মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট
জীবনে যত বাঁধাই আসুক হার মানা যাবে না -উদ্যোক্তা লিপি ইমরান

একজন লিপি ইমরান। জন্ম এবং বেড়ে ওঠা টাংগাইলে। কিন্তু বর্তমানে বসবাস করছেন রাজধানী শহর ঢাকার মোহাম্মদপুরে। তিনি একজন ব্যবসায়ী পরিবারে মেয়ে। ছোট বেলা থেকে তিনি স্বপ্ন দেখতেন নিজে কিছু করার। যেহেতু তিনি একজন ব্যবসায়িক পরিবারের মেয়ে সে হিসেবে তিনি ব্যবসা কে বেঁচে নিয়েছেন, এবং Lipi’s universe নামে তার প্রতিষ্ঠানের যাত্রা শুরু করেন।এই সফল নারী উদ্যোক্তার গল্প তুলে ধরেছেন, রেড লাইভের টাঙ্গাইল জেলার প্রতিনিধি রোয়েনা রহমান।
কিভাবে আপনার উদ্যোক্তা যাত্রা শুরু হয়?
আসলে মূলত আমার পুরো পরিবার দেশীয় পণ্য নিয়েই কাজ করেন। তাদের শুরুটা অবশ্য বৃহৎ পরিসরে- ব্রিকস তৈরীর বৃহৎ কারখানা মালিক তারা। আর আমাদের পরিবারের মেয়েদের বিজনেসে তেমন কোন বিচরণ-নেই। তাই তো আমার আলাদা কোন পরিচয় ছিলো না। অনেকদিন আগেই নিজের প্রোফাইলের সাথে ছোট পেইজ খুলে উদ্যোক্তার খাতায় নাম লিখেছিলাম। কিন্তু গুটিকিছু মানুষের নিগেটিভ কথায় গুটিয় নিয়েছিলাম পেইজ থেকে নিজেকে। আর এ গুটিয়ে যাওয়া মনমানসিকতা থেকে বের হওয়ার ইচ্ছা জাগ্রত করেছে প্রিয় গ্রুপের প্রিয় কিছু মানুষ। তারা সুন্দর করে ভাবতে ও স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে আমার মতো থেমে যাওয়া হাজারো নারীদের । এভাবেই শুরু আমার উদ্যোক্তা জীবনের যাত্রা।
কেন মনে হলো আপনি একজন উদ্যোক্তা হতে চান এবং একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কি কোন বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে কি?
যখন থেকে বুঝতে শিখেছি তখন থেকেই শুধুই ভাবতাম বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হবো। নিজের সন্মানজনক একটা পরিচয় তুলে ধরবো -এতে যেমন পরিবার-পরিজনকে খুশি করতে পারবো তেমনি নিজেও একটা আত্মতৃপ্তি নিয়ে বাঁচতে পারবো। এ লক্ষ্য আমার রক্তে মিশে গিয়েছিলো আর তাই তো পরিবার পরিজনদের উৎসাহ ও ভালোবাসায় এগিয়ে যাচ্ছিলাম। ভালো রেজাল্ট করে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পড়ালেখা করে স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টার ত্রুটি ছিলো না আমার। কিন্তু হঠাৎ একটা ঝড়ের আকস্মিক তান্ডবের কারনে ছিটকে পড়ে গেলাম আমার স্বপ্ন থেকে। তবুও হাতছানি দিয়ে ডাকতে থাকে আমার স্বপ্নগুলো আর তাই তো বিয়ের পরও হাজারো প্রতিকূলতার মাঝেও ১ম সন্তান জন্মের পর অনার্স করার পর আবার এম বি এ পাশ করি আরও কম্পিউটারে ডিপ্লোমা ইন্জিনিয়ার কোর্স ও নিউজ প্রেজেন্টেশন কোর্সসহ নানাবিধ সার্টিফিকেট ঝুলিতে রাখি স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার আশায়। কিন্তু নানাবিধ প্রতিকূলতার জন্য কোথাও সার্টিফিকেটগুলো শো করা হয়ে ওঠেনি কোনদিন।
কিন্তু স্বপ্নগুলো কখনোই আমাকে শান্তি দেয়নি, গুমরে গুমরে কেঁদেছি প্রতিটা মুহুর্তে কিন্তু সুযোগ হয়নি কখনো কিছু করার। প্রতিটা মুহূর্ত সন্তানদের পড়ালেখা ও স্বামী সন্তানদের সুবিধা-অসুবিধা, রসনা বিলাসিতায় ব্যয় করেছি আর ভেবেছি হয়তো পারবো কিছুদিন পর । সত্যিই এখন মনে হচ্ছে আমি পারবো আমার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে। এতোদিন হীনমন্যতায় ছিলাম- এতো বড় ব্যবসায়ী পরিবারে জন্ম আমার,বাবা ভাইদের নাম- ডাক বিশাল-সেখানে আমি যদি এমন ছোট ব্যবসা দিয়ে শুরু করি তাহলে আত্মীয় স্বজনরা কি ভাববে । কিন্তু উদ্যোক্তা সম্পর্কিত বিভিন্ন গ্রুপের সাথে যুক্ত হয়ে বুঝতে পারলাম। পিছনের লোক কিছু ভাবে এরকম চিন্তা করলে আমার স্বপ্নগুলোও পিছনেই পড়ে থাকবে কিন্তু কিছুই করা হবে না। আমি নতুন করে বাজপাখির মতো নবউদ্যম নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি একটু একটু করে
– “বড় যদি হতে চাও, ছোট হও তবে-” এ নীতি অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে চাই –দূর —বহুদূর….
আপনার উদ্যোগটি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
আমার স্বপ্ন আমার প্রতিষ্ঠানকে একটি বিশ্বমানের ব্র্যান্ড হিসেবে তৈরি করতে চাই। পাশাপাশি কিছু মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে চাই। আমার পন্য শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই।