মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট
টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রি ও বাংলাদেশের অবস্থান

বাংলাদেশের প্রায় সব মানুষই জানেন, এদেশের অর্থনীতিতে টেক্সটাইল এর গুরুত্ব অবর্ননীয় এবং অনস্বীকার্য। তৈরি পোশাক রপ্তানীতে এদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই টেক্সটাইল নিয়ে আমাদের বেশ কিছু ভুল ধারণা আছে।পাশাপাশি রয়েছে অনেক না জানা তথ্য।
টেক্সটাইল কি?
সাধারণ মানুষের কাছে টেক্সটাইল মানে কাপড়। তবে ল্যাটিন শব্দ ‘টেক্সার‘ থেকে উৎপত্তিপ্রাপ্ত টেক্সটাইল এর মূল অর্থ এবং কাজের ক্ষেত্র বিশাল। ফাইবার থেকে ইয়ার্ণ(সুতা), তারপর তার থেকে ফেব্রিক , এবং পরবর্তীতে উইভিং, উইন্ডিং, নিটিং, ডাইং, ফিনিশিং এর মাধ্যমে কাপড় তৈরি, এই পুরো প্রক্রিয়ায় টেক্সটাইলের অন্তর্ভুক্ত।
সব ফাইবার দিয়েই কি কাপড় তৈরি হয়?
এর সহজ উত্তর হল ‘না’। একটা কাপড় কত ভালো এবং আরামদায়ক হবে তা নির্ভর করে কাপড়টির ফেব্রিকের উপর।আর ফেব্রিককে ভালো হতে হলে প্রয়োজন টেক্সটাইল ফাইবারের। একটা ফাইবার কে তখনই টেক্সটাইল ফাইবার বলা হবে, যখন তারমধ্যে বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য পাওয়া যাবে। এরমধ্যে প্রধান কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল-
১. ফাইবারটি যথেষ্ট মজবুত হতে হবে। যাতে স্পিনিং এর মাধ্যমে ভালো মানের ইয়ার্ণ তৈরি করা যায়। এক্ষেত্রে ফাইবারের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।
২. ফাইবারটি ফ্লেক্সিবল হতে হবে।
৩. ফাইবারের দৈর্ঘ্য প্রস্থের অনুপাত প্রায় ১০০:১ হতে হবে।
তবে বর্তমানে এমন অনেকেই আছেন, যারা বিভিন্ন নন টেক্সটাইল ফাইবার নিয়েও গবেষনা করছেন। প্রোটিন ফাইবার চুল, উদ্ভিজ ফাইবার এলোভেরা থেকেও কাপড় তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে এসব ব্যবহারের প্রচলন এখনো হয়নি।
বাংলাদেশে টেক্সটাইল

বাংলাদেশে মূলত প্রাকৃতিক ফাইবারের ক্ষেত্রে উল, পাট, তুলা, সিল্কের ব্যবহারই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।বর্তমানে বিশেষজ্ঞদের মতে, মানবসৃষ্ট ফাইবার, টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিতে বিপ্লব ঘটাতে পারে। এছাড়া সম্প্রতি প্রায় ছয় বছরের গবেষনার ফলে পুনর্জন্ম নেয় প্রাচীন ঐতিহ্য ঢাকাই মসলিন। মেশিনের এই যুগেও মসলিন তৈরি করা হয়েছে হস্তচালিত তাঁতে হাতে কাটা ৫০০ কাউন্টের সুতায়। এই সুতা তৈরি হয় ‘ফুটি কার্পাস’ থেকে। তুলা থেকে তৈরি এই সুতা কাটা হয়েছে চরকায়।
অর্থনীতিতে টেক্সটাইল
দেশের জিডিপি বৃদ্ধিতে সবচেয়ে বড় অবদান টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রির। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭২ সালে দেশের জিডিপি ছিল ৬.২৯ ইউএসডি বিলিয়ন ডলার। এই সংখ্যাই ২০১৪ তে ১৭৩.৮২ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে দাঁড়ায়। ২০১৬ থেকে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানীর ক্ষেত্রে চীনের পরেই দ্বিতীয় স্থানে থাকে। ২০২০ সালে করোনা মহামারির সময়েও দেশের জিডিপি ছিল ২৭৫ ইউএসডি বিলিয়ন ডলার,যার একটা বড় অংশ এসেছিল টেক্সটাইল সেক্টর থেকে।
লিখেছেনঃ অনন্যা চক্রবর্তী
ফিচার ইমেজ ক্রিয়েটেড বাইঃ হাসিন মাহিতাব
All rights reserved by RED LIVE