ডিয়াগো ম্যারাডোনাঃ ফুটবল বিশ্বের জাদুকরী কিংবদন্তী শিল্পীর গল্পের শেষ পাতা

 ডিয়াগো ম্যারাডোনাঃ ফুটবল বিশ্বের জাদুকরী কিংবদন্তী শিল্পীর গল্পের শেষ পাতা

ফুটবলপ্রেমী অথচ ম্যারাডোনার নাম শোনেননি, বিশ্ব জুড়ে এমন মানুষের দেখা পাওয়া খুব কঠিন একটি ব্যাপার। তাছাড়া প্রকৃত অর্থেই যারা ফুটবলপ্রেমী, ম্যারাডোনা তাদের কাছে একজন রোল মডেল। কারণ আর্জেন্টিনার নীল-সাদা জার্সি পরা বিখ্যাত দশ নম্বর প্লেয়ারটি ছিলেন সেই ব্যক্তি, ভক্তরা যাকে নির্দ্বিধায় “ফুটবলের ঈশ্বর” বলে আখ্যায়িত করতে পছন্দ করেন! এই সম্মানের যোগ্য দাবিদারই ছিলেন তিনি। কেননা বিশ শতকের সর্বসেরা ফুটবল ব্যক্তিত্ব হিসেবে ফিফা যে দুই জন প্লেয়ারকে বেছে নিয়েছে, ম্যারাডোনা তাদের মধ্যে একজন। অন্যজন ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবল প্লেয়ার, পেলে।

আর আজ আমরা জানব ফুটবলের ইতিহাসের সেরাদের সেরা একজন ব্যক্তির জীবনী সম্পর্কে। ম্যারাডোনার জীবনী সম্পর্কে।

পুরো নাম ডিয়েগো আরমানদো ম্যারাডোনা। আর্জেন্টিনার বুয়েইন্স আইরেসের লানুস শহরে তার জন্ম, ১৯৬০ সালের অক্টোবরের ৩০ তারিখে।
বেড়ে উঠেছেন বুয়েইন্স আইরেসের দক্ষিণ প্রান্তের একটি শান্তিটাউনে, ভিয়া ফিওরিতো যার নাম। বাবার নাম চিতরো ডিয়েগো ম্যারাডোনা এবং মায়ের নাম দোনা তোতা ডালমা সালভাদর ফ্রাঙ্কো।

চিতরো-দোনা তোতা দম্পতির দরিদ্র পরিবারে আলো হয়ে এসেছিল তাদের পঞ্চম সন্তান, ডিয়েগো ম্যারাডোনা। পরবর্তীতে গোটা ফুটবল বিশ্ব আলোকিত হয়েছে সেই আলোতে!

ছবিঃ ড্রবিলিং চ্যাম্পিয়ন এর শিল্পত্ব

ম্যারাডোনা যখন যুব পর্যায়ে এস্ত্রেয়া রোজার হয়ে খেলছিলেন, তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০। ১৬ বছর বয়সে আর্জেন্টিনোস জুনিয়রের হাত ধরে শুরু হয়েছিল তার প্রফেশনাল ক্যারিয়ার। এরপর তার শৈল্পিক ফুটবল নিদর্শনের মাধুর্যে মুগ্ধ হয়েছে বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলি, সেভিয়া এবং নিওয়েলস ওল্ড বয়েজ ক্লাব। পরবর্তী জীবনে কোচ হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

কিন্তু ম্যারাডোনাকে বিশ্ববাসী মনে রাখবে তার আর্জেন্টিনার নীল-সাদা দশ নম্বর প্লেয়ারের জার্সিতে। সেই জার্সি পরে ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের ময়দানে রীতিমতো আলোড়ন তৈরি করেছিলেন তিনি! সেবার ম্যারাডোনার নেতৃত্বেই আর্জেন্টিনা অর্জন করেছিল ফুটবল বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সম্মান, বিশ্বকাপ ট্রফি! আর ম্যারাডোনা?

ম্যারাডোনার প্রাপ্তির ঝুলিখানা ফাঁকা ছিল না একেবারেই! ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপের সেরা ফুটবল প্লেয়ার নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। এবং সেই বিশ্বকাপের ময়দানেই ম্যারাডোনার বিখ্যাত “হ্যাণ্ড অব গড” গোলের দেখা পেয়েছিল গোটা বিশ্ব! তাছাড়া নিজের ক্যারিয়ার জীবনে অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই কিংবদন্তি ফুটবল প্লেয়ার।

ছবিঃ ফুটবল শিপ্লের কারিগরি তে ম্যারাডোনা

মাদকের প্রতি ম্যারাডোনার আসক্তি ছিল অনেক দিন ধরেই। বেপরোয়া জীবনযাপনে অভ্যস্ত ম্যারাডোনা নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল ছিলেন না। অগত্যা আজ, ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুকে বরণ করে নিলেন ফুটবল বিশ্বের ঈশ্বর। ফুটবল বিশ্বে নেমে এলো শোকের ছায়া।

লিখেছেন : নবনীতা প্রামানিক

RedLive

Related post