সফলতা অর্জনের জন্য স্বপ্ন দেখতে হয়-উদ্যোক্তা মারজান আরা ঊর্মি

 সফলতা অর্জনের জন্য স্বপ্ন দেখতে হয়-উদ্যোক্তা মারজান আরা ঊর্মি

বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বে নারী উদ্যোক্তার সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তবে পুরুষদের তুলনায় এ সংখ্যা এখনো নগণ্য। উন্নত বিশ্বে চাকরিসহ ব্যবসা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে নারীর অবদান আশাব্যঞ্জক হলেও তুলনামূলকভাবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এই হার যথেষ্ট কম।এই মুহূর্তে আমাদের উচিত যে কাজে দক্ষ নিজের প্রতিভা কে কাজে লাগিয়ে।একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচিতি হওয়া। আমরা আজ তেমনই একজন তরুণ নারী উদ্যোক্তা নিয়ে কথা বলবো।

উদ্যোক্তা মারজান আরা ঊর্মি। ছোট বেলা থেকে স্বপ্ন দেখতেন জীবনে ভালো কিছু করবেন।সেই স্বপ্ন পূরণ করতে হলে তো ভালো ভাবে পড়াশোনা করার দরকার। তিনি বি এ এফ শাহীন কলেজ তেজগাঁও থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করেন। তারপর পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু স্বপ্ন তো বিফলে দেওয়া যাবে না। বিয়ের পর ২০১০ সালে হযরত শাহ আলি মহিলা ডিগ্রী কলেজ থেকে বিএসএস সম্পন্ন করেন। এবং পলিটিকাল সাইন্স থেকে হাইয়ার সেকেন্ড ক্লাস নিয়ে পাস করেন। তবে তার খুব ইচ্ছে ছিল ল, এলএলবি নিয়ে পড়াশোনা করার।কিন্তু পরিবারের অসম্মতির কারণে আর পড়াশোনা করা হয়নি। কিন্তু স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি বনে যান একজন নারী উদ্যোক্তা এবং যাত্রা শুরু করেন দেশীয় পণ্য নিয়ে কাজ করার। তার উদ্যোগের নাম “মারজান প্যাশন ক্রাফট,”

কিভাবে উদ্যোক্তা যাত্রা শুরু করেছেন?

-২০১৯ সালের এর শেষের দিকে যখন সারাবিশ্বে করোনা মহামারী দেখা দিলো।তখন সারা বিশ্বে এক হাহাকার, ভয়, আতঙ্ক শুরু হয়ে যায়। তখন আমরা সবাই মানসিক ভীত হয়ে পরেছিলাম।আমি অনেকটা মানসিক ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছিলাম।তখন আমার মা আমাকে নতুন করে কাজ করার জন্য অনুপ্রেরনা দেয়।নিজের ও পরিবারের উপকারে আসে এরকম কিছু কর বেশ তখন থেকেই আমার যাত্রা শুরু। আমি হাতের কাজ, সেলাই,আর্ট, ডিজাইন সবই করতে আমার খুব ভালো লাগতো।তাই ২০১৮ সালে ডিসেম্বর থেকে আমি আমার কাজ শুরু করি।সবাই আমার কাজ দেখে খুব খুশি ও পছন্দ করল।তাই সবার অনুপ্রেরণায় আমি সামনে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি।

-২০২০ সালে অক্টোবর মাসে আমি অনলাইন উইতে জয়েন হই আমার এক বান্ধবীর মাধ্যমে। বেশ সেই থেকেই আমার সামনে এগিয়ে চলা। উইয়ের নিশা আপুর দেখা দেখা হয় এবং উইয়ের অনেক আপুদের সাথে আমার পরিচয় হয় এবং এর অনেক আপুদের সফল হওয়ার গল্প আমাকে খুব অনুপ্রাণিত করে যার জন্য আমি সামনে এগিয়ে যেতে মনস্থির করি। শ্রদ্ধেয় রাজিব আহমেদ স্যার এর পরামর্শে এগিয়ে যাচ্ছি।তাই সবার দোয়া ও ভালবাসা নিয়ে কাজ করে সামনে এগিয়ে যেতে চাই।

আপনি কি কি পন্য নিয়ে কাজ করছেন?

আমি দেশীয় পন্য নিয়ে কাজ করছি। আমার সিগনেচার পন্য নকশীকাঁথা। যেহেতু আমার হাসবেন্ডের নিজস্ব ওয়ার্ক হাউজ আছে। সেখানে আমাদের নিজস্ব ডিজাইন তৈরি পোশাক ও সৃজনশীলতা বিকাশে ধৈর্য্য ধরে কাজ করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।যাতে করে দেশের দুস্ত ও অসহায় মানুষের কর্ম সংস্থানে ভবিষ্যতে সুফল বয়ে আনে। দেশ ও মানুষের উপকারে কাজ করাই আমার মূল উদ্দেশ্য।

একজন উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কোন ধরনের বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছে কি?

উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কোন বাঁধার সম্মুখীন এখন পর্যন্ত হয়নি। কারন আমার পরিবার সব সময় আমাকে সাপোর্ট করেছে। এবং সব বেশি সাপোর্ট করছে আমার হাসব্যান্ড তিনি সাপোর্ট না করলে হয়তো এত দূর আসা সম্ভব হতো না। আপনার উদ্যোগটি নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি? আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো আমাদের দেশের সংস্কৃতি, ভাবমূর্তি কে সবার সামনে ভাল ভাবে উপস্থাপন করার জন্য দেশের ঐতিহ্যবাহী দেশী পন্য নিয়ে কাজ করবো। আমার স্বপ্ন দেশীয় পন্য দেশের গন্ডি পেরিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চাই।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার প্রতিনিধি রোয়েনা রহমান।

RedLive

Related post

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।