অনলাইন কেনাকাটায় ক্রেতা এবং বিক্রেতার সর্তকতা

 অনলাইন কেনাকাটায় ক্রেতা এবং বিক্রেতার সর্তকতা

Image Source: freepik.com

বেশ ক’বছর আগে অনলাইন সেবার সাথে অনেকেরই পরিচিতি ছিলনা। একটা সহজ মাধ্যম যেখানে শুধু একটা ক্লিক করবো আর মূহুর্তের মধ্যেই প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র চলে আসবে এমনটা মানুষ স্বপ্নে ভেবেছিল বলেই তা সম্ভব হয়েছে। ব্যস্ততা কিংবা অসুবিধার কারণে অনেকেই এখন অনলাইন অর্ডারের উপর নির্ভরশীল৷ কারন হাতের নাগালে খুব  সহজেই ক্রেতারা অনলাইন এর মাধ্যমে জিনিসপত্র সংগ্রহ করতে পারছে।এই অর্ডারের ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানাটা অত্যাবশ্যক বলে মনে করি।

শপিং এ কিছু নিয়ম মানুন

যে পেইজ বা অ্যাপের মাধ্যমে অর্ডার করবেন সেটা যে জিনিসই হোক খাবার, পোশাক, গহনা, ওষুধ, কোন জরুরি সেবা যেটাই হোক সর্বপ্রথম খোঁজ নিবেন-

  • সেটি কেমন জনপ্রিয়
  • কত জন ক্রেতা রয়েছে
  • সেটার ব্যাপারে ক্রেতা ছাড়াও ফলোয়ার কেমন

এই খবরগুলো অত্যন্ত জরুরি কারণ হুটহাট করে যে কোন ওয়েবে অর্ডার করলেন অথচ পরবর্তীতে দেখলেন সেটা ভুয়া ছিলো বা সেটার ব্যাপারে ক্রেতার ভরসা নেই তখন কিন্তু প্রতারকের পর্যায়ে আপনিই পরবেন।

Image Source: recode.net

একজন বিক্রেতা বা অ্যাপের নিয়ন্ত্রণদাতা হিসেবে আপনার দায়িত্ব আপনার পেইজ বা অ্যাপের রিভিউ, মন্তব্য, ফলোয়ার, ডাউনলোডকারীর সংখ্যা যেন বেশি হয় সেদিকে খেয়াল রাখা।  বিরুপ মন্তব্য, ফলোয়ার কম থাকলে ক্রেতা আপনার উপর ভরসা নাও করতে পারে। ক্রেতার সংখ্যা কম হলেও খেয়াল রাখবেন তারা যেন আপনার উপর কোন প্রকার অসন্তোষ প্রকাশ না করে। এই ব্যাপারগুলো একজন বিক্রেতার অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সুন্দর ভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার ক্ষেত্রে।

পণ্যের মান নিয়ে ভেবেছেন কি

পণ্যের মান গুনাগুন যেন সঠিক থাকে সেক্ষেত্রে খেয়াল করবেন। কারণ ক্রেতা চায় অল্প দামে বেশি গুণসম্পন্ন জিনিসপত্র।পণ্যটি ক্রেতার কাছে সহজলভ্য কিনা সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত। বেশি দামি জিনিস কেনা সবার পক্ষে সম্ভব নয়।

দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিক্রেতা খেয়াল করবেন যাতে মাত্রাতিরিক্ত দাম না চেয়ে বসেন। আজকাল আগে থেকেই অ্যাডভান্সড পেমেন্ট এর নিয়ম চালু হয়েছে, এটা যথাযথ রাখার চেষ্টা করবেন।

সুসম্পর্ক বজায় রাখা জরুরি

ক্রেতার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন ব্যবসায়ের সফলতা অর্জনের অন্যতম হাতিয়ার কারণ ক্রেতা ছাড়া কোন ব্যবসায় কল্পনা করা যায় না। ক্রেতাকে সুবিধা প্রদানের জন্য ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের সূচনা হয়। ক্রেতা ব্যবসায়ের মূল্যবান সম্পদ,  এতে সন্দেহ নেই। পাশাপাশি ক্রেতা সন্তুষ্টি ব্যবসায়ের জন্য আশীর্বাদ।

একজন ক্রেতাকে দেখে বহু ক্রেতা আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য কিনতে আগ্রহী হয়। একজন ক্রেতা শুধু একজন গ্রাহক নয়, বহু ক্রেতার সমাহার। তাই পণ্য হতে হবে গুণে ও মানে উন্নত। ক্রেতার সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন করতে হলে শুধু ব্যবসায়িক সম্পর্ক নয় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও গড়ে তুলতে পারেন। ক্রেতার সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আপনার ব্যবসায় লাভ বাড়াতে সাহায্য করবে।

ক্রেতার সাথে পুনরায় যোগাযোগ করার জন্য ফোন নম্বর ও মেইল এড্রেস সংরক্ষণ করতে পারেন। ফোন নম্বর ও মেইল এড্রেস রাখার জন্য একটি তালিকা প্রস্তুত করে রাখতে পারেন। এই তালিকায় ক্রেতার পছন্দসমূহ, আচরণ, পণ্যের আদেশপত্র মোটকথা যাবতীয় তথ্যসমূহ লিপিবদ্ধ করবেন। বিক্রেতার কাছে ক্রেতার তালিকা থাকলে প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোনো তথ্য যেকোনো সময় ক্রেতাকে পাঠানো সহজ হবে।

Image Source: freepik.com

জরিপ আনতে পারে সাফল্য

ক্রেতার সর্বোচ্চ পছন্দের পণ্য সম্পর্কে জানতে জরিপ, পোল অথবা প্রশ্নমালা পদ্ধতির ব্যবহারের মাধ্যমে খুব সহজেই ক্রেতার কাছ থেকে জানতে পারবেন কারা আপনার ব্যবসায়ের পণ্য পছন্দ করছে, কারা করছেন না এবং কিভাবে পণ্যের মান আরো উন্নতি করা যায় তা সম্পর্কে।

দায়িত্ব ব্যবসার মূল হাতিয়ার

পার্সেল হাতে আসার পর বিক্রেতাকে মেইল বা টেলিফোনে যত দ্রুত সম্ভব পণ্য আপনার নাগালে আসার ব্যাপারটি নিশ্চিত করবেন। যিনি পার্সেল করবেন তার কাছে সব তথ্যের তালিকা থাকার পরও এটা আপনার দায়িত্ব।  কোন কারণে বিক্রেতা ভুলেও যেতে পারেন ব্যস্ততার মাঝে।

ক্রেতা এবং বিক্রেতার জন্য কিছু কার্যাবলী

অর্ডারকৃত পণ্য ও প্রাপ্ত পণ্যের পার্থক্য যদি দেখা যায় তবে ধীরে সুস্থে উত্তেজনার বশে নয়, খেয়াল করবেন কেন এমনটা হলো! যদি ক্রেতা ইচ্ছাকৃত ভুল করেন তবে তা ভোক্তা অধিকার আইনে মামলা করুন। বিক্রেতা ক্ষমাপ্রার্থী হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

কিছু সময় দেখা যায় ক্রেতা বার বার অর্ডার ক্যান্সেল করেন। এইসব করা থেকে দূরে থাকুন এতে করে দুপক্ষেরই ক্ষতি। আপনি বাজে ব্যক্তিতের একজন ও পরবর্তীতে অর্ডারের সময় বিশেষ সুবিধাসমূহ নাও পেতে পারেন।

পার্সেল হাতে পাওয়ার পরেও কিছু ব্যক্তি অর্ডার অস্বীকার করেন তার কোন সমস্যার কারণে হয়তো সেটা পছন্দ হয়নি বলে বা প্রয়োজনীয় টাকা না থাকার কারণে। অর্থগত সমস্যায় তাকে সময় দিন মেটানোর, খামখেয়ালিপনায় তাকে শাস্তির ব্যবস্থা করবেন, তবে সেটা কোন গুরুতর নয়।

সর্বোপরি আপনাকে একজন ধৈর্যশীল, কৌশলসম্পন্ন, যে কোন পরিস্থতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা থাকা আবশ্যক। ক্রেতার দুর্ব্যবহারেও আপনাকে ঠান্ডা বুদ্ধিতে আপনার ব্যবসা চালিয়ে যাওয়া আপনাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

লেখকঃ সামিহা আতিকা

RedLive

Related post