স্মার্টফোন হ্যাকিং কেন হয় এবং হ্যাকিং হওয়া থেকে মুক্তির উপায় গুলো কি?

 স্মার্টফোন হ্যাকিং কেন হয় এবং হ্যাকিং হওয়া থেকে মুক্তির উপায় গুলো কি?

হঠাৎ করে একদিন ফোন হাতে নিয়ে দেখলেন, আপনার ফোনের অপারেটিংগুলো আপনার কাছে অজানা মনে হচ্ছে! এমন ব্যাপার কিন্তু কয়েক বছর আগে থেকে অহরহ ঘটছে। এর পেছনে দায়ী হয়তো আমরাও রয়েছি কারণ স্মার্টফোনের বিশেষ কিছু দিক আমাদেরকে খেয়াল করতে হবে, যদি হ্যাকিং থেকে মুক্তি চান।

১. ম্যালওয়্যার সফটওয়্যারের কারণে ব্যাটারির কর্মক্ষমতা হ্রাসঃ

ফোন দিয়েই আজকাল প্রায় অর্ধেক কাজ করে ফেলি, ল্যাপটপের দরকার অনেকক্ষেত্রেই হয়না। তাই সারাদিন ফোনের উপর বলতে পারেন চলতে থাকে অত্যাচার। নানা ধরনের অ্যাপস ডাউনলোড করা হয়, প্রয়োজনীয় কিংবা শখের বসে। এক্ষেত্রেও আমরা প্রায় সবাই জানি, অতিরিক্ত অ্যাপস ফোনের ব্যাটারির কার্যক্রম হ্রাস করে ফেলে। তারপরও বিভিন্ন অ্যাপস ডাউনলোড করে থাকি। অতিরিক্ত অ্যাপস ডাউনলোডের ফলে সেগুলো ব্যাকআপের মাধ্যমেও কখন যে ম্যালওয়্যার নামক ভাইরাসটি আপনার ফোনে প্রবেশ করবে আপনি টেরও পাচ্ছেন না। এই সফটওয়্যারটি আপনার ফোনের ফাংশনগুলো অতি ধীরগতিতে এনে দেয়।

২. স্মার্টফোন গরম হওয়া :

কখনো কখনো খেয়াল করলে দেখবেন, স্মার্টফোন হাতে নিলেই মনে হচ্ছে সেটা গরম হয়ে গিয়েছে। অনেকক্ষণ ধরে কাজ করলে যেমনটা হয়। এক্ষেত্রে আপনার ডিভাইসটি রিবুট করার পরও এমন হয়। সেসময় কিছু ভাইরাস আপনার ফোনে প্রবেশ করে তারা নিজেরা কিছু কোড ব্যবহার করে আপনার ফোনের অপারেটিং নিয়ন্ত্রণের জন্য। এই ভাইরাসগুলো রাতের বেলা যখন আপনার ফোন চার্জিং অবস্থায় থাকবে হঠাৎ করেই ফোনটিকে আগের মতো নরমাল মুডে এনে বেশি সক্রিয়ভাবে কাজ করে।

৩. ফোনের অ্যাপস ছাড়াও বাড়তি অ্যাপস:

বাড়তি অ্যাপসগুলো ফোনে রাখা ঠিক নয়। এটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসগুলির সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, বিশেষত যদি আপনি কোনও ডিফল্ট সুরক্ষা সেটিংস বাইপাস করে থাকেন। অ্যান্ড্রয়েড ওএস সহ কোনও ডিভাইসে, বিকাশকারী সরঞ্জাম এবং এডিবি ডিবাগিং অক্ষম রয়েছে তা নিশ্চিত করার জন্য চেক করুন।

৪. অদ্ভূত মেসেজঃ

” Click here and you will be surprised”, প্রায়ই কোন বিশেষ দিনে অনেকেই পেয়ে থাকেন। এ ধরনের মেসেজকে বলা হয়, Spam. এগুলোতে ক্লিক করা মাত্রই আপনার যাবতীয় পার্সোনাল তথ্যাদি হ্যাকাররা পেয়ে যাবে।

৫. অন্যান্য কার্যক্রমগুলোঃ

ফোনের ব্যাটারির টেম্পারেচার বেড়ে যাওয়া ও কমে যাওয়া ছাড়াও কিছু বিষয়। যেমনঃ

  • অতিরিক্ত ফোন রিবুট দেওয়া
  • অ্যাপসের ফাংশন এলোমেলো হয়ে যাওয়া
  • কথা বলার সময় সিগন্যালের গন্ডগোল

এ ব্যাপারগুলো ও কিন্তু আপনার স্মার্টফোনের হ্যাকিং হয়ে যাওয়ার লক্ষণ। হ্যাকিং থেকে দূরে থাকতে করণীয়ঃ সাইবার ক্রাইম কিছু নির্দেশনা দিয়েছে যাতে আমরা সেগুলোর প্রতি নজর দেই।

১. অপ্রয়োজনীয় অ্যাপস ডিলিট :

যেসব অ্যাপস আপনার দরকার নেই সেটি ডাউনলোড না করাটাই বেস্ট। আবার একই সাথে তিন-চারটি অ্যাপস ব্যবহার করা থেকে দূরে থাকুন।

২. লিংক এর ব্যাপারে বিস্তারিত জানুন:

কোন লিংকে কৌতূহলবশত ক্লিক করতে যাবেন না। আগে সেটার ব্যাপারে ভালোভাবে জেনে তারপর ক্লিক করবেন।

৩. রিবোট করবেন কিন্তু বেশি নয়ঃ

ফোনের কার্যক্রমগুলো রিফ্রেশ করার জন্য রিবোট করবেন ঠিকাছে তবে সেটা যেন অধিকবার না হয়।

৪. অপারেটিং সিস্টেম আপডেটঃ

একটু খেয়াল করলে দেখবেন যখন অপারেটিং সিস্টেমগুলোর আপডেট আসে সেগুলোকে খামখেয়ালির জন্য হয়তো আপডেট করা হয়না। তাই আপনার যতই ব্যস্ততা থাকুক না কেন অবশ্যই আপনি অপারেটিং সিস্টেম আপডেট করবেন।

৫. রক্ষামূলক অ্যাপস :

কিছু অ্যাপস আমরা ডাউনলোড করে থাকি যাতে ফোনের যাবতীয় কার্যক্রম হ্যাকিং হওয়া থেকে দূরে থাকে। যেসব অ্যাপস এমন কাজের জন্য ডাউনলোড করছেন সেগুলোর ব্যাপারে আরো বেশি সতর্ক হওয়া দরকার। প্রতি বছর যেভাবে স্মার্টফোনের অপারেটর হ্যাকিং এর ব্যাপারটি বেড়ে গিয়েছে তাতে বিচলিত না হয়ে আপনার ডিভাইস যেমনই হোক সেটার কার্যক্রমগুলো ভেবেচিন্তে করলে আপনার দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি মিলবে।

লিখেছেনঃ সামিহা আতিকা

RedLive

Related post