নজর-ই- জিলানী:বহু বর্ণীল ও বৈচিত্র্যময় ৩৩ বছরের কর্পোরেট কর্মজীবন

 নজর-ই- জিলানী:বহু বর্ণীল ও বৈচিত্র্যময় ৩৩ বছরের কর্পোরেট কর্মজীবন

মানবজীবনে একটি অত্যাবশ্যকীয় কাজ হল, অর্থ উপার্জন করা। অর্থ উপার্জনের জন্য প্রয়োজন একটি পেশা, যে পেশা থেকে একজন মানুষ অর্থ উপার্জন করতে পারবে। সেই পেশাটা প্রধানত দু’রকমের হতে পারে- ১. চাকরি ২. ব্যবসা। বর্তমানে আমাদের সমাজে দেখা যাচ্ছে, একটি বিশেষ চাকরি পাওয়ার জন্য আমরা প্রায় সবাই উঠেপড়ে লেগেছি।

আর সেই চাকরিটি হচ্ছে, বিসিএস ক্যাডার; এ যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ, যা পেলে আমাদের সব দুঃখ দূর হয়ে যাবে, জীবনের সব মুশকিল আছান হয়ে যাবে। অনেকের কাছে জীবনের অন্তিম ইচ্ছায় পরিণত হয়েছে এ চাকরিটি। মানুষ স্বভাবতই ভোগবিলাসী।

সমাজে টিকে থাকতে হলে তার দরকার সম্মান, অর্থ, সামাজিক মর্যাদা, ক্ষমতা, নিরাপত্তা ইত্যাদি। আর এসবের অসীম আকাক্সক্ষার জন্যই একজন ছাত্র বিসিএস ক্যাডার হতে চায়। কিন্তু জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে চেষ্টা করার পরও অনেকেই পারছে না কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছতে। এতে বাকি জীবন হতাশাগ্রস্ত হয়ে কাটাচ্ছে অনেককেই। তবে, ‘হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা’ নামক বিসিএসের পেছনে ছোটা উচিত নয় আমাদের ছাত্র সমাজের।

দেশ এগিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্যে। বৈশ্বিক অবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে দরকার সৃজনশীল কিছু করা। আমাদের ছাত্র সমাজের এমন চাকরি প্রতিযোগিতায় ‘ইঁদুর দৌড়ের’ ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষাগ্রহণে অনাগ্রহ তৈরি হচ্ছে। একজন শিক্ষার্থী প্রথম বর্ষেই লাইব্রেরির দিকে ধাবমান হয় বিসিএসের পড়াশোনা করার উদ্দেশ্যে।

তার উদ্দেশ্য থাকে শুধু একটি চাকরি পাওয়া। তাই তো অনেক সময় তার আচরণ-ব্যবহারে প্রকৃত শিক্ষার ছাপটি পাওয়া যায় না। শিক্ষা হয়ে ওঠে চাকরি পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম। তাই তো শিক্ষা সার্টিফিকেট হয়ে বের হচ্ছে, জ্ঞান হয়ে নয়। বিসিএস কোনো মন্দ বিষয় নয়। মন্দ বিষয় হল, আমরা শুধু একটি কাঠামোর প্রতি অন্ধ হয়ে যাচ্ছি।

বিসিএস ছাড়াও যে আরও অনেক কিছু করার আছে সেই দরজাটি কখনও খোলার চেষ্টা করছি না বা সাহস করছি না। আমরা আজ এমন একজন মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিব যিনি চাকরির শুরুতে এক্সেকিউটিভ দিয়ে শুরু করলে ও চাকরীর ইতি টেনেছেন এক্সেকিউটিভ ডাইরেক্ট হিসেবে।

তিনি দীর্ঘ দীর্ঘ ৩৩ বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি তরুণদের জন্য শার্পনার(sharpenerbd.com)নামে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা খুলেছেন। এবং তিনি শার্পনার এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আসুন জেনে নেওয়া যাক নজর- ই-জিলানী স্যারের সম্পর্কে।

জান্নাত ফেরদৌস: আসসালামুয়ালাইকুম স্যার কেমন আছেন?

নজর-ই-জিলানী স্যারঃআলহামদুলিল্লাহ্‌, আল্লাহ্‌ অনেক ভালো রেখেছেন। শুকরিয়া।

জান্নাত ফেরদৌসঃকরোনা কালিন সময় কেমন কাটছে?

নজর-ই-জিলানী স্যারঃঅনেক ভালো। যেহেতু আমি বইয়ের পোকা, বই পড়ে, লিখে সময় কিভাবে যাচ্ছে তা বুঝতেই পারছি না ।

জান্নাত ফেরদৌসঃ স্যার প্রথমে আপনার পরিচয়, জন্ম, শৈশব , কৈশোর সম্পর্কে জানতে চাই?

নজর-ই-জিলানীঃ জন্ম মাগুরা জেলায়। আমার শৈশব অনেক বৈচিত্র্যময় ও অন্যদের থেকে বিশেষ ভাবে আলাদা । আমার বাবা ছিলেন কোলকাতায় ব্রিটিশ আর্মির বেসামরিক শাখায় কর্মরত । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ৬ই অগাস্ট জাপানের হিরোশিমা পরে নাগাসাকিতে আণবিক বোমা বর্ষণ হওয়ার পর পরবর্তী টার্গেট ছিল কোলকাতা। ইংরেজ কর্মকর্তার কাছে ছুটি চেয়ে না পেয়ে বাবা চাকরী ফেলে বাড়ি ফিরে আসেন । বাবা ছিলেন বহু ভাষাবিদ । বাংলা ছাড়াও ইংরেজি, আরবি, উর্দু, ফার্সি, সংস্কৃতিতে ছিল তার অগাধ পাণ্ডিত্য ।

আমাদের এলাকায় একটা হাই স্কুল প্রতিষ্ঠা করে এবং আলিয়া মাদ্রাসার সাথে যুক্ত হয়ে জীবন পার করে দেন। ছিলেন সংসার বিমুখ সূফী ধারার মানুষ। দুনিয়ার প্রতি কোন আকর্ষণ ছিল না । আমাকে মানুষ করার ক্ষেত্রে তাঁর ছিল সম্পূর্ণ এক ভিন্ন পদ্ধতি । বাড়িতে বাবা নিজেই সব কিছু শেখাতেন। আমি প্রাইমারীতে পড়ি নাই। বাড়িতে সব কিছু শেখানর পর একদিন আমাকে স্কুলে নিয়ে হেড মাস্টারকে বললেন আমাকে ক্লাস সিক্সে ভর্তি করে নিতে। তাই হল। আমি হাই স্কুল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া শুরু করলাম। ম্যাট্রিক বাবার প্রতিষ্ঠা করা স্কুল থেকে ।

সে সময়ে আমাদের গ্রামের পরিবেশ উন্নত ছিল না। যোগাযোগ ব্যাবস্থাও ভালো ছিল না । চারিপাশের মানুষগুলোও তেমন শিক্ষিত ছিল না । আমাকে কোন মুসলমান ছেলের সাথে মিশতে নিষেধ করা ছিল। পড়াশুনা, খেলাধুলা সব কিছুই ছিল বাবার সাথে। প্রত্যান্ত গ্রামে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা হোলেও আমার জগত ছিল সমগ্র বিশ্বের জ্ঞান কেন্দ্রিক। সেই কৈশোরেই অপার জিজ্ঞাসার বীজ বুনে দিয়েছিলেন বাবা। শৈশব কৈশোর বলতে প্রকৃতির নিখুঁত হাতে তৈরি সেই মনোরম গ্রাম আর পড়াশুনা, অজানাকে জানা। বাবার কাছ থেকে আমার বই সংগ্রহের নেশাও তৈরি যা আজকাল মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে ।

জান্নাত ফেরদৌস: আপনার শিক্ষা এবং ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানতে চাই?

নজর-ই-জিলানীঃ বাবার স্কুল থেকে ম্যাট্রিক। মাগুরা কলেজ। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালইয়ে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা। পাশাপাশি Islamic Research and Comparative Religion-এর স্কলার হিসেবে পড়াশুনা যার বীজ বাবা ছোট্ট বেলায় বপন করেছিলেন কোরটির নিভৃত কন্দরে।

জান্নাত ফেরদৌসঃ কারিয়ারের শুরু থেকে এখন অবধি অভিজ্ঞতা ও অনুভূতি সম্পর্কে যদি বলতেন

নজর-ই-জিলানী স্যারঃ ক্যারিয়ারের শুরু ছিল আমেরিকান বহুজাতিক ফারমাসিউটিকাল কোম্পানি ফাইজার দিয়ে । ওখানে ১২ বৎসর কাজ করেছি। এর পর চাকরি পরিবর্তন করেছি। অন্য দেশি প্রতিষ্ঠানে আরও ১৩ বৎসর কাজ করে ফারমাসিউটিকালে সিকি শতাব্দী শেষ করি । এর পর ভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে রানার মোটরসের ডাইরেক্টর মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস হিসেবে ৭ বৎসর কাজ করি। নতুন চ্যালেঞ্জের হাতছানিতে এবার আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজের এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্ট হিসেবে কাজ করি ।

বহু বর্ণীল ও বৈচিত্র্যময় আমার কর্মজীবন। তিল তিল করে উপভোগ করেছি আমি আমার কর্মজীবন । একটাই বুঝেছি জীবনে কিছু করতে চাইলে কঠিন মনোবল, সততা, কঠোর পরিশ্রম, প্রতিনিয়ত জ্ঞান অর্জন এবং নিরলস ভাবে কাজ করে যাওয়ার কোন বিকল্প নাই। প্রতিটা মানুষের দ্বারাই জীবনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জন সম্ভব যদি নাকি কেউ এই কয়েকটা বিষয় মাথায় রেখে নিরন্তর পথ চলা শুরু করে।

জান্নাত ফেরদৌসঃ আমরা জানি আপনার একটি শার্পনার নামে প্রতিষ্ঠান আছে, শার্পনার মূলত কি? এবং তরুণ প্রজন্ম কিভাবে এর সাথে যুক্ত হতে পারে?

নজর-ই-জিলানীঃ পেন্সিলের শার্পনার থেকে শব্দটা নেওয়া। আজ থেকে ২০ বৎসর আগে এই শব্দটা নিয়ে আমি স্বপ্ন দেখা শুরু করি। আমি নিজের জীবনে দেখেছি যদি কোন মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই তাকে দিয়ে অনেক অনেক ভালো কাজ করা যায়। এমনকি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার বিষয়টা কোন প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়ায় না ।

আমার বিষয় ছিল ইংরেজি সাহিত্য, তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব, কিন্তু আমি ক্যারিয়ার গড়েছি সম্পূর্ণ ভিন্ন জগতে। আমি বিজ্ঞানের কিছু জানতাম না কিন্তু আমাদের সময়ে সম্পূর্ণ জ্ঞান নির্ভর ফার্মা কোম্পানিতে আমি গৌরবের সাথে কাজ করে এসেছি । আবার ফার্মা ছেড়ে ভিন্ন জগত অটোমোবাইল যেয়েও সাফল্য অর্জন করে নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়েছি।

আমি মনে করি যেহেতু আমাদের দেশে বিষয় ভিত্তিক চাকরীর তেমন কোন সুযোগ নাই এবং বেকারত্ব অনেক বেশী, যুব সম্প্রদায়কে যদি সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে গড়ে তোলা যায় তাহলে তারা অনেক ভালো কাজ করতে পারবে। শার্পনার-এ যুক্ত হওয়া একেবারেই সহজ। যেহেতু অনলাইনে এখন দেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের যে কারো সাথে সংযোগ স্থাপন করা যায় তাই আমাদের ফরমটা পূর্ণ করে দিলেই আমরা তাকে নিয়ে নেবো। আমাদের প্রশিক্ষণ অনলাইনে হওয়ার কারণে কাউকে বাদ দেওয়ার ইচ্ছা আমাদের নাই। সবাই আমার দীর্ঘ পেশাজীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে দেওয়া পরামর্শ গ্রহণ করতে পারবে।

জান্নাত ফেরদৌসঃ এতো দীর্ঘ সাফল্যের পরও কর্পোরেট কোচ কেন হলেন?

নজর-ই-জিলানীঃ এই দেশ স্বাধীন না হলে আমি কোনদিনই এই পজিশনে আসতে পারতাম না । আমার পরিবার, সমাজ, দেশের মানুষ, আমার বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রের সমস্ত সহকর্মীদের সাথে কাজ করেই আমি সে জায়গায় এসেছি। আমার দায় অনেক, আমার ঋণ আকণ্ঠ । আমি আমার বাস্তব জীবনে কঠোর সংগ্রাম করে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা এদেশের মানুষের সাথে ভাগ করে না নিলে আমি ঋণমুক্ত হতে পারবো না তাই কর্পোরেট কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলাম।

তাছাড়া এই যুব সমাজকে পথ বাস্তব জ্ঞানের আলোকে পথ দেখানো লোকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য না তাই এগিয়ে এলাম এই অভাবতা পুরো করতে। নিজের পেশাজীবনের সাফল্যের সাথে আমার কর্তব্য শেষ হয়ে গেছে তা আমি ভাবি না । আমার নিজের ছেলে মেয়ে সুন্দর ভাবে মানুষ হয়ে গেলেই আমার কর্তব্য শেষ হয় নাই। দেশের অগণিত ছেলে মেয়েদেরকে আমার এই জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারলেই আমার কর্তব্য শেষ হবে বলে আমি মনে করি ।

জান্নাত ফেরদৌসঃ বইয়ের যাত্রা এবং আসন্ন বই সম্পর্কে পাঠকের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন…

নজর-ই-জিলানী স্যারঃ তত্ত্ব আর বাস্তব দুইটা দুই জিনিস। তত্ত্ব দিয়ে ঠাণ্ডা ঘরে মাল্টিমিডিয়ায় অনেক কিছু দেখানো যায় । কিন্তু বাস্তব অভিজ্ঞতা না থাকলে আমি শেখাবো কেমন করে? আমি যা কিছু শেখাই তা আমার নিজের জুতার সুখতলা ক্ষয় করে এ দেশের প্রতিটি জেলায়, রাস্তায় হেটে তারপর আমি কথা বলি। কোন বই বা গুগল বা ইউটিউব থেকে না ।

আমি কর্ম জীবন শুরু করেছিলাম এক্সিকিউটিভ হিসেবে এবং ইনিংস শেষ করেছি এক্সিকিউটিভ ডাইরেক্টর হিসেবে। আমার আমি হয়ে উঠার বীজমন্ত্র যা ছিল তাই আমি এই বইতে তুলে ধরেছি। এবং বলার চেষ্টা করেছি যে কোন জায়গায় শীর্ষে পৌঁছাতে হলে এই বইয়ে দেখানো পথই একমাত্র পাথেয় । আসন্ন বইও ক্যারিয়ার সম্পর্কিত হবে।

গোপন কথাটা এখন প্রকাশ করতে চাচ্ছি না । শুধু বলবো, একসময় ইচ্ছা ছিল সাহিত্য রচনা করবো। সেই অনুযায়ী অঢেল নোট করেছি জীবনভর ডাইরি ভরে ভরে। কিন্তু চাকরী শেষ করার সময় উপলব্ধি হোল যে এদেশের যুব সম্প্রদায় ও যারা কর্পোরেটে কাজ শুরু করেছে তাদেরকে পথ দেখালে এই সমাজ ও দেশের অনেক উপকার হবে, তাই দীর্ঘ পরিকল্পনা ছেড়ে আমি কর্পোরেট নিয়ে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেই ।

জান্নাত ফেরদৌসঃ কর্পোরেট ক্যারিয়ার গড়তে আসন্ন প্রজন্মের প্রস্তুতি, বাঁধা এবং তা অতিক্রমের কিছু উপায়।

নজর-ই-জিলানী স্যার: প্রস্তুতি বলতে নিজেকে তৈরি করা। সততা, কঠোর পরিশ্রম, প্রতিনিয়ত নিজেকে জ্ঞানে সমৃদ্ধ করা আর লেগে থাকা এই নিয়ে অবিরাম পথ চলা শুরু করলে সাফল্য ধরা দেবেই ।

জান্নাত ফেরদৌসঃ জীবনে কোন অপ্রাপ্তি বা অপূর্ণতা আছে কি না ?

নজর-ই-জিলানী স্যারঃ না। আমার জীবনে অপ্রাপ্তি বলে কিছুই নেই । বরং মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যতটুকুর যোগ্য আল্লাহ্‌ আমাকে তাঁর চেয়ে অনেক বেশী দিয়েছেন।

জান্নাত ফেরদৌসঃ শার্পনারের ভবিষ্যৎ নিয়ে কেমন আশাবাদি?

নজর-ই-জিলানী স্যার: আমি অনেক আশাবাদি । কারণ শার্পনার ভিন্ন ধরণের প্রতিষ্ঠান । এখানে বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে পথ দেখানোর পাশাপাশি মূল্যবোধ নিয়েও কাজ করি আমি। একজন মানুষের জীবনকে অনেক বড় ক্যানভাসে দেখে তাকে সে ভাবেই পথ নির্দেশ করি। আমার উদ্দেশ্য একজন মানুষ ক্ষুদ্র স্বার্থের উরধে উঠে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন একজন সুন্দর ও সম্পূর্ণ মানুষ হবে।

জান্নাত ফেরদৌসঃ তারুন্যের দুরন্তপনাকে কিভাবে দেখেন? সৃজনশীলতার সাথে দুরন্তপনার সম্পৃক্ততা আছে কি? তরুন্দের জীবনে এই দুইটির ভূমিকা?

নজর-ই-জিলানীঃ সৃজনশীলতার সাথে দুরন্তপনার এক নাড়ীর সম্পর্ক। সাধারণত দুরন্ত শিশুরাই অনেক বেশী সৃজনশীল হয় । সমস্যা একটাই, দুরন্ত শিশুদের সমস্ত জিজ্ঞাসার উত্তর দেওয়া চাই। ধৈর্যের সাথে, সহনশীলতার সাথে তাদের মানুষ করা চাই।

জান্নিত ফেরদৌসঃ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আপনার পরামর্শ ?

নজর-ই-জিলানী স্যার: আমাদের দেশ এখন Demographic Dividend-এর মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আমাদের জনসংখ্যার একটা বড় অংশ যুব সম্প্রদায়। তাদের কাঁধে অনেক দায়িত্ব দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। তরুণদের এখন নিজেদেরকে প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতায় তৈরি হতে হবে। অনেক সম্ভাবনার দেশ আমাদের বাংলাদেশ। তরুণদেরকে যদি আমরা সঠিকভাবে শেখাতে পারি ও পথ দেখাতে পারি তাহলে এই তরুণরাই দেশকে এক ঈর্ষণীয় উচ্চতায় নিয়ে যাবে ।

ধন্যবাদ স্যার ভালো থাকবেন।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেনঃ জান্নাত ফেরদৌস, হেড অফ পাবলিসিটি, রেড লাইভ

RedLive

Related post