ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল সাকিব

 ফ্রিল্যান্সিংয়ে সফল সাকিব

বয়স ২৩ কি ২৪ এ যেখানে এখন এর সমাজের ছেলেরা কেউ নেশাগ্রস্ত, কেউ বেকার চাকরির পিছনে ছুটছে,কেউ পরিবারের বোঝা হয়ে আছে সেখানে এমন কেউ আছে যে কিনা ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখে আসছে এবং নিজের স্বপ্ন গুলো পূরন ও করেছে,মাত্র বয়স ২৪ এই পরিবারের পাশে দাড়িয়েছে। হ্যা, কথা বলছি চট্টগ্রামের রাউজানের সফল ফ্রিল্যান্সার সায়মান হোসেন সাকিব কে নিয়ে। সাকিব বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং করছেন,লার্নিং আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে ট্রেনার হিসেবে আছেন।এছাড়াও তিনি নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়ন করছেন। আসুন আজ জানব সাকিবের ফ্রিল্যান্সিং থেকে সফলতার গল্প। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন ক্যাম্পাস এক্সিকিউটিভ আরাফাত রহমান।

আপনার ফ্রিল্যান্সিং করার ইচ্ছা আসে কখন? কখন মনে হয় যে এই সেক্টরে কাজ করা দরকার?

ব্যাসিকালি আমি ক্লাস ৮ থেকে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানি! ফটোশপে নিজে নিজে ছবির ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ বা কালার চেঞ্জ এগুলো করতাম। টুকটাক ফাংশানগুলো গুতাগুতি করে দেখতাম! তখন এ ব্যাপারগুলো আমার জন্য অনেক কিছু ছিল!! ক্লাস ৯ এ এসে ফ্রিল্যান্সিং এর প্রতি ইন্টারেস্ট আরো বেড়ে গেছে! ২০১১ তে ওডেস্ক এ আকাউন্ট খুলছি বর্তমানে ঐটা আপওয়ার্ক এবং আমি সেইম আইডি দিয়েই এখন Upwork এ কাজ করি! ২০১১ দিকে Odesk কাজ ভালোই ছিল আর কম্পিটিশন এখনকার মত ছিল না! তো ক্লাস ৯ এ পরা অবস্থায় আমি আমার ভাইয়াকে বলি ভাইয়া আমি ফ্রিল্যান্সিং করবো সো আমি কাজ শিখবো। আমি গ্রাফিক্সের কাজ শিখবো ভাইয়া তখন আমাকে বলে কাজ এখন না এস এস সি দেওয়ার পরে কাজ শিখিও!! এরপর আমি আর বলি নাই এসব চিন্তা বাদ দিয়ে এস এস সি জন্য পড়াশুনা শুরু করলাম! এস এস সি পরিক্ষা দেওয়ার পরে ভাইয়াকে আবার বললাম আমি কাজ শিখবো! ২০১৩ এর ঘটনা এগুলো! তখন ভাইয়া বললো তুমি কলেজে ভর্তি হও তখন তমি একেবারে ফ্রি! এরপর কলেজে ভর্তি হওয়ার পর আবার বললাম যে আমি ফ্রিল্যান্সিং করবো! ভাইয়া বললো এইচ এস সি টা দিয়ে দাও এরপর তুমি একদিম ফ্রি! এরপর আমি আবার ছ্যাকা খাইলাম! এরপর এইচএসসি দেওয়ার পর আবার বললাম দেন ভাইয়া আবার বলতেছে ভার্সিটিতে চান্স পাইলে করিও তখন আর কেউ বাধা দিবে না তোমার যা ইচ্ছা করিও। এরপর পড়াশোনা শুরু করলাম প্রথমবার চান্স না পাইলে ২বার আমি ভার্সিটিতে চান্স পেয়ে যাই!

এখন যদি আমি আমার ছোটবেলা থেকে শুরু করতে যাই আমি যখন ক্লাস থ্রি বা ফোর এ পড়তাম তখন আমার ভাই এর একটা কম্পিউটার ছিল। আমার ভাই এর একটাই নীতি ছিল তুমি যা শিখবা নিজে নিজে শিখবা কোন কিছু নষ্ট হইলে নিজে ঠিক করবা যদি না পারো তখন আমি দেখব। তখন থেকে আমি নিজে নিজে উইন্ডোজ সেটাপ দেয়া বা পিসি তে কোন প্রব্লেম হলে নিজে নিজে সলভ করার ট্রাই করতাম।

ফ্রিল্যান্সিং করায় আপনি সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট কার থেকে পেয়েছেন?

আমার ভাই আমাকে অনেক সাপোর্ট দিয়েছে। ২০০৮ এ আমার আব্বা মারা যায় এরপর থেকে আমার অভিভাবক হচ্ছে আমার আম্মু আর আমার ভাই। এরপর আমাদের পিসি টা বিক্রি করে দেয়। এরপর আমি ভার্সিটি তে চান্স পেলাম ২০১৭ তে এরপর আমি আমার পুরোনো স্বপ্ন পূরণ করার লক্ষ্যে মনযোগ দিলাম।। মনযোগ দিলাম বলতে তখন আমার কোন লেপ্টপ ছিল নাহ। তো আমার রুমমেট মাসুম এর লেপ্টপ দিয়ে ইউটিউব দেখে প্রেক্টিস করা শুরু করলাম। ও যখন কাজ করত না লেপ্টপ এ অই সময় টায় আমি কাজ প্রেক্টিস করতাম। প্রথম দিকে যেহেতু আমার কোর্স করার টাকা ছিল নাহ কারণ ফ্যামিলি থেকে যা টাকা দিত তা আমার চলার ক্ষেত্রে শেষ হয়ে যেত।

আমি এতদুর আসার পিছনে আরো কিছু মানুষের অবদান আছে।এমন ১ টা পর্যায়ে গিয়ে যখন আমি কাজ শুরু করব তখন টাকার প্রব্লেম ফেস করেছি যখন fiverr এ একাউন্ট খুললাম আমার আইডিটা ভেরিফিকেসান এর দরকার ছিল্ কিন্তু আমার কাছে কোন ন্যাশনাল আইডি ছিল নাহ। এইজন্য আমার পাসপোর্ট বানাতে হবে কিন্তু বানানোর টাকা ছিল নাহ। আমার ফ্যামিলি তেও অতিরিক্ত টাকা ছিল নাহ পাসপোর্ট বানানোর জন্য। তাই আমার কাছে ১ টাই অপসান ছিল আমার মোবাইল টা বিক্রি করে দেয়া। কিন্তু পরে আমার বন্ধুরা বলছে মোবাইল বিক্রি করার দরকার নাই। কারো থেকে ধার নে। ধারের কথা বলতে গেলে অনেকজনের কাছে চাইছি কিন্তু কারো কাছে ধার পাইনি! কিন্তু আমাকে যে মানুষ টা ধার দিছে ও হচ্ছে টিউশনি করে কিছু টাকা জমাইসে সে ১ টা মোবাইল কিনার জন্য। সে ওই টাকা গুলা আমাকে দিয়ে দিছে। ওর নাম হচ্ছে সজীব। ওর থেকে আমি ৪০০০ টাকা নিছি। এরপর আমার আরেকটা ফ্রেন্ড ছিল রাকিব ওর থেকে ২০০০৳ নিছি। আমার লাইফ এ এই ২ টা মানুষ অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমার লাইফে আমি আরেকজনের কথা এখনো বলি নি সে হচ্ছে আমার বন্ধু আমার রুমমেট শামীম। ও আমাকে অনেক সাপোর্ট দিত। এসাইনমেন্ট করার পরে এসাইনমেন্ট প্রিন্ট আউট বা জমা দেয়ার ব্যাপার টা ও দেখত যাতে আমার সময় বাচে। আমার সেশন ফি টা বেশিরভাগ সময় ও দিত এবং অন্য বন্ধুরা করে দিত আমার সময় বাচানোর জন্য।

কাজ শেখা কোথা থেকে?

আমার এক পরিচিত ভাই ছিল নাম হল শান্ত উনার থেকে আমি ভিডিও নিছিলাম।।এবং আমার পেন ড্রাইভ ও ছিল নাহ উনার পেন ড্রাইভ আমাকে দিয়ে দিছিল।আমি প্রথমে ভিডিও গুলো দেখা শুরু করলাম। ভিডিও গুলো দেখে আমি শিখার ট্রাই করতাম। এরপর আমি একটা স্কলারশিপ পেয়েছিলাম Creative IT তে এরপর আমি Creative IT তে graphics এর ১ টা কোর্স করলাম এবং আমাদের মেন্টর ছিল রানা স্যার। কোর্স টা ছিল ফ্রি। Creative IT এর CEO মনির স্যার বেশ কয়েকজন কে ফ্রি তে কোর্স এর সুযোগ করে দিয়েছিলেন তার মধ্যে একজন আমি ছিলাম। তবে আমার শিখার অনেক ইচ্ছা ছিল তাই তখনকার সময়ে যারা সাক্সেসফুল ফ্রিলেন্সার ছিল আমি তাদেরকে সবসময় মেসেজ দিয়ে কিছু শিখার বা জানার চেষ্টা করতাম। তারা অনেক বিজি থাকত তাই রিপ্লাই দিতে দেরি হইত এইজন্য আমি মাঝে মধ্যে হতাশ হইতাম কিন্তু আমি মেসেজ দিতেই থাকতাম।।আশা ছেড়ে দিতাম নাহ। কারণ তাদের থেকে আমি কিছু না কিছু শিখতে বা জানতে পারব। এরপর ২০১৭ সালের লাস্ট এর দিকে আমার কিছু জমানো টাকা এবং ভাইয়া ও আপুরা মিলে আমায় ১ টা লেপ্টপ কিনে দিয়েছিল। এরপর ওখান থেকে আমার নিজের লেপ্টপে কাজ করা শুরু। এর ভিতরে আমি অনেকের এ ফ্রি তে কাজ করে দিতাম নিজের প্রেক্টিস এর জন্য। এর মাঝে আমার Creative IT এর কোর্স টা শেষ হয়।

কোর্স শেষ করেই কি মার্কেটপ্লেস এ কাজ শুরু করে দিয়েছিলেন?মার্কেটপ্লেসে কাজ শুরু করেন কখন?

কোর্স শেষ হলেও আমি মার্কেট প্লেস এ কাজ করি নাই কিন্তু লোকালি কাজ করেছি আমি কেন শুরু করি নাই কারণ আমি মনে করেছি আমার স্কিল আরো বাড়ানো প্রয়োজন। এরপর আমি গ্রাফিক্স এর পাশাপাশি wordpress এর ১ টা কোর্স করলাম। এরপর ২০১৮ এর ডিসেম্বর এর দিকে এসে আমি fiverr এ একাউন্ট খুলি। কোর্স চলাকালীন সময়ে আমি কিছু বিষয় শেয়ার করতে চাই যেহেতু আমার পড়াশোনা ছিল আমার কোর্স করার সময় টা ছিল এমন একটা সময় এটা শুরু হওয়ার কথা রাত ১১ টা হলেও শুরু হতে হতে রাত ১ টা বা ২ টা হয়ে যেত। অনেক সময় আমি ভোর ৪-৫ এমনকি ৬ পর্যন্ত ক্লাস করে ২ ঘন্টা ঘুমিয়ে ৮ টায় ভার্সিটির জন্য বাস ধরতাম। এরপর ৯-১০ টা থেকে আমাদের ক্লাস ছিল। ক্লাস করে আসতে আসতে অনেক সময় ৪-৫ টা বেজে যেত। এসে খাওয়া দাওয়া করে আমার চা খাওয়ার ১ টা অভ্যাস ছিল। চা খেয়ে আমি আবার প্রেক্টিস এ বসে যেতাম। এরপর ডিসেম্বর এ আমি fiverr মার্কেটপ্লেস এ একাউন্ট খুলি।

প্রথম কাজ পেতে কতদিন লেগেছিল?

ডিসেম্বর এর ২৫ তারিখ আমি প্রথম কাজ পাই $5 এর। এর ২-৩ দিন পরে আমি আমার ২য় কাজ পাই কিন্তু ওই কাজ টা আমি পারফেক্ট ভাবে করতে পারি নাই কারণ কাজটা আমি কোন একজন এর থেকে সাপোর্ট পাব মনে করে কাজ টা নিয়েছিলাম কারণ আমার সাথে ওই ধরনের ১ টা কমিটমেন্ট ছিল সাপোর্ট এর ব্যাপার এ। কিন্তু যার ওপর ভরসা করে আমি নিছি সে নিজেও কাজটা সলভ করতে পারে নাই। তাই আমি চিন্তায় পরে গেলাম কারণ 1 স্টার পাব। এটাই ছিল আমার জীবনের টার্নিং পয়েন্ট। কিন্তু আল্লাহর ১ টা রহমত ছিল আমার ওপর।। ওই ক্লাইন্ট টা অনেক ভাল ছিল। সে আমাকে বলছিল আমাকে কোন নেগেটিভ রিভিও দিবে নাহ আমাকে 5 স্টার দিবে। আমি ক্লাইন্টকে বলেছিলাম অর্ডার কেন্সেল করার জন্য কিন্তু সে কেন্সেল করে নাই। সে বলল তোমার প্রোফাইল এর ওপর এফেক্ট পড়বে। এইভাবেই ওই কাজটা কম্পলিট হয়। এই সিচুয়েসান টার পর আমি উপল্ধি করলাম যে নিজের প্রব্লেম নিজেকেই সলভ করতে হবে। এরপর আমি প্রায় ১৫-২০ দিন কোন কাজ পাই নাই। কিন্তু ধর্য্য ধরে ছিলাম। ঘুমাতাম নাহ। সারারাত জেগে থাকতাম অপেক্ষা করতাম।মার্কেটিং করতাম।সারাক্ষন fiverr এ এক্টিভ থাকাতাম। এরপর ২০ দিন পর আমি আমার ৩য় অর্ডার পাই।এরপর থেকে আল্লাহর রহমতে আমার আর ফিরে তাকাইতে হয় নাই। ডিসেম্বর মাস এ আমার ইনকাম ছিল $5 ই। এরপর পরের মাস এ আমার ইনকাম ছিল $20। এরপর আস্তে আস্তে বাড়তে বাড়তে এটা ভাল একটা এমাউন্ট এ গেছে। মাঝখানে আমি আবার প্রব্লেম এ পরেছিলাম। অর্ডার ও আস্তেছিল নাহ বা আসলেও কম। আমার টাকার দরকার ছিল। আমি আমার এক সিনিয়র ভাই নাম মইন উনাকে বললাম ভাই আমার ১ টা জব লাগবে টাকা দরকার। তখন উনি ১ টা কথা বলছিল আপনি অপেক্ষা করেন একটু কাজ পাবেন। এরপর আমি আরো ভাল করে রিসার্চ করলাম এবং নতুন কিছু সার্ভিস নিয়ে কাজ শুরু করলাম। এরপ্র থেকে আমার ইনকাম টা আসতে আসতে বাড়া শুরু করল ওইটা এমন ১ টা পর্যায়ে গেল যে আমি মাসে ৭০-৮০ হাজার টাকা ও ইনকাম করছি।

এখন মাসে কতটাকা আয় করছেন?পরিবারের প্রতিক্রিয়া কি? কি করছেন তাদের জন্য?

৭০-৮০ হাজার কন্টিনিউ ছিল এবং এখন ও মোটামুটি আছে।। আমি যদি বলতে চাই এখন এই করনাকালীন সময়েও আমি আমার ফ্যামিলি কে ফুল সাপোর্ট দিচ্ছি। এইদিক থেকে বলতে গেলে আমি একধরনের সফল কারণ স্টুডেন্ট থাকা অবস্থায় আমি আমার ফ্যামিলি কে সাপোর্ট দিচ্ছি। এটা আমার জন্য অনেক বড় ১ টা এচিভমেন্ট কারণ আমার লাইফে এখনো ১ টা কষ্ট আছে যে আমি আমার বাবার জন্য কিছু করতে পারি নাই। এটার কারণ ও আছে যে আমি তখন ক্লাস 5 এ পড়তাম যখন আমার বাবা মারা যায়। তখন আসলে আমার করার কিছু ছিল নাহ। তবে আমি খুশি যে আমি আমার মায়ের জন্য খরচ করতে পারতেছি। আমার মার যা যা দরকার সব আমি এখন দিতে পারতেছি আলহামদুলিল্লাহ। এই সুযোগটা আল্লাহ আমাকে করে দিয়েছে। আমার মা আমার জন্য অনেক কিছু করছে। আমার মা আর আমার ভাই আমার জন্য অনেক কিছু করছে। অনেক সেক্রিফাইস করছে। আমার মা আমাকে পড়াশুনা করার জন্য অনেক যুদ্ধ করছে ইভেন এখনো বলে আমাকে পড়াশুনা শেষ করতে হবে। আমি আমার মা কে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখি। নিজের জন্য কিছু খরচ না করে ওগুলা আমাদের জন্য দিত। এই জায়গায় আমি আমার ভাই এর কথা বলতে চাই। যে মানুষ টা শুধু সেক্রিফাইস ই করে গেছে। সবসময় নিজের জন্য খরচ না করে দামি জিনিষ টা সে আমাকেই কিনে দিত। আমার ভাই আমার আইডল। আমার ভাই এর কারনেই আমি স্বপ্ন গুলা দেখতে পারতেছি। আগে যখন উনি করতে দেয় নাই আমাকে কাজ গুলা এটার ১ টা ভাল দিক ছিল। যার ফলে আমি ১ টা পাব্লিক ভার্সিটি তে চান্স পাইছি এবং এখন কাজ ও করতেছি। এখানে আমার ভাই এর সাপোর্ট অনেক ছিল।

কি কি স্ট্রাগল করতে হয়েছে এতদূর আসতে?

আমার স্ট্রাগল এর কথা বলতে গেলে এমন ও দিন গেছে যে আমি কাজ করতে করতে না খেয়ে ঘুমাই গেসি। এছাড়া সারারাত কাজ করে ১-২ ঘন্টা ঘুমাই পরীক্ষার সময় পড়াশোনা করতাম। কাজের পাশাপাশি এসাইনমেন্ট, ক্লাস, ক্লাস টেস্ট সব কিছু মেন্টেইন করছি। আমার ১ টা অভ্যাস ছিল চা খাওয়ার। সারাদিন আমি ক্লাস করে ক্লান্ত থাকতাম বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ ছিল নাহ তাই কিছুক্ষণ পর পর চা খেতাম। কারণ আমার মাথা টা ঠিক রাখার জন্য চা খাওয়া টা দরকার ছিল।এই ব্যাপার টা নিয়ে আমার বন্ধুরা হাসাহাসি করত। আরেকটা জিনিস হচ্ছে আমি বন্ধু দের সাথে আড্ডা দেয়া কমাই দিয়েছিলাম। ক্লাস শেষে অপেক্ষা করতাম নাহ চলে আসতাম। ইভেন আমাকে টুর এ যেতে বললেও যেতাম নাহ। এই ধরনের হাসি ঠাট্টা এগুলু করত কিন্তু আমি পাত্তা দিতাম নাহ। আমার বন্ধুরা যখন আমি কাজ শিখতাম লেপ্টপ নিয়ে পড়ে থাকতাম তখন ওরা বলত কিরে তুই কি গান লোড এর দোকান দিবি? ইভেন ফাইজলামি করে কম্পিউটার মেকানিক ডাকতো। কিন্তু এগুলা শুনে আমি পাত্তা দি নাই আমি আমার কাজ করে গেছি। কিন্তু আমাকে যারা এসব কথা বলত তারাও এখন ইন্টারেস্টেড আমার কাজ গুলা শিখার জন্য। আমার এমন ১ টা সময় আসছে যে আমার আম্মুকে দেখাশুনা করা লাগতো দিন রাত কারণ আম্মু অসুস্থ ছিল পাশাপাশি আমার কাজ ও করা লাগতো যার ফলে ঘুমানোর সময় কম ছিল

আমার লাইফে ১ টা মানুষের দোয়া সবসময় ছিল সেটা হচ্ছে আমার মা। যার ফলে আমি এতদুর আসতে পারছি। আমার ১ টা অভ্যাস ছিল যেটা হল আমি কাজ পাইলে সবসময় মাইডে দিতাম। এটার ১ টা সুফল হচ্ছে এগুলা দেখে আমার ভার্সিটির অনেক ছোটভাই,বন্ধু,কাজিন,কলেজ এর ফ্রেন্ড অনেকে ইন্টারেস্টেড হয়েছে এবং অনেকে কাজ শুরু করে দিয়েছে। এবং আমি অনেককেই গাইডলাইন দিতাম কিভাবে কি করবে কোন জায়গায় গেলে কোন রিসোর্স পাবে। কিভাবে মার্কেট প্লেস এ একাউন্ট খুলবে। কিভাবে কাজ পাওয়া যায়। এরকম আমার অনেক বন্ধু এখন কাজ করতেছে। এবং এর মধ্যে মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা ইনকাম করে এরকম ও আছে। বন্ধুবান্ধব ছাড়াও অপরিচিতদের ও হেল্প করার ট্রাই করতাম। আমি চেষ্টা করতাম আমি যা জানি তা শেয়ার করার। আমার চেষ্টা ছিল সবাই কাজ করুক বিশেষ করে তাদের মা বাবার জন্য কিছু করুক। আমার আম্মু এত অসুস্থ থাকার পর ও আমাকে সবসময় ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করতে বলে আমার কেয়ার নেয় ইশারায় কথা বলে।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

প্রত্যেক টা ফ্রিলেন্সার এর ই ১ টা স্বপ্ন থাকে তেমন আমারো আছে আমার নিজের ১ টা আইটি ফার্ম থাকবে। আমি যদি আমার ফ্রিল্যান্সিং এর ব্যাপারে বলতে যাই এই জায়গায় আসার জন্য আমার অনেক স্ট্রাগল করা লাগছে সব ফ্রিল্যান্সার স্ট্রাগল বা কষ্ট করে তাদের গোলটা পূরন করে! আমার এচিভমেন্টটা খুব ছোট। আমার স্টুডেন্ট লাইফে যা করেছি তাতে আলহামদুলিল্লাহ আমি খুশি।। কারণ আমি আমার স্টুডেন্ট লাইফে আমার ফ্যামিলি কে ফুল সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছি। এটা আমার অনেক বড় এচিভমেন্ট।

আমার ভার্সিটির ছোট ভাই বন্ধু বা অন্যান্য যারা এই সেক্টরে আসতে চাচ্ছে তাদের উদ্দেশ্যে বলব তাদেরকে অনেক প্যাশনেট হতে হবে,ধৈর্য্য থাকতে হবে এবং স্কিল ডেভেলপ করতে হবে। কাজ না শিখে এই সেক্টরে আসার দরকার নেই। বর্তমানে আমি বেশি ফাইভার কাজ করছি এবং পাশাপাশি আপওয়ার্ক এ ও কাজ শুরু করেছি। তাছাড়া আমি লার্নিং আর্নিং ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টে ট্রেনার হিসেবে আছি !

RedLive

Related post