‘প্রচেষ্টা দিয়ে সকল বাঁধা দূর করা সম্ভব’ ।প্রমাণ করে দিলেন উদ্যোক্তা পারভীন সরকার।

 ‘প্রচেষ্টা দিয়ে সকল বাঁধা দূর করা সম্ভব’ ।প্রমাণ করে দিলেন উদ্যোক্তা পারভীন সরকার।

বর্তমানে ই-কমার্স বা অনলাইন ব্যবসা সম্প্রসারণ এবং নতুন উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে আমাদের দেশের সরকার। পুরুষদের পাশাপাশি অসংখ্য নারীরাও বর্তমানে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এবং বেশ সফলতার সাথেই ই-কমার্স অর্থাৎ অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করছেন। আজকে আমরা তেমনি একজন সফল উদ্যোক্তা পারভীন সরকার এর সাথে কথা বলবো।সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মিরপুরের প্রতিনিধি জান্নাতুল ফেরদৌস

প্রথমে আপনার সম্পর্কে জানতে চাই।

আমি পারভীন সরকার। গ্রামের বাড়ি কুড়িগ্রাম।স্বামীর চাকুরী সূত্রে ঢাকায় বসবাস। ছোটবেলায় স্বপ্ন দেখতাম লেখাপড়া শিখে বড় হয়ে ভাল কোন চাকুরী করব।ভাগ্যের কি পরিহাস এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েই বাবা মায়ের ইচ্ছেতে বিয়ের পিড়িতে বসতে হয়।কিছু দিনের মধ্যেই আমার প্রথম সন্তান অনেক ঘাত-প্রতি ঘাতের মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে আসে আমার কোল আলো করে। আল্লাহর কি ইচ্ছা পরের বছরই আবার দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম হয়। ওরা মাত্র ১৬ মাসের ছোটো-বড়।সন্তানদের দেখা শোনা আর সংসার সামলিয়ে নিজের কথা ভাবার সময় হয় নি। এর মাঝেও আমি ছোট ছোট দুইটা বেবি নিয়ে বি.এ পরীক্ষা দেই। কিন্তু কিছু না করার কষ্ট আমাকে সব সময় কুঁড়ে কুঁড়ে খেত।নিজের মধ্যে একটা চাপা হতাশা কাজ করতো। নিজেকে অনেক ছোট মনে হতো আমি কিছু করি না।কিন্তু কিছু করার প্রবল ইচ্ছা মনের মধ্যে সবসময় কাজ করে ।সাহস আর সহযোগিতা পাইনি বলে শুরু করতে পারিনি।

উদ্যোক্তা হিসেবে আপনার পথচলা শুরু কিভাবে?

২০২০ সালের মার্চ মাস তখন চলছিল বিশ্ব জুড়ে করোনা মহামারী। প্রায় পুরো বিশ্ব স্থির হয়ে পরেছিল।লকডাউন চলছিল। ঘরেই সারা দিন থাকতে হতো।অনেক জিনিসপত্র প্রয়োজন হলেও হাতের নাগালে পাওয়া যেত না।নিজের প্রয়োজন থেকে অভাব ফিল করলাম।অনলাইন বিজনেস কতটা প্রয়োজন এই মহূর্তে।তখন আমার নিজের জমানো মাত্র পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে কিছু শাড়ি এনে শুরু করলাম।তারপর থেকে আস্তে আস্তে বেশ সাড়া পেলাম।যদিও শুরু টা বেশ কঠিন ছিল কিন্ত আমি থেমে যাইনি প্রতিনিয়ত চেষ্টা আর পরিশ্রম করেই যাচ্ছি।

আপনি কি ধরনের পন্য নিয়ে কাজ করছেন?

আমি দেশীয় সবধরনের শাড়ি, থ্রিপস, বেডশিট, পাঞ্জাবী আর হোম মেইড খাবার নিয়ে কাজ করছি।

একজন নারী উদ্যোক্তার কি কি বাধার সম্মুখীন হতে হয় এবং তা কিভাবে সমাধান করা যায়?

উদ্যাক্তা হতে গিয়ে যে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম তা হলো পণ্যের সঠিক সোর্সিং। এজন্য আমাকে অনেক কাঠ খোর পোহাতে হয়েছে । উদ্যাক্তা হতে আমি সব থেকে বেশি সার্পোট পেয়েছি আমার ছেলে এবং মেয়ের থেকে পাশাপাশি আমার হাজব্যান্ড এর কাছে।আমরা নারী আমরাই পারি ,এই স্লোগান কে মনে প্রাণে বিশ্বাস করি।অনেক সফল নারী উদ্যোক্তাই আমার জীবনের অনুপ্রেরণা। আমি ভালোবাসি আমার উদ্যোগ কে,ভালবাসি আমার কাজকে। এই কাজের মাধ্যমেই পেয়েছি আমি আমার সম্মান আমার পরিচয়। আমি একজন উদোক্তা। এই পরিচয় দিতে আমি গর্ববোধ করি। এখন আমি আর শুধু গৃহিণী নই আমি একজন উদ্যোক্তা।

আপনার উদ্যোগ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনেক বিশাল জানিনা কতটুকু সফল হতো পারব তবুও আমার স্বপ্নকে নিয়ে দিন রাত চেষ্টা আর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমার উদ্যোগ কে একটা ব্রান্ড এ পরিনত করা। পেইজ – Porichiti Foodos

Kazi Naima Ferdousi

Related post