আপনার ওয়েবসাইটকে এসইও করে কীভাবে র‍্যাংকিং করবেন

 আপনার ওয়েবসাইটকে এসইও করে কীভাবে র‍্যাংকিং করবেন

Image Source : Pixabay

এইচটিএমএল ল্যাঙ্গুয়েজের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সাথে সাথে বেড়ে চলেছে দৈনন্দিন জীবনে ওয়েবসাইট ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা। কেননা ব্যবসার প্রসার কিংবা পার্সোনাল ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য ওয়েবসাইটের মতো কার্যকর প্ল্যাটফর্ম খুব কমই আছে! তাছাড়া আপনি যে প্রফেশনের সাথেই যুক্ত থাকুন না কেন, নিজের একটি প্রফেশনাল ওয়েবসাইট থাকলে ক্যারিয়ার জীবনে অনেকখানি এগিয়ে থাকতে পারবেন। 

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ক্যারিয়ারে সফলতা অর্জনের লক্ষ্যে ওয়েবসাইট তৈরি করার সাথে সাথেই কি আপনার দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়? উত্তর হচ্ছে, না। আসলে ওয়েবসাইট তৈরির মূল উদ্দেশ্যই হলো ট্রাফিক বা ভিজিটরের সংখ্যার সর্বোচ্চ পরিমাণ বৃদ্ধি। কারণ আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর যত বেশি বাড়বে, নিজের কাজের প্রচারে আপনি এগিয়ে থাকবেন তত বেশি! এবং এখানে লক্ষ্য করার মতো বিষয় হচ্ছে; গুগল র‍্যাংকিংয়ে আপনার ওয়েবসাইটের পজিশন যদি ভালো না হয়, তাহলে নিজের ওয়েবসাইটের জন্য আশানুরূপ ট্রাফিক বা ভিজিটর পেতে ব্যর্থ হবেন আপনি। তাহলে উপায়?

উপায় একটাই! নিজের ওয়েবসাইটকে এসইও করে ঠিকঠাক র‍্যাংকিং করা শিখতে হবে আপনাকে। এক্ষেত্রে শুধু মেটা ট্যাগের যৌক্তিক সব ব্যবহার জানলেই চলবে না! পাশাপাশি মাথায় রাখতে হবে আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর ওয়েবসাইটকে এসইও করে র‍্যাংকিং করার ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত, এখন সে ব্যাপারেই জানব আমরা!

কন্টেন্ট হতে হবে প্রাসঙ্গিক

গুগল, ইয়াহু বা বিংয়ের মতো জনপ্রিয় সব সার্চ ইঞ্জিন আমরা ব্যবহার করি কেন? আমাদের যখন কোনো বিষয়ের উপর তথ্যের প্রয়োজন হয়, তখনই এইসব সার্চ ইঞ্জিনের শরণাপন্ন হই আমরা। আর আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিংক নিয়ে তালিকাভুক্ত একটি ফল প্রদর্শিত করাই হলো সার্চ ইঞ্জিনের মূল কাজ। এক্ষেত্রে খেয়াল করলে দেখা যাবে, তালিকার উপরের দিকের ওয়েবসাইটগুলোর কনটেন্ট আমাদের আশানুরূপ তথ্যের সাথে বেশি প্রাসঙ্গিক এবং সমৃদ্ধ হয়। অর্থাৎ এসইও করে নিজের ওয়েবসাইটকে গুগল র‍্যাংকিংয়ে ভালো পজিশনে আনতে চাইলে, কনটেন্টের প্রাসঙ্গিকতার উপরেও জোর দিতে হবে আপনাকে। এইচটিএমএল ল্যাঙ্গুয়েজের প্রয়োগ ঘটিয়ে কনটেন্টে মেটা ট্যাগের ব্যবহার তো করবেনই আপনি! কিন্তু একইসাথে মাথায় রাখতে হবে যে, সেই কনটেন্ট যেন তার প্রাসঙ্গিকতা না হারায়। 

Image Source : StockVault

কি-ওয়ার্ড নির্বাচনে হতে হবে কৌশলী

গুগল র‍্যাংকিংয়ে আপনার ওয়েবসাইট যেন ভালো একটা পজিশন পেতে পারে, সেজন্য আপনাকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে হবেন উদ্যোগী? কনটেন্টের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখার মাধ্যমে, তাই না? এখন কনটেন্টের প্রাসঙ্গিকতা বজায় রাখার জন্য কি-ওয়ার্ড নির্বাচনের ক্ষেত্রে আপনাকে হতে হবে কৌশলী। ট্রাফিক বা ভিজিটররা কোন ধরণের কি-ওয়ার্ড সমৃদ্ধ কনটেন্ট পেতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন – সে ব্যাপারে যথেষ্ট পরিমাণ ধারণা থাকতে হবে আপনার। 

তারপর ভিজিটরদের পছন্দের কি-ওয়ার্ডগুলো থেকে আপনাকে নিজের ওয়েবসাইটের কনটেন্ট তৈরির জন্য কি-ওয়ার্ড বাছাই করতে হবে। অবশেষে নিজের ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোতে বাছাইকৃত কি-ওয়ার্ডগুলোর ঠিকঠাক ব্যবহারও নিশ্চিত করতে হবে আপনাকেই! আর এভাবেই কি-ওয়ার্ড নির্বাচনে কৌশলী হতে পারলে, প্রাসঙ্গিকতা বাড়বে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্টের। আর তারপর আপনি যখন কনটেন্ট তৈরির সময় এইচটিএমএল ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে মেটা ট্যাগের প্রয়োগ করতে শুরু করবেন, সেক্ষেত্রেও বৈচিত্র্য আসতে শুরু করবে তখন। ফলে, এসইও করে নিজের ওয়েবসাইটকে ঠিকঠাক র‍্যাংকিং করার কাজে আরেক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবেন আপনি! 

মেটা ট্যাগের প্রয়োগ হতে হবে যথাযথ 

এইচটিএমএল ল্যাঙ্গুয়েজের সাহায্যে ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন ধরণের মেটা ট্যাগের প্রয়োগ ঘটাই। আর এসইও করে ওয়েবসাইটকে ঠিকঠাক র‍্যাংকিং করার কাজে এই মেটা ট্যাগের রয়েছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। কেননা মেটা ট্যাগ আপনার ওয়েবসাইটের ‘CTR’ বা ‘Click Through Rate’ বাড়াতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়! মেটা ট্যাগের ঠিকঠাক ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইটকে গুগল র‍্যাংকিংয়ে ভালো একটি পজিশন এনে দিতেও খুবই কার্যকর! তাহলে ওয়েবসাইট তৈরির ক্ষেত্রে আমাদের কি বেশি বেশি মেটা ট্যাগের ব্যবহার নিশ্চিত করা উচিত? না! অতিরিক্ত কোনো কিছুই তো ভালো নয়। আর তাই মেটা ট্যাগেরও প্রয়োজনের অতিরিক্ত প্রয়োগ করব না আমরা। এবং আমরা যেটা করতে পারি, সেটা হলো – মেটা ট্যাগের যথাযথ প্রয়োগ! 

Image Source : Pixabay

ওয়েবসাইট হতে হবে লিংক নির্ভর 

সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্যের খোঁজে আমরা যখন সার্চ ইঞ্জিনদের শরণাপন্ন হই, তখন সেই তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিংক সমূহ একত্রিত করে আমাদের চোখের সামনে একটি তালিকাবদ্ধ ফল উপস্থাপন করে ওইসব সার্চ ইঞ্জিন। এক্ষেত্রে মূলত তালিকার প্রথমদিকের ওয়েবসাইটগুলোর লিংকে ক্লিক করলেই নিজেদের প্রয়োজনীয় তথ্যটুকু পেয়ে যাই আমরা। কেননা এসইও করে যেসব ওয়েবসাইট গুগল র‍্যাংকিংয়ের শীর্ষের দিকে জায়গা করে নিয়েছে, সেইসব ওয়েবসাইট অতি অবশ্যই তথ্যবহুল হয়। আর বিভিন্ন ধরণের রেফারেন্স দিয়ে অসংখ্য লিংক যুক্ত করা থাকে বলেই তথ্যবহুল ওয়েবসাইটে পরিণত হতে পারে সেগুলো। কাজেই ওয়েবসাইটে শুধু এইচটিএমএল ল্যাঙ্গুয়েজের ব্যবহার করে মেটা ট্যাগের প্রয়োগ ঘটালেই চলবে না! নিজের ওয়েবসাইটকে লিংক নির্ভর করাও শিখতে হবে! 

Image Source : Pixabay

নিয়মিত আপডেট করতে হবে ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট 

যুগ যখন পরিবর্তিত হয়, তখন যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলাই সময়ের নিয়ম। কারণ আপডেটেড পৃথিবীতে ব্যাকডেটেড হয়ে টিকে থাকতে পারবেন না আপনি! একই নিয়ম প্রযোজ্য আপনার ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রেও! ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোতে নতুনত্ব আনতে না পারলে, ট্রাফিক বা ভিজিটররা সেগুলোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন ধীরে ধীরে। গুগল র‍্যাংকিংয়ে আপনার ওয়েবসাইটের পজিশনও তখন পিছিয়ে আসতে শুরু করবে। এজন্যই নিজের ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোকে কিছু দিন পরপরই আপডেট করতে হবে আপনাকে। কেননা ওয়েবসাইটের কনটেন্ট আপডেট করবেন যত বেশি, গুগল র‍্যাংকিংয়ে আপনার ওয়েবসাইটের পজিশন এগিয়ে থাকবে তত বেশি! 

পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং বা ব্যবসার প্রসারের জন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমরা ওয়েবসাইটকে বেছে নিচ্ছি আজকাল। এরই লক্ষ্যে, এইচটিএমএল ল্যাঙ্গুয়েজের টুকটাক ব্যবহার জানা থাকায় মেটা ট্যাগের প্রয়োগ ঘটিয়ে এসইও করার মাধ্যমে গুগল র‍্যাংকিংয়ে নিজেদের ওয়েবসাইটের পজিশন এগিয়ে রাখার কাজেও হচ্ছি যথেষ্ট সচেতন! কিন্তু শুধু মেটা ট্যাগের বেশি বেশি ব্যবহার করলেই র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে থাকবে না আপনার ওয়েবসাইট। কাজেই নিজের ওয়েবসাইটকে এসইও করে ঠিকঠাক র‍্যাংকিংয়ের জন্য আপনাকে মাথায় রাখতে হবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়!

লিখেছেন : নবনীতা প্রামানিক 

RedLive

Related post