কাজ দিয়েই সমালোচনার জবাব দিতে চান উদ্যোক্তা মাহবুবা মঈন।

 কাজ দিয়েই সমালোচনার জবাব দিতে চান উদ্যোক্তা মাহবুবা মঈন।

আজও এই সমাজের অনেকেই নারীদের উদ্যোক্তা হয়ে ওঠাকে ভালো চোখে দেখেন না।প্রতিনিয়ত শুনতে হয় হাজারো সমালোচনা। কিন্তু সবকিছু অতিক্রম করে নারীরা এগিয়ে চলেছেন নিজের ছন্দে,দূর্বার গতিতে। তেমনই একজন রয়েছেন আমাদের আজকের আয়োজনে। উদ্যোক্তা মাহবুবা মঈন তার Tawshia Fashion কে নিয়ে এগিয়ে চলেছেন তার স্বপ্নের দিকে।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন সায়েমা বেগম

প্রথমে আপনার সম্পর্কে জানতে চাই।

আমি মাহবুবা মঈন।আমি চট্টগ্রাম জেলার সন্দ্বীপ উপজেলার মেয়ে। জন্মেছি সন্দ্বীপে। আমি একাউন্টিং এ মাস্টার্স করেছি মিরপুর বাংলা কলেজ থেকে।

উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার পথচলা শুরু কিভাবে?

আমি যখন মাস্টার্স করছি তখন ২৮০০০ টাকা দিয়ে ড্রেস কিনে বাসা থেকে বিক্রি শুরু করি। কিন্তু কিছুদিন পরে ১৫০০০ টাকার কাপড় বদলানোর জন্য ঢাকায় পাঠায়। ঐ দোকানও বদলে দেয়। কিন্তু যার মারফত কুরিয়ার করা হয় সে পাঠায় নি। কুরিয়ার অফিসে খবর নিলাম তাদের কাছে সেদিনের কোন প্রডাক্ট নেই। এখানে লস হলো। তারপরও থেমে যাই নি। মনকে বুঝিয়েছি,আমার থামলে চলবে না। আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে এবং কারো উপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। ১৩০০০ টাকার পণ্য নিয়ে প্রচারণা শুরু করি। কিন্তু এবার এলো কাছের মানুষজনের নিন্দা। হাসব্যান্ড বিসিএস ক্যাডার আর তুমি এতো পড়াশোনা জানা মেয়ে। তুমি কাপড় বিক্রি করো এতে তোমার হাসব্যান্ডের সুনাম নষ্ট হবে আরো কতো কি। তখন চিন্তা করলাম আমার এই উদ্যোক্তা জীবনটাকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। তাই কোন জায়গা থেকে পণ্য কিনলে কম দামে ভালো মানের পাওয়া যাবে সেটাই খুঁজতে শুরু করলাম। সাথে কিভাবে কম দামে বেশি বিক্রি করতে পারি সেই কাজ। কঠোর পরিশ্রম এবং সাধনা আজকের এই পথ চলাকে আরও সহজ করে দিয়েছে।

আপনার উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার পেছনের কারন কি?

আমার হাসবেন্ড একজন বিসিএস কৃষি অফিসার। তার চাকরির সুবাদে বদলি হতে হবে। আমার খুব ইচ্ছা ছিলো ব্যাংকে চাকরি করার। কিন্তু আমার একটা মেয়ে। তাকে একা রেখে চাকরি করা সম্ভব হবে না। আর ছোট বেলা থেকে হাতের কাজের প্রতি খুব নেশা ছিলো। সব কিছু ভেবেই সিদ্ধান্ত নিলাম বেকার থাকবো না। নিজে কিছু করবো সাথে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করে দিবো।

আপনি কি ধরনের পণ্য নিয়ে কাজ করছেন?

ব্লক প্রিন্ট, বাটিক,স্ক্রিন প্রিন্ট নিয়ে আমার কাজ। কিন্তু সময়ানুযায়ী তাঁত নিয়ে কাজ করি। সম্পূর্ণ নিজস্ব কারখানায় নিজস্ব কর্মী দিয়ে আমার কার্যক্রম গুলা পরিচালিত হয়।

একজন নারী উদ্যোক্তার কি কি বাধার সম্মুখীন হতে হয় এবং তা কিভাবে সমাধান করা যায়?

সর্বপ্রথম পরিবার থেকে। এরপর আত্মীয়স্বজন,প্রতিবেশী। আমি মনে করি যে কোন কাজ যখন আন্তরিকতা নিয়ে করবেন এবং নিজের আত্মবিশ্বাস থাকবে,শত বাধা আসলেও পিছু হটা চলবে না। কিছু লোকের কাজ সমালোচনা করা আর আপনি আপনার কাজ দিয়ে সে সমালোচনার উত্তর দিতে পারবেন। একদিন ওনারাই আপনার কাজের জন্য বাহবা দিবেন।

আপনার উদ্যোগ নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?

আমার কাজ গুলো দেশীয় পন্য নিয়ে। আমি স্বপ্ন দেখি একদিন আমার পণ্য দেশে গন্ডি পেরিয়ে বিদেশের মাটিতে রাজত্ব করবে। তাই কাপড়ের পরিমাণ নয় কাপড়ের মান নিয়ে কাজ করছি।

Kazi Naima Ferdousi

Related post