এসইও করে র‍্যাংকিং করুন আপনার ওয়েবসাইট – ২য় পর্ব

 এসইও করে র‍্যাংকিং করুন আপনার ওয়েবসাইট – ২য় পর্ব

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বা এসইও হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিনের একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে সার্চ ইঞ্জিনটি একটি ওয়েবসাইটকে শীর্ষে নিয়ে আসে, অর্থাৎ ‘র‍্যাংক’ করে থাকে। একটি ওয়েবসাইটকে তখনই সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্টের শুরুর দিকে নিয়ে আসবে যখন সে ওয়েবসাইটটিকে সে গুরুত্বপূর্ণ মনে করবে।

ধরা যাক আপনি গুগলে ‘নতুন উদ্যোক্তাদের জন্য করণীয়’ লিখে সার্চ করলেন। এরপর সার্চ রেজাল্টে গুগল আপনাকে কিছু ফলাফল দেখালো। সেখানে আপনি দেখলেন সার্চ রেজাল্টের প্রথম দিকে Red Live এর ফলাফলটি প্রদর্শিত হচ্ছে।

অর্থাৎ Red Live ওয়েবসাইটের এই কন্টেন্টটি যথাযথভাবে এসইও করায় সেটি গুগল র‍্যাংকিং করেছে। এইচটিএমএল (HTML), কীওয়ার্ড, ট্যাগ, মেটা ট্যাগ ইত্যাদি সম্পর্কে জ্ঞান রাখলে এসইও হবে আরো কার্যকর।

ওয়েবসাইটকে এসইও এর মাধ্যমে র‍্যাংকিং করার উপায়সমূহ নিয়ে আজ রইলো এর দ্বিতীয় পর্ব।

❏ বিভিন্ন ধরণের এসইওঃ

✓ টাকার মাধ্যমে করা এসইও এর ভিত্তিতে এসইও দুই প্রকার। যথাঃ- অরগ্যানিক এসইও (Organic SEO) এবং পেইড এসইও (Paid SEO)।

অরগ্যানিক এসইওঃ

যে সকল এসইও কোনো প্রকার টাকাপয়সা ছাড়াই, অর্থাৎ বিনামূল্যে করা হয় সেগুলোকে অরগ্যানিক এসইও বলে। এই ধরণের এসইও অ্যালগরিদমিক এসইও নামেও পরিচিত।

পেইড এসইওঃ

টাকার বিনিময়ে প্রচার বা বিজ্ঞাপন হিসেবে এসইও করাকে পেইড এসইও বলে।

✓ এছাড়াও নিয়ম মানার দিক থেকে এসইও তিন প্রকার। যথাঃ- হোয়াইট হ্যাট, ব্ল্যাক হ্যাট ও গ্রে হ্যাট এসইও।

হোয়াইট হ্যাট এসইওঃ সার্চ ইঞ্জিনের সব নিয়মকানুনসমূহ মেনে চলে বৈধভাবে ওয়েবসাইটকে সার্চ রেজাল্টের প্রথমে নিয়ে আসার চেষ্টা করা-ই হলো হোয়াইট হ্যাট এসইও। সৎভাবে নিয়মানুযায়ী এই এসইওর চর্চা করা-ই কর্তব্য।

ব্ল্যাক হ্যাট এসইওঃ

প্রতারণা, অবৈধ উপায় অবলম্বন অথবা স্প্যামিং এর মাধ্যমে এসইও-ই হলো ব্ল্যাক হ্যাট এসইও। ওয়েবসাইটকে গুগল র‍্যাংকিং করতে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও করার চেষ্টা করলে ওয়েবসাইট ব্ল্যাক লিস্টেড হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। কখনো কখনো ওয়েবসাইট চিরতরে ব্লক হয়ে যায় এবং পরে কখনোই সার্চ রেজাল্টে পাওয়া যায় না।

গ্রে হ্যাট এসইওঃ হোয়াইট হ্যাট ও ব্ল্যাক হ্যাট এসইওর মাঝামাঝি, অর্থাৎ পুরোপুরি সৎ-ও নয় আবার অসৎ-ও নয়, এমন উপায় অবলম্বন করে এসইও করাকে বলা হয় গ্রে হ্যাট এসইও।

ওয়েবসাইটকে র‍্যাংকিংয়ে আনতে যা যা করতে পারেনঃ

একটি ওয়েবসাইটকে র‍্যাংকিংয়ে ওপরের দিকে আনতে অনেকগুলো পন্থা অবলম্বন করা যায়। সেগুলো হলো—

মানসম্পন্ন লিখাঃ

আপনার ওয়েবসাইটের লিখা মানুষ কখন পড়বে? যখন আপনি মানসম্পন্ন এবং সময়োপযোগী লিখা লিখবেন। যখন এতে লেখক আনন্দ খুঁজে পাবে, প্রয়োজনীয় তথ্য ও তত্ত্ব জানতে পারবে কেবলমাত্র তখনই মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে ঢুকবে, আপনার লিখা পড়বে এবং আপনার পণ্য বা সেবাটি সম্পর্কে জানবে।

মিথ্যা তথ্য পরিহারঃ

লিখায় বানোয়াট বা অসত্য তথ্য না দিলে ওয়েবসাইটকে ব্যবহারকারীগণ বিশ্বাস করতে শুরু করবে। অন্যদিকে অপ্রয়োজনীয় বা অপ্রীতিকর তথ্য প্রদান আপনার ওয়েবসাইটের ব্যবহারকারীর সংখ্যা কমিয়ে দেবে।

কীওয়ার্ড রিসার্চ ও কীওয়ার্ডকে লিখায় সন্নিবেশকরণঃ

লিখায় যথাযথ কীওয়ার্ডের ব্যবহার করার জন্যে লিখার আগে ও মাঝামাঝি সময়ে কীওয়ার্ড রিসার্চ করা খুবই প্রয়োজন। বহুল ব্যবহৃত ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ কীওয়ার্ডসমূহ খুঁজে বের করে এবং লিখায় সেগুলোর যথাযথ ব্যবহারে সার্চ ইঞ্জিনে আপনার লিখা হয়ে উঠবে আরো সুপ্রাপ্য। এতে ওয়েবসাইটে ব্যবহারকারী যেমন লিখা পড়বে তেমনি অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনসহ গুগল র‍্যাংকিংও বাড়বে।

আকর্ষণীয় শিরোনামের ব্যবহারঃ

অল্প কথায় প্রাসঙ্গিক কিন্তু আকর্ষণীয় এমন শিরোনামের ব্যবহার আপনার ওয়েবসাইট ও এর কন্টেন্টের প্রতি ব্যবহারকারীকে আকৃষ্ট করবে। ৬০ অক্ষরের মধ্যে উচ্চমানের কীওয়ার্ডসমৃদ্ধ শিরোনাম ব্যবহার করা উচিত।

ছবি, ভিডিও অথবা লিংক সংযোজনঃ

ওয়েবসাইটের লিখার সাথে প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ ছবি, ভিডিও অথবা অডিও সংযুক্ত করলে ব্যবহারকারীর কাছে এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়ে। এছাড়া সামঞ্জস্যপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় লিংকও ব্যবহার করা যেতে পারে।

যথাযথভাবে ডেসক্রিপশন ব্যবহারঃ

লিখায় আলোচিত বিষয়ের সারাংশসমূহ ১৬০ অক্ষরের মধ্যে ডেসক্রিপশন মেটা ট্যাগ হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। এতে ব্যবহারকারী লিখা সম্পর্কে এক নজরে ধারণা পেতে পারে।

বৈধ উপায় অবলম্বণঃ

ক্লোকিং, কীওয়ার্ড স্টাফিং বা ডোরওয়ে পেইজের মতো ক্ষতিকর এসইও পদ্ধতি অবলম্বণ না করে বৈধ উপায়ে শর্তাবলী মেনে এসইও এর কাজ করলে একটি ওয়েবসাইট অবশ্যই ধীরে ধীরে উচ্চ র‍্যাংকিংয়ে চলে আসবে।

উপরোল্লিখিত উপায়সমূহ ছাড়াও অন পেজ ও অফ পেজ লিংক তৈরি, যথাযথভাবে এইচটিএমএল (HTML) ও ক্যানোনিক্যাল ইউআরএল ট্যাগ ব্যবহার, সঠিক উপায়ে মেটা ট্যাগ ব্যবহার, যথাযথভাবে ডাটা বিশ্লেষণ করা, সঠিকভাবে ইমেজ অপটিমাইজেশন করা ইত্যাদি উপায়েও ওয়েবসাইটকে র‍্যাংকিংয়ে আনবার কাজটি করা যেতে পারে। পরিশেষে বলা যায় যে এসইও এর মাধ্যমে ওয়েবসাইটকে র‍্যাংকিং করতে আলোচিত বিষয়গুলো জানা আবশ্যক। মেটা ডেসক্রিপশন ও মেটা কীওয়ার্ডের মত ভালো এইচটিএমএল (HTML) ট্যাগ ব্যবহার করা উচিত। বৈধ উপায়ে, সকল নিয়ম মেনে, যথাযথ মেটা ট্যাগের ব্যবহারের মাধ্যমে এসইও সম্পন্ন করলে ওয়েবসাইট উচ্চ গুগল র‍্যাংকিং পাবে- এইটুকু আশা আপনি করতেই পারেন।

লিখেছেনঃ শাহনেওয়াজ আহমদ

RedLive

Related post