে তার মাইক্রোসফট অফিসে।

সিভির ফাইল অবশ্যই আপনার নামে সেইভ করবেন। কিছু ভিডিওতে কর্মকর্তারা বলে থাকেন বেখেয়ালির জন্য সিভির ফাইলের নাম ডাকনাম অথবা অন্য কারো নামে সেইভ করে সেটাই পাঠিয়ে দেন কেউ কেউ। হাতে সময় না থাকলেও এই ভুল কখনও করতে যাবেন না। সিভিতে এমন কিছু দিতে যাবেন না যেটা পুরোপুরি মিথ্যা। মিথ্যার প্রমাণ বের হলে আপনি নিজেই বিপদে পড়বেন।

আশা করি আপনার সংশয় দূর হয়ে যাবে এবং পরিমার্জিত সিভি জমা দিবেন। খেয়াল রাখবেন ইমেইল কিন্তু আপনার নিজস্ব মেইল থেকেই পাঠাতে হবে এবং সেই মেইলটি যেটি আপনি সবসময় চেক করে থাকেন।

লেখকঃসামিহা আতিকা

RedLive

Related post