একজন সফল নারী উদ্যোক্তা অধরার গল্প

 একজন সফল নারী উদ্যোক্তা অধরার গল্প

বর্তমানে আমাদের সমাজের নারীরা নিজ পরিশ্রমে, যোগ্যতায় পুরুষদের পাশাপাশি সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত ঘরে কিংবা বাইরে। সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন উদ্যোক্তা। অনলাইন ব্যবসায়ের প্রবর্তনের ফলে নারীরা আরও বেশি পরিমাণে সফল উদ্যোক্তায় পরিণত হচ্ছে। তেমনি একজন আফরোজা আলম অধরা।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মিরপুরের প্রতিনিধি জান্নাতুল ফেরদৌস।

°আপনার সম্পর্কে জানতে চাই। 

আসসালামু আলাইকুম, আমি আফরোজা আলম অধরা। পাবনার ছোট্ট একটি গ্রামে আমার বেড়ে ওঠা। বাবা মায়ের চার সন্তানের মধ্যে আমি তৃতীয়। আমি ২০০৪ সালে এস.এস.সি কমপ্লিট করি। তারপর পাবনা সিটি কলেজ থেকে ২০০৬ সালে এইচ.এস. সি কমপ্লিট করি। বিয়ের পর পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে অর্নাস কমপ্লিট করি। 

°নিজে কিছু করার উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা কেমন করে পেলেন?

ছোট বেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি আমি হাতের কাজের প্রতি আগ্রহ ছিল। তখন থেকেই ভেবেছিলাম আমার শখকে পেশা বানাবো। নিজের একটি আলাদা পরিচয় গড়ে তুলবো। সব সময় মনে হতো নিজে কিছু করবো। আজ সেই লালিত স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে নিজেকে তৈরি করে চলেছি অবিরত।

 °কি নিয়ে কাজ করছেন/আপনার প্রতিষ্ঠান থেকে কি ধরনের সার্ভিস দেওয়া হয়ে থাকে?

আমি কাজ করছি বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, থ্রিপিস,বেডশিট ও হিজাব নিয়ে। ইচ্ছা আছে সামনে জুয়েলারী নিয়ে কাজ করার। আমি মূলত অনলাইন ও অফলাইনের মাধ্যমে কাজ করছি। তবে অনলাইন সার্ভিসই বেশি দিয়ে থাকি।সারাদেশে কুরিয়ারের মাধ্যমে আমি হোম ডেলিভারি দিয়ে থাকি।

°শুরুটা কেমন ছিল? মূলধন কেমন ছিল? 

২০২০ সালে যখন পুরো বিশ্ব করোনা মহামারি আকার ধারণ করেছে। মেয়েদের স্কুল বন্ধ থাকায় ঘরে বসে ছিলাম তখনই আমার মনে হলো কিছু একটা করা দরকার। আমার নিজের জমানো কিছু টাকা নিয়ে আমার নিজ উদ্যোগে শুরু করে ফেললাম।

 ° একজন উদ্যোক্তা হতে কি কি প্রয়োজন?

একজন উদ্যোক্তা হতে হলে অনেক বেশি ধৈর্য্য, ইচ্ছা শক্তি, ও মনোবল থাকতে হবে। আর বর্তমানে বেশিভাগ উদ্যোক্তাই যেহেতু কাজ করছে অনলাইন ভিত্তিক। তাই ই-কমার্স  সম্পর্কে মৌলিক জ্ঞান বা ধারণা থাকা দরকার। 

°বর্তমানে কতজন কর্মী রয়েছে আপনার প্রতিষ্ঠানে?

বর্তমানে আমার প্রতিষ্ঠানে কোনো কর্মী নেই। আমি নিজেই সব কাজ করি । পাশাপাশি আমার স্বামী সহায়তা করছে

°আপনার প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কিছু বলুন?

আমার প্রতিষ্ঠানের নাম মডার্ন ফ্যাশন। আমি মূলত কাজ করছি বিভিন্ন ধরনের শাড়ি থ্রিপিস,বেডশিট, হিজাব নিয়ে। আমি বলতে চাই আমি আমার প্রতিষ্ঠান থেকে সব সময় ভালো মানের কোয়ালিটি ফুল পণ্য কাস্টমারকে দিয়ে আসছি। সব সময় সততার সাথে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। 

°আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট নারী উদ্যোক্তাদের জন্য কতোটা উপযোগী?

বর্তমান প্রেক্ষাপটে নারীদের জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ উদ্যোক্তা হওয়া। এখন নারীরা ঘরে বসে নিজের উদ্যোগে সৎ ভাবে নিজেকে সাবলম্বী করে তুলছে। নারীরা চাইলে নিজের সংসার সন্তান  সামলিয়ে  সমাজে নিজেকে  প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। কথায় আছে, পরিশ্রম সফলতার  চাবিকাঠি। পরিশ্রম করলে সফলতা আসবেই।

 °কেমন ছিল প্রতিবন্ধকতার অভিজ্ঞতা? 

আলহামদুলিল্লাহ! এখনো পর্যন্ত তেমন কোন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়নি। সব সময় পরিবারের সাপোর্ট পেয়েছি

°আপনার বিজনেসের সেল নিয়ে জানতে চাই।

আলহামদুলিল্লাহ! আমার ১ বছরের উদ্যোক্তা জীবনে খুব ভালো সাড়া পেয়েছি। আর আমার প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিয়ে কাস্টমার অনেক খুশি। তার জন্য বারবার রিপিট কাস্টমার পেয়েছি।

°সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা পেয়েছেন কিনা?

এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি ও বেসরকারি ভাবে কোনো সহযোগিতা পাইনি।

°এই পর্যন্ত আপনার প্রতিষ্ঠানের বিশেষ কোন অর্জন ছিল?

আমার এক বছরের উদ্যোক্তা জীবনের প্রথম প্রাপ্তি মাননীয় বানিজ্য মন্ত্রী টিপু মুন্সি হাত থেকে লাখপতি সম্মাননা নেওয়া

° আপনার প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা  কি?

আমার প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে আমার পরিকল্পনা হলো আমার বিজনেসটা যেহেতু অনলাইন ভিত্তিক। তাই আমি আমার একটা নিজস্ব শোরুম করতে চাই।যেখানে কমপক্ষে দুইজন হলেও আমি অসহায় নারীদের কাজের ব্যবস্থা করে দিতে পারি। আমি আমার উদ্যোগকে একটা ব্যান্ড হিসেবে তৈরি করতে চাই।

 

Brinty Saha

Related post