নিজ দেশে সমালোচনায় কিন্তু ভিনদেশে কেন তিনি এতো জনপ্রিয়!

 নিজ দেশে সমালোচনায় কিন্তু ভিনদেশে কেন তিনি এতো জনপ্রিয়!

আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয়,বাংলাদেশের এমন এক ব্যক্তির নাম বলুন যিনি বার্সেলোনার মতো ফুটবল ক্লাবের উপদেষ্টা? যার সাথে একবার হ্যান্ড শেক করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছিল খোদ মেসি? অনেকেই হয়তো পারবেন না।

কিন্তু একই প্রশ্ন যদি এভাবে করা হয়,বলুন তো বাংলাদেশের একমাত্র নোবেল লরেটের নাম। উত্তরটা সঙ্গে সঙ্গেই আসবে।

ডঃ মুহম্মদ ইউনূস। 

বাচ্চা থেকে বয়স্ক,তার এই একটি সম্মানের কথা আমাদের সকলের জানা।

কিন্তু,তার অসংখ্য কীর্তির কথাই আমাদের অজানা। কিংবা বলা যায়,আমাদের অধিকাংশের জানার পরিধিই আটকে আছে বিতর্কের বেড়াজালে।তাকে নিয়ে বিতর্কের অন্ত নেই। কখনো তার প্রতিষ্ঠান গ্রামীন ব্যাংক, আবার কখনো খোদ তিনিই জড়িয়ে পড়েছেন, বিভিন্ন তর্ক বিতর্কে।

বিতর্কিত রাজনৈতিক মন্তব্য করে এসেছেন সমালোচনায়। তার বিরুদ্ধে জারি হয়েছিল গ্রেফতারি পরোয়ানাও।

তবে এক্ষেত্রে অনেকের মতে,সকল সমালোচনার দোষ তাকে দেয়া যায় না। অনেক ক্ষেত্রেই তিনি রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও পরিস্থিতির শিকার।

কিন্তু যত সমালোচনাই হোক না কেন,যে কেউই একথা এক বাক্যে স্বীকার করতে বাধ্য,ডঃ মুহম্মদ ইউনূস বাংলাদেশের এক অন্যতম কৃতি সন্তান। তার নোবেল-উত্তর জীবন তিনি সমর্পণ করেছেন সামাজিক ব্যবসার প্রসার ও বাস্তবায়নে। বিশ্বের প্রায় ৪২টি দেশের ১৩২টি প্রতিষ্ঠান অনুসরণ করেছে তার গ্রামীন ব্যাংকের মডেল।

বৈশ্বিকভাবে পেয়েছেন সম্মান ও মর্যাদা। পৃথিবীর ৪৮টি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রী প্রদান করেন। ২০১২ সালের অক্টোবরে ব্রিটিশ গ্লাসগো ক্যালেডনিয়ান ইউনিভার্সিটি (Glasgow Caledonian University) -এর চ্যান্সেলর হিসেবে অভিষিক্ত হোন তিনি। ২০২০ সালে তার লেখা ‘No going back‘ ইউরোপ আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশের প্রচার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এছাড়া জাপান, জার্মানি সহ নানা দেশে বিভিন্ন সময় মোটিভেশনাল স্পীকার হিসেবে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দেশের জন্য তার অর্জনের ঝুলিও বেশ ভারী। ১৯৭৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত পেয়েছেন অসংখ্য পুরষ্কার।

জানেন কি,শুধু নোবেলই নয়,আরো অনেক বৈশ্বিক সম্মাননার সঙ্গেই তার নাম যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে আছে সম্মানজনক বিশ্ব খাদ্য পুরষ্কার, পিফার শান্তি পুরষ্কার,বিশ্ব ফোরাম পুরষ্কার সহ আরো অসংখ্য। সম্প্রতি অলিম্পিক লরেলের মতো পুরষ্কার পেয়ে এই মহাযজ্ঞে বাংলাদেশের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখালেন ডঃ মুহম্মদ ইউনূস। কেনিয়ার সাবেক তারকা কিপ কেইনোর পর ডঃ মুহম্মদ ইউনূসই দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি এই সম্মাননায় ভূষিত হন।

দিনশেষে হয়তো তার বিভিন্ন কর্মকান্ড নিয়ে থেকে যায় নানা প্রশ্ন। কিন্তু নেতিবাচকতার প্রভাবে যেন তার ইতিবাচক কাজ বা সম্মান যেন ঢাকা না পড়ে যায়,এইটুকুই চাওয়া,দেশের সচেতন নাগরিকদের।

লিখেছেন : অনন্যা চক্রবর্তী 

Brinty Saha

Related post