মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনের আয়োজনে শেখ রাসেল মেমোরিয়াল ফুটবল টুর্নামেন্ট
“শখের বশে উদ্যোক্তা; উই থেকে সফল মাহমুদা খানম লিন্ডা

আমরা যদি আজ থেকে ২০ বছর আগের অবস্থা চিন্তা করি, তাহলে দেখবো দেশে নারীদের অবস্থান খুব একটা ভালো ছিলো না। তারা ঘরের কাজেই বেশ স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতো। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে নারীদের অবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এখন ফেসবুকে ঘরে বসেই তারা কাজগুলো করতে পারছেন।বাংলাদেশের ঘরে ঘরে এরকম অনেক নারী উদ্যোক্তা আছেন যারা নিজে কিছু করতে চান।অনলাইন ব্যবসায়ের প্রবর্তনের ফলে নারীরা আরও বেশি পরিমাণে সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে। তেমনি একজন মাহমুদা খানম লিন্ডা,যিনি কাজ করছেন কাস্টমাইজড কেক নিয়ে।
সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এসিস্ট্যান্ট কমিনিকেশন অফিসার শারমিন মনিকা।
আপনার উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুটা কখন এবং কিভাবে?
-আমি একজন গৃহিণী।হাসব্যান্ড আর দুটো বাচ্চা নিয়ে ঢাকাতে থাকি।আমার হোম ডিস্ট্রিক্ট বগুড়া।আমি ২০২০ সালের ৩রা এপ্রিল Women & E-commerce গ্রুপে জয়েন করি।উদ্যোক্তার লাইফ শুরু হয় জুলাই মাসে।প্রথমত উই গ্রুপে আমি জয়েন হই।নিজের একটা শখ ছিলো কিছু করবো।তো চিন্তা করলাম আমি যেহেতু কেকটা ভালো তৈরি করতে পারি তাই এটা নিয়ে সবার সামনে আসা।এভাবেই যাত্রা শুরু।
কোন পণ্য নিয়ে আপনি কাজ শুরু করেছেন এবং প্রথম দিকে কেমন সাড়া পেয়েছিলেন?
-আমি প্রথম থেকেই কাস্টমাইজড কেক নিয়ে কাজ শুরু করি।প্রথম দিকে দু-তিন মাস আমার তেমন কোনো সেল ছিলো না।দু-তিন মাস পর সেলটা বাড়তে শুরু করে।১০ মাস ধরে আমার এই উদ্যোক্তা জীবন।প্রথম দু-তিন মাস আমি নিজেকে প্রচার করেছি আর আমার পণ্যকে সবার সামনে আনার চেষ্টা করেছি।
আপনার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনে অনুপ্রেরণা কে ছিলো?
-শখের বশে আমার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা।আমার মেয়েরা অনেক বেশি কেক পছন্দ করতো।এমন কিছু নয় যে উদ্যোক্তা হতেই হবে।শুধুমাত্র শখের কারণে আমার এই লাইফে আসা।
.উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে আপনাকে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে কি?
-আমার উদ্যোক্তা হতে গিয়ে আমার কোনো বাধাই ছিলো না।এই লাইফে আমি পুরোপুরি স্বাধীন ছিলাম।
উদ্যোক্তা হওয়ার বিষয়গুলো কিভাবে আয়ত্ত করেছিলেন?
-আমি কেকটা নিজে থেকে পারতাম।কিন্তু কাস্টমাইজড করতে গেলে তো কিছু শিখতে হয়।তখন আমি অনলাইন কিছু ক্লাস করে শিখে নিই যে কাস্টমাইজড কেকগুলো তো নিজে করা সম্ভব না।একেক কাস্টমার একেক রকম ডিজাইন চায়।এখনো ক্লাস করে শিখছি।কাস্টমারের মন অনুযায়ী করে দেওয়ার চেষ্টা করি।
আপনার পেজটা কিভাবে পরিচালনা করছেন?
-আমার পেজের নাম Linda’s Dessert Fiesta https://www.facebook.com/dessertbite আমরা মেইনলি ‘উই’তে কাজ করি।উই থেকে বেশি সেল হয়।আমাদের পেজটা উই প্রমোট করে।আমি যত কাস্টমার হ্যান্ডেল করেছি সব উই থেকে।আমাকে আমার পেইজে বেশি যেতে হয়না,আমার পেজটা উই এর কারণে অর্গানিকভাবে বাড়ে।আমার পেজে প্রথম দিকে তেমন লাইক ছিলো না।কিন্তু উইতে আসার পরে লাইক ৮৫০ এর কাছাকাছি পৌঁছালো।
আপনার কেক এর ক্যাটাগরি কিরকম?
-কাস্টমার আমাকে কখনো ডিজাইনগুলো দেখিয়ে দেয়,কখনো ডিজাইন দেখে সিলেক্ট করে দেয়।চকলেট,ভ্যানিলা,ময়েস্ট কেক,রেড ভেলভেট ১০ রকমের কেক নিয়ে কাজ করছি।

বর্তমানে ক্রেতাদের কাছে আপনার পণ্য নিয়ে কেমন সাড়া পাচ্ছেন এবং অভিজ্ঞতা কেমন?
-আমি আলহামদুলিল্লাহ এখন পর্যন্ত ৯৮জন ক্রেতা নিয়ে কাজ করেছি।আমার ৯৮ জন ক্রেতাই খুবই ভালো এবং আমি যেহেতু কেক নিয়ে কাজ করছি অনেক সময় দেখা যায় ডেলিভারি ম্যান কেক নেয়ার সময় নষ্ট করে ফেলে,কিন্তু আমার ক্রেতাদের কোনো অভিযোগ ছিলো না।তারা বিষয়টি বেশ সহজভাবে নেয়। আমার দুটো অভিজ্ঞতা আছে যেখানে আমার কেক ডেলিভারি ম্যান নষ্ট করে ফেলে। তখন আমার আরেকটা সিগনেচার পণ্য মালাই চমচম আমার কাস্টমারদের কাছে পাঠিয়ে দিই, এটা পেয়ে তারা অনেক খুশি হয়।আমি চাই আমার ক্রেতারা সবসময় সন্তুষ্ট থাকুক।
আপনার ভবিষ্যত পরিকল্পনা কিরকম?
পরিকল্পনা বলতে আমি চাই আমার এই Linda’s Dessert Fiesta https://www.facebook.com/dessertbite পেজটা একদিন সুনাম অর্জন করে সফলতার উচ্চশিখরে পৌঁছোবে।আমার এই নামে ছোট্ট একটা দোকান হবে।সামনে করতে পারবো কতটুকু জানিনা। তবে আপনাদের সবার সাপোর্ট পেলেই হয়তো সম্ভব হবে একদিন!