মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট
যেভাবে কাটিয়ে উঠবেন নিজের ‘ইংলিশ ভীতি’

Image Source:Leverage Edu
শৈশবের শুরু থেকেই ইংলিশের সাথে আমাদের নিবিড় সখ্যতা। আধো আধো বুলিতে আমরা যখন পড়তাম ‘এ’ ফর ‘অ্যাপল’, ‘বি’ ফর ‘বল’, তখন থেকেই ভাষাটির প্রতি আমাদের ভালো লাগার শুরু। কিন্তু আসলেই কি তাই? বাস্তবটা যে ভিন্ন! হ্যাঁ বাস্তবে ওরকম কিছু হয় না।বাস্তবে আমরা ইংলিশকে ভয় পাই। ভীষণ রকম ভয় পাই!কিন্তু কেন পাই এত ভয়? এমন তো হওয়ার কথা ছিল না!
অদ্ভুত না! যে ভাষার চর্চার সাথে সাথে আমাদের বেড়ে ওঠা, সেই ভাষাটিকেই আমরা যমের মতো ভয় পাই! অথচ এই ভাষার প্রতি একটু যত্নশীল হতে পারলে, জীবনযুদ্ধে আমরা এগিয়ে যেতে পারব অনেক অনেক দূর।হ্যাঁ জীবনটা একটা যুদ্ধের মতো। এবং এই যুদ্ধে টিকে থাকতে চাই স্কিল। আর যেহেতু ইংলিশ একটি বৈশ্বিক ভাষা, ইংলিশে দক্ষ এমন মানুষের চাহিদা রয়েছে গোটা বিশ্বজুড়ে!
চলুন তাহলে কিছু টিপস জেনে নিই এবার। আশা করছি ইংলিশ চর্চার ক্ষেত্রে এসব টিপস মেনে চললে ইংলিশের প্রতি আমাদের ভীতিটা কমে আসবে অনেকাংশেই!
#টিপস ১
আমরা যারা বাংলা মিডিয়ামে পড়াশোনা করি, তাদের একটা খুব জনপ্রিয় ভুল ধারণা আছে। আমরা ভাবি; “যারা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করে, শুধু তারাই ইংলিশে দক্ষ হতে পারবে!” বিশ্বাস করুন, ব্যাপারটা সেরকম নয়! কথায় আছে, “Practice Makes A Man Perfect.” অর্থাৎ যেকোন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের জন্য চাই কঠোর অনুশীলন। কাজেই আপনি চাইলেই ইংলিশে দক্ষ হয়ে উঠতে পারবেন! আর এর জন্য যেটা সবচেয়ে বেশি দরকার, সেটা হচ্ছে কঠোর অনুশীলন। হ্যাঁ অনুশীলন করতে করতেই আমরা দক্ষ হয়ে উঠব। ইংলিশের প্রতি আমাদের ভীতিটা তখন আর থাকবে না।

#টিপস ২
আত্মবিশ্বাস বা কনফিডেন্স না থাকলে আসলে কোনকিছুই সম্ভব না। আমরা অনেকেই আগে থেকেই ধরে বসে থাকি, “ইংলিশের মতো একটা বিদেশী ভাষায় দক্ষতা অর্জন করা আমার পক্ষে একেবারেই সম্ভব নয়!” এভাবে আগে থেকেই ভেঙে পড়লে চলবে না একদম। নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। আর সেই সাথে ধৈর্য্য ধরে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে বারবার। এবং আমরা যত বেশি আত্মবিশ্বাসী হব, ইংলিশের প্রতি নিজেদের ভয়টাকে তত বেশি দূরে সরিয়ে রাখতে পারব।
#টিপস ৩
আত্মবিশ্বাসের সাথে চেষ্টা চালিয়ে গেলেও আমরা অনেক সময় আশানুরূপ ফল পাই না। কারণ আমাদের অনুশীলনে বেশ কিছু ফাঁক থেকে যায়। একটা ভাষাকে আমরা তখনই পুরোপুরি রপ্ত করতে পারব, যখন সে ভাষায় কথা শুনে আমরা ঠিকঠাক প্রতিক্রিয়া জানাতে পারব। অর্থাৎ সে ভাষায় লিখতে পারব, পড়তে পারব এবং কথা বলতে পারব। কাজেই ইংলিশে দক্ষ হতে গেলে আমাদের শিখতে হবে এ ভাষায় কথা বলার, লেখার এবং পড়ার স্কিল। পাশাপাশি শিখতে হবে এ ভাষায় কথা শুনে ঠিকঠাক প্রতিক্রিয়া জানানোর স্কিল। আর তাই ইংলিশে নিজেদের লিসেনিং, স্পিকিং, রিডিং, রাইটিং – এই স্কিলগুলোকে ঠিকঠাক ডেভেলপ করতে পারলে ভাষাটির প্রতি আমাদের ভীতিটা কমে আসবেই আসবে!
#টিপস ৪
প্রাণপ্রিয় বাংলা ভাষাটা আমরা কীভাবে শিখলাম? মায়ের মুখের বুলি শুনে শুনেই তো শিখেছি! ইংলিশের ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি প্রয়োগ করা যেতে পারে। হ্যাঁ শুনতে হবে এ ভাষায় কথা। শুনে শুনেই আয়ত্তে আনতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা ইংলিশে নিউজ শুনতে পারি। খেলাধুলা উপভোগ করার সময় ধারাভাষ্যটা নাহয় ইংলিশেই শুনে নিলাম। তাছাড়া শুনতে পারি এ ভাষার চমৎকার কিছু গান! যা শুনলাম, তা হয়তো প্রথম প্রথম বুঝতে পারব না। সেক্ষেত্রে সাবটাইটেলের সাহায্য নিতে পারি। দেখে দেখেই শুনতে হবে তখন। এবং এভাবে শুনতে শুনতেই ইংলিশে আমাদের লিসেনিং স্কিলটা ডেভেলপ হতে থাকবে। আর সেই সাথে ইংলিশে নিজেদের ভীতি দূর করার ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে যাব এক ধাপ।

#টিপস ৫
ছোটবেলায় মা যখন কথা বলত বাংলায়, তখন আমরাও আধো আধো বুলিতে কথা বলার চেষ্টা করতাম। অর্থাৎ কথা বলার জন্য কানে শোনার একটা ব্যাপার আছে। আর তাই ইংলিশে আমাদের লিসেনিং স্কিলটা একবার ডেভেলপ হয়ে গেলে আমরা সে ভাষায় কথাও বলতে পারব অনায়াসে। কাজেই ইংলিশে আমাদের লিসেনিং স্কিলটা যত বেশি ভালো হবে, স্পিকিংয়ে আমরা তত বেশি উন্নতি করতে পারব। এখন স্পিকিংয়ে ভালো করতে চাইলে অনুশীলনের কোন বিকল্প নেই। এক্ষেত্রে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের সাথে কথা বলা যেতে পারে ইংলিশে। বন্ধুমহলে কিংবা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নানা বিষয়ে আলোচনাও করা যেতে পারে ইংলিশে। এভাবে অনুশীলন করতে করতেই আমরা ইংলিশে ভালো করতে শুরু করব। আর তখন ইংলিশের প্রতি আমাদের ভীতিটাও কমতে থাকবে ধীরে ধীরে।
#টিপস ৬
লিসেনিং এবং স্পিকিংয়ের পর আমাদের জোর দিতে হবে রিডিংয়ে। ইংলিশে নিজেদের রিডিং স্কিল ডেভেলপ করার জন্য শুরুতেই কঠিন বর্ণনায় লেখা কোনো বই বা রাইট আপ পড়া ঠিক হবে না। শুরুতেই যদি কঠিন লাগে পড়তে, তাহলে হয়তো পরবর্তীতে আমরা ইংলিশ লিটারেচার পড়ার আগ্রহটাই হারিয়ে ফেলব। এজন্য রিডিংয়ের শুরুটা হতে হবে সহজ, সাবলীল। এবং সহজ বর্ণনার বই বা রাইট আপ দিয়ে শুরু করতে হবে রিডিং। এরপর ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে হবে কঠিন বর্ণনার দিকে। রিডিংয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেলে ইংলিশের প্রতি নিজেদের ভীতি দূর করার কাজে আমরা এগিয়ে যাব আরও এক ধাপ।

#টিপস ৭
রিডিংয়ের পর আমাদের নজর দিতে হবে রাইটিং স্কিলের দিকে। এবং ইংলিশে আমাদের লেখার হাত ভালো করার জন্য সবচেয়ে বেশি সাহায্য করে রিডিং স্কিল। পড়তেই পড়তেই তো ইংলিশে আমাদের ভোকাবুলারি এনরিচড হয়। সেই সাথে আমরা জানতে পারি লেখার বিভিন্ন রকম সকম। একইসাথে বৃদ্ধি পায় আমাদের জ্ঞানও। আর তারপর? তারপর সেই জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমাদের লেখার চেষ্টা করতে হবে। লেখার সময় গ্রামার ভুল করলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। ভুল থেকেই তো শিখতে হবে। আর চালিয়ে যেতে হবে চেষ্টা। চেষ্টা করতে করতেই আমাদের মন থেকে দূর হবে ভয়। এবং আমরা করব ইংলিশকে জয়!
শৈশবকাল থেকেই আমরা ইংলিশের চর্চা করে আসছি। শিখে আসছি গ্রামারের বিভিন্ন নিয়মকানুন। তবু ইংলিশকে কেন্দ্র করে আমাদের মনে সবসময় ভয় লেগেই থাকে। অথচ ইংলিশে দক্ষ হতে পারলে ক্যারিয়ার জীবনে অনেকখানি এগিয়ে থাকা যায়। আর তাই নিজের ইংলিশ ভীতি দূর করার জন্য আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে এখন থেকেই!
লিখেছেন-নবনীতা প্রামানিক
(যদি মনে হয় লেখাটি পড়ে অন্যরাও উপকৃত হবেন, তাহলে শেয়ার করে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন।)