মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট
চাকুরীই কি জীবনের প্রশান্তি? প্রশ্ন রাখছেন উদ্যোক্তা পথ বেছে নেয়া নুরুন নাহার রুমা

ব্যবসা করার সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে এতে আপনি আপনার বস , আপনি নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন আপনাকে কি কাজ করতে হবে কি কাজ করতে হবে না । কেউ আপনার উপরে কথা বলার থাকবে না । আমার মতে এটা অনেক বড় একটা কারণ মানুষকে চাকরি করার পরিবর্তে নিজের ব্যবসা শুরু করার । চাকরিতে আপনার স্বাধীনতা মালিকের হাতে থাকে যেখানে ব্যবসায় আপনি নিজেই নিজের মালিক ।আপনার নিজের কাছে নিজের সব কাজ ইচ্ছেমতো করার স্বাধীনতা থাকবে। এজন্যই এক নাম্বার সুবিধা হচ্ছে স্বাধীনতা। ব্যবসা আপনাকে স্বাধীনতা দেয়।চাকরি আপনাকে বেঁধে রাখে কয়েদীর মত। আর এমন একজন স্বাধীনতাকামী নারী উদ্যোক্তাই হচ্ছেন যশোর জেলার নুরুন নাহার রুমা।যিনি চাকরি করার চেয়ে বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তা হওয়াকে। আজ জানব তার উদ্যোগ “smell of taste” নিয়ে।
সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ঢাকা মিরপুরের প্রতিনিধি জান্নাতুল ফেরদৌস।
আপনার সম্পর্কে জানতে চাই?
আমি নুরুন নাহার রুমা। তিন ভাইবোনের দ্বিতীয়। বাবা সরকারি চাকুরিজীবী ছিলেন। মা গৃহিণী। জন্ম ও বেড়ে ওঠা যশোরে এবং পরবর্তীতে খুলনায় বসবাস শুরু করি। খুলনা বি এল কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স করেছি।
আপনি উদ্দোক্তা হলেন কিভাবে?
স্টুডেন্ট লাইফ থেকেই চাকুরী করার ইচ্ছা কম ছিলো এবং বিজনেস এর প্রতি খুব আকর্ষণ ছিলো। পরবর্তীতে কিছুটা ইচ্ছা থাকলেও একমাত্র সন্তান সাম্যর সুন্দর মানসিক বিকাশের প্রয়োজনে চাকরির চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলি। তবে সব সময়ই ভাবতাম কিছু একটা করা প্রয়োজন। যেখানে সময় দিয়ে আমার ভালো লাগবে। ছোট্ট বেলা থেকেই রান্নার প্রতি আলাদা একটা ঝোঁক ছিলো এবং প্রথম বেকিং শিখেছিলাম ২০১১ সালে শখ করে। ভাবছিলাম কিছু একটা করব ঘরে বসেই যে কাজটা আমাকে স্বাবলম্বী করবে এবং মানসিক প্রশান্তি আসবে। দেখলাম ভালো মানের খাবারের ব্যপক চাহিদা আছে এবং উচ্চ শিক্ষিত অনেকেই ঘরে বসেই ফুড নিয়ে কাজ করছেন।এমনকি অনেকেই সন্তান সংসারের জন্য ব্যাংক জব, ডাক্তারি পেশা, আইটি ইন্জিনিয়ারিং ছেড়ে ঘরে বসেই ফুড নিয়ে কাজ করছেন। আমিও অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন করে বিভিন্ন কোর্স করেছি এবং এখনও করছি। ২০১৮ সাল থেকে অফলাইনে এবং ২০১৯ সাল থেকে অনলাইনে কার্যক্রম শুরু করলাম। তবে অনলাইনে এগিয়ে যাওয়ার পেছনে উই প্লাটফর্ম আমার জীবনের আশীর্বাদ স্বরূপ। আমার পেজ এর নাম “Smell Of Taste “। আলহামদুলিল্লাহ কাষ্টমারদের সন্তুষ্টি নিয়েই এগিয়ে চলেছি। পেয়েছি অনেক রিপিট ক্রেতা এবং পজেটিভ ফিডব্যাক।প্রত্যেকটা পণ্যের গুনগত মান বজায় রেখে এগিয়ে যাওয়াই লক্ষ্য।
আপনি কি কি প্রডাক্ট নিয়ে কাজ করেন?
আমার খাবারের আইটেমগুলোর মধ্যে আছে জন্মদিনের কেক সহ সব রকমের কেক, লাচ্ছা সেমাই, বিভিন্ন মিষ্টি, জর্দা, বিরিয়ানি, হালিম ইত্যাদি বেকিং ও কুকিং আইটেম। খাবার অর্ডার নেয়ার পাশাপাশি আমার মত যাতে অনেকেই উদ্দোক্তা হতে পারেন তাই খাবারের কোর্স করাচ্ছি।

উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কোনো বাঁধার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা এবং সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট কার কাছ থেকে পেয়েছেন?
নিজে উদ্যোক্তা হতে সব চেয়ে বেশি বাধার সম্মুখীন হয়েছি সামাজিক ভাবে, মানসিক ভাবে। কারণ উদ্যোক্তা শব্দটার প্রসারতা আমাদের সমাজে এখনও ব্যপক হারে ঘটেনি। পরিবারের এবং পরিচিত চাকুরিজীবী অনেকেরই মাথা ব্যাথার কারণ “আমি কেন চাকুরিজীবী হলাম না!! “। আমার মনে সব সময় একটা প্রশ্ন কাজ করে ” চাকুরীই কি প্রশান্তি? “। আর সেজন্যই কোন নেগেটিভি গায়ে না লাগিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। হাসবেন্ড প্রথম দিকে সাপোর্ট না দিলেও পরবর্তীতে সেই সব চেয়ে বড় সাপোর্ট আমার চলার পথের। তার সহযোগিতা না পেলে অনেক বাঁধা বিঘ্নই হয়ত আমি পার হতে পারতাম না।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা?
ভবিষ্যতে ইচ্ছা আছে সার্টিফাইড শেফ হওয়া এবং নিজের একটা ট্রেনিং ইন্সটিটিউট করা যাতে আমার মত অনেকেই ঘরে বসেই নিজেকে স্বাবলম্বী করতে পারেন