প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়াতে করণীয়

 প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়াতে করণীয়

প্রেজেন্টেশন শব্দটি অনেকের কাছেই একটি ভীতির নাম।অথচ কিছু টিপস মেনে চললে একজন ভালো প্রেজেন্টার হওয়া কিন্তু কঠিন কিছু নয়৷প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়ানোর পূর্বে প্রেজেন্টেশন স্কিল কি তা জানা প্রয়োজন। তাই চলুন শুরুতেই জেনে নেই প্রেজেন্টেশন স্কিল বলতে কি বোঝায়।সহজ ভাষায় প্রেজেন্টেশন স্কিল হলো কোনো একটি বিষয় অন্যান্য মানুষের সামনে খুব সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারার দক্ষতা।

এটি এমন একটি স্কিল যা বর্তমানে ব্যক্তিগত এবং পেশাগত দুটি ক্ষেত্রের উন্নতির জন্যই সমানভাবে প্রয়োজনীয়।কেননা প্রেজেন্টেশন স্কিল ভালো থাকলে যেমন নিজের আত্মবিশ্বাস বাড়ানো যায় তেমনি পেশাগত জীবনেও উন্নতি করা সম্ভব হয়। আজকের লেখায় রয়েছে প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় কিছু টিপস যা সবার জন্যই সহায়ক হবে।

টিপস ১

প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়াতে পূর্বপ্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই। যে টপিকে প্রেজেন্টেশন দিতে হবে সে টপিক সম্পর্কে প্রেজেন্টেশনের পূর্বেই কিছু প্রস্তুতি নেয়া হলে সে টপিক সম্পর্কে ভালো ধারণা অর্জন করা সম্ভব হয় যা আপনার কনফিডেন্স বাড়িয়ে দিয়ে ভালো প্রেজেন্টেশন দিতে সহায়তা করে । তাই আপনার টপিক সম্পর্কে ইন্টারনেট, বিভিন্ন বই থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করুন।প্রয়োজন হলে টপিক সম্পর্কে একটি স্ক্রিপ্ট তৈরি করুন এবং আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কয়েকবার প্র‍্যাকটিস করুন। দেখবেন কনফিডেন্স পাবেন।

টিপস ২

অডিয়েন্স বা যাদের সামনে প্রেজেন্টেশন দেবেন তাদের বয়স, পেশা, আগ্রহ ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা অর্জন করুন। কারণ স্কুলের একদল শিক্ষার্থীদের সামনে আপনি যেভাবে প্রেজেন্টেশন দেবেন কর্পোরেট কোম্পানির সামনে আপনি সেভাবে প্রেজেন্টেশন দিতে পারবেননা কেননা অডিয়েন্স ভেদে প্রেজেন্টেশনের ধরণ বিভিন্ন হয়ে থাকে। তাই অডিয়েন্স সম্পর্কে প্রেজেন্টেশনের পূর্বে জেনে নিলে আপনি সে অনুযায়ী আপনার প্রেজেন্টেশনের কন্টেন্ট তৈরি করতে পারবেন।

টিপস ৩

প্রেজেন্টেশনের পুরোটা সময় শুধুমাত্র কথা বলে গেলে অডিয়েন্স সম্পূর্ণ মনোযোগ নাও দিতে পারে।পাশাপাশি আপনার প্রেজেন্টেশন টপিকটি যদি একটু কঠিন বা খটমটে প্রকৃতির হয় তাহলে শুধুমাত্র আপনার কথাতে অডিয়েন্স নাও বুঝতে পারে আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন। তাই আপনার প্রেজেন্টেশন আরো আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য আপনার টপিকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন ছবি, ভিডিও, অডিও, চার্ট, পাওয়ারপয়েন্ট স্লাইড ইত্যাদির সাহায্য নিতে পারেন। এতে করে অডিয়েন্স আপনি কি বোঝাতে চাচ্ছেন তা যেমন ভালোভাবে বুঝতে পারবে তেমনি আপনার প্রেজেন্টেশনের প্রতি আরো বেশি আকৃষ্ট হবে।

টিপস ৪

প্রেজেন্টেশন বলতে শুধুমাত্র একদল মানুষের সামনে কথা বলে যাওয়াকেই বোঝায়না, বরং সঠিক বডি ল্যাংগুয়েজ ও প্রেজেন্টেশনে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক আই কন্টাক্ট, হাত ও পায়ের উপযুক্ত ব্যবহার ইত্যাদি বডি ল্যাংগুয়েজ প্রেজেন্টেশনকে আকর্ষণীয় করে তুলতে সহায়তা করে। তাই সঠিক বডি ল্যাংগুয়েজ এর মাধ্যমে প্রেজেন্টেশনকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলুন।

টিপস ৫

প্রেজেন্টেশনের শুরু এবং শেষ এ দুটি যথাসম্ভব আকর্ষণীয় রাখার চেষ্টা করুন। কারণ অডিয়েন্স এ দুটি সময়েই আপনার প্রেজেন্টেশনে সবচেয়ে বেশি মনোযোগী থাকে। আবার প্রেজেন্টেশনের শুরু ও শেষ ভালো না হলে আপনি কখনোই একজন ভালো প্রেজেন্টার হতে পারবেননা।তাই এ বিষয়ে শুরুত্ব দিন। পাশাপাশি প্রেজেন্টেশন এর সময়ের ব্যাপারেও খেয়াল রাখুন।অযথা প্রেজেন্টেশন লম্বা করবেননা।

টিপস ৬

ধরুন আপনি প্রেজেন্টেশন দিতে দিতে খেয়াল করলেন আপনার অডিয়েন্সের আপনার দিকে মনোযোগ নেই এবং তারা নিজের কাজে ব্যস্ত। কেমন লাগবে? অডিয়েন্স এর মনোযোগ ধরে রাখা একজন প্রেজেন্টারের জন্য অন্যতম চ্যালেঞ্জ৷ অডিয়েন্সের মনোযোগ ধরে রাখার জন্য নিজের বাচনভঙ্গি আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করুন যেন অডিয়েন্স বোর হয়ে না যায়।

প্রেজেন্টেশনের মাঝে অডিয়েন্স কে কোনো একটি প্রশ্ন করুন, কোনো একটি মজার ঘটনা বলুন আপনার প্রেজেন্টেশনের টপিকের সাথে মিল রেখে। দেখবেন প্রেজেন্টেশনের পুরোটা সময় অডিয়েন্সের মনোযোগ আপনার দিকেই থাকবে!

বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চাকুরী প্রতিষ্ঠান সবখানেই ভালো প্রেজেন্টেশন স্কিল থাকা প্রয়োজন হয়। ভালো প্রেজেন্টেশন স্কিল থাকলে আপনার প্রতি সবার ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। তাই নিজেকে বাকিদের থেকে এগিয়ে রাখতে চাইলে নিজের প্রেজেন্টেশন স্কিল বাড়াতে আজ থেকেই মনোযোগী হয়ে উঠুন।

লেখক:সুমাইয়া রহমান

RedLive

Related post