“মাত্র পাচঁশত টাকা মূলধন নিয়ে নিজ স্বপ্নে এগিয়ে যাওয়া তন্নী”

 “মাত্র পাচঁশত টাকা মূলধন নিয়ে নিজ স্বপ্নে এগিয়ে যাওয়া তন্নী”

ছোটবেলা থেকেই নিজেকে নিয়ে ভাবতে সকলে পারে না। সেই ভাবনাকে বাস্তবে রুপ দিতে যেতে হয় অনেকটা পথ। বর্তমানে উদ্যক্তা তো অনেকেই কিন্তু সেটাকে নিয়ে সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে খুবই কম মানুষ। আজ শুনবো এমনই একজন উদ্যক্তার গল্প যিনি কিছুদিন পূর্বেই শুরু করেছেন তার এই পথযাত্রা। কথা বলছি “ওজস্বিনী- Ojoshwini” এর কর্ণধার তাহমিনা আক্তার তন্নীর সাথে যিনি কাজ করছেন রুপচর্চার হারবাল প্রোডাক্টস নিয়ে।

নিজ সম্পর্কে কিছু বলুন।

আসসালামু আলাইকুম আমি তাহমিনা আক্তার তন্বী, ঢাকার মিরপুরে আমার জন্ম এবং এখানেই আমার বেড়ে উঠা। আমি একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা মায়ের ৩সন্তানের মধ্যে আমি মেঝো। আমি ২০১৮ সালে এসএসসি পাশ করি এবং ২০২০ সালে সরকারি বাংলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাশ করি। বর্তমানে আমি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২য় বর্ষে অধ্যয়নরত আছি।

নতুন কিছু করার আগ্রহ ও উৎসাহ কিভাবে পেলেন?

ছোটবেলা থেকেই নতুন কিছু করতে, নতুন কিছু জানার প্রতি আমার আগ্রহ কাজ করতো। ছোট বেলা থেকেই নিজে কিছু করতে চেয়েছি নিজের একটি পরিচয় গড়ে তুলতে চেয়েছি। এই নিজের পরিচয় গড়ার আগ্রহ থেকেই নতুন কিছু করার উৎসাহ পেয়েছি। এবং সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যেই নিজেকে তৈরী করে চলছি প্রতিনিয়ত।

আপনি মূকত কাজ করছেন কি নিয়ে?
আমার বিজনেস টি অনলাইন ভিত্তিক। আমি ছেলে ও মেয়েদের রূপচর্চায় হারবাল বিউটি প্রোডাক্টস নিয়ে কাজ করছি৷ আমি মূলত ঘরোয়া প্রসাধনী নিয়েই কাজ করছি। ভবিষ্যতে ঘরে তৈরী বিভিন্ন খাবার ও প্রসাধনী নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা আছে। আমি অনলাইন ও অফলাইন দুইভাবে কাজ করে চলেছি।

কিভাবে শুরু করেছিলেন এই যাত্রা?
আমার যেহেতু ঢাকার মিরপুরেই বেড়ে উঠা তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশুনার সুবিধার্থে আমাকে আমার ক্যাম্পাসের হোস্টেলেই থাকতে হয়। হোস্টেলে থাকা অবস্থায় পড়াশুনার পাশাপাশি আলাদা কিছু করার উদ্যম নিয়েই এই ব্যবসা শুরু করি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে আমার অনলাইন পেজ “ওজস্বিনী” যাত্রা শুরু করে। মাত্র ৫০০টাকা মূলধন নিয়ে ওজস্বিনীর যাত্রা শুরু। বিগত ৯মাস ধরে আলহামদুলিল্লাহ আমার পেজ ভালো চলছে। এখন পর্যন্ত কোনো পিছুটানের সম্মুখীন হতে হয়নি।

কে বেশি উৎসাহিত করেছে?

আমার নিজস্ব উদ্যমের পাশাপাশি আমার আশেপাশের মানুষর উৎসাহ আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রানিত করেছে। আমার ক্যাম্পাসের এক বড় আপু “শ্রাবন্তী পাল” এর সাথেই আমি প্রথম আমার বিজনেস আইডিয়া শেয়ার করি। এবং তিনিই প্রথম যিনি আমাকে অনেক বেশি উৎসাহিত করে বিজনেসটি শুরু করার জন্য। এবং তারপর আমি আমার মা এবং আমার বান্ধবী গার্গীর সাথে আলোচনা করি। এবং তারাও আমাকে যথেষ্ট উৎসাহিত করে। আমার পেজের নাম আমার বান্ধবী ঠিক করতে সাহায্য করে। আমার বন্ধু সাব্বির আমাকে টেকনিক্যাল হেল্প করেন। আমার অনলাইন পেজ আমার বন্ধুরই তৈরী করে দেওয়া। এবং তাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় একজন উদ্যোক্তা হিসেবে আমি যাত্রা শুরু করি।

এই রুপচর্চা বিষয়ক আইডিয়াটা কিভাবে আসে?
নিজ প্রয়োজনেই আমি ঘরোয়া প্রক্রিয়ায় তৈরী প্রসাধনী সম্পর্কে জানার চেষ্টা করতাম। ইন্টারনেটের বিভিন্ন সাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করতাম এবং নিজে ঘরোয়া প্রসাধনী ব্যবহার করতাম। ব্যস্তময় জীবনে আসলে পড়াশুনা ও কাজের বাহিরে নিজের শরীর ও রূপচর্চায় সেভাবে সময় দেওয়া হয়ে উঠে না। ক্যাম্পাস হোস্টেলে থাকা সকল ছাত্রী দেরও কর্ম ব্যস্ততায় রূপচর্চাথায় থাকলেও হয়ে উঠে না। আমরা সকলেও জানি ঘরোয়া প্রসাধনীর উপকারিতা কিন্তু তা তৈরী একটু সময়সাপেক্ষ হওয়ায় আমরা অনেকেই তা করে উঠতে পারি না। এসকল ভাবনা থেকেই এবং ঘরোয়া প্রসাধনী ব্যস্তময় নারী ও পুরুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া ভাবনা থেকেই এই বিজনেস আইডিয়া আসে

আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু জানতে চাচ্ছি।

আমার প্রতিষ্ঠানের নাম “ওজস্বিনী- Ojoshwini”. আমি মূলত কাজ করছি বিভিন্ন ধরনের ঘরোয়া প্রক্রিয়ায় তৈরী প্রসাধনী নিয়ে। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি আমার কাস্টমারকে ক্যামিক্যাল মুক্ত একদম হারবাল প্রোডাক্ট পৌঁছে দেওয়ার। এবং সততার সাথেই আমার কাজ পরিচালনা করছি।

প্রতিষ্ঠানে সেল কেমন হয়?
আমি যাত্রার শুরু থেকেই মোটামুটি অনেক সাড়া পেয়েছি। সুলভমূল্য ও সহজলভ্য হওয়ায় রিপিট কাস্টমার পেয়েছি অনেক। আমি এখন পর্যন্ত পেজ থেকে ৭৭টি সেল দিয়েছি।

প্রতিষ্ঠানে কর্মী সংখ্যা কতজন?
আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মী নেই। আমি একাই কাজ করি প্রতিষ্ঠানের জন্য। আমার পাশাপাশি আমার মা আমার প্রোডাক্ট তৈরী করে দিতে সাহায্য করে। বলা যায়, আমি এবং মা এই বিজনেসের জন্য কাজ করে চলেছি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
আমর প্রতিষ্ঠান নিয়ে আমার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আমি আমার নিজস্ব শো-রুম দিতে চাই৷ যা অন্যদের কর্মসংস্থানের জন্য সাহায্য করতে পারবে। আমি ওজস্বিনীকে একটি ব্রান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন: জাফরিন হোসাইন।

RedLive

Related post