কোথায় কেমন পোশাক নির্বাচন করবেন

 কোথায় কেমন পোশাক নির্বাচন করবেন


ধরা যাক আগামীকাল আপনার অফিসের প্রথম দিন।নতুন পরিবেশ, নতুন সহকর্মী, নতুন দায়িত্ব ইত্যাদি সবকিছু মিলিয়ে আপনি একইসাথে ভীষণ এক্সাইটেড এবং নার্ভাস। কিন্তু চিন্তার বিষয় হলো আপনি কোনোভাবেই ঠিক করতে পারছেন না যে কেমন ধরনের পোশাক পরে অফিসে যাবেন।

কি? পরিস্থিতিটা পরিচিত লাগছে, না? ঠিক ধরেছেন! আলমারি ভর্তি হরেক রকমের পোশাক থাকা সত্ত্বেও আমাদের মেয়েদের প্রায়শই কোথায় কেমন পোশাক পরে যাবো এ নিয়ে চিন্তার মাঝে পড়তে হয়।অনেক সময় আমরা বুঝে উঠতে পারিনা কোন পোশাকটি কোন উপলক্ষ্যের জন্য উপযোগী হবে। অথচ একটু সময় নিয়ে বুদ্ধিমত্তার সাথে পোশাক বাছাই করলেই আমরা হয়ে উঠতে পারি অন্যদের চেয়ে রুচিশীল এবং অনেক বেশি আকর্ষণীয়। তাই আজকের লেখায় আলোচনার চেষ্টা করছি কিভাবে আপনারা সঠিকভাবে উপলক্ষ্যভেদে আপনাদের পোশাক বাছাই করতে পারেন।

অফিস
অফিস বরাবরই ফরমাল জায়গা। তাই অফিসে যাবার পোশাক হতে হবে শালীন,ফরমাল এবং রুচিসম্মত। অনেকে ফরমাল বলতে কেবলই শার্ট -প্যান্ট -স্যুট এগুলো বুঝে থাকেন। তবে মেয়েদের ক্ষেত্রে শাড়ি, সালোয়ার কামিজকেও আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ফরমাল পোশাক ধরা হয়। তাই অফিসে যেকোনো শালীন সুতি কাপড়ের সালোয়ার কামিজ বা শাড়ি পরতে পারেন৷কেননা যেহেতু আমাদেরকে দিনের একটা লম্বা সময় অফিসে থাকতে হয়, তাই সুতি কাপড়ের পোশাকই সবচেয়ে বেশি আরামদায়ক হবে।


পোশাক খুব রঙচঙা না হওয়াই ভালো। হালকা নীল, গোলাপি, ধূসর ইত্যাদি রঙ বেছে নিতে পারেন। তবে বলে রাখা ভালো, যদি আপনার অফিসে কোনো নির্দিষ্ট ড্রেসকোড না থাকে এবং আপনি নিজে যদি কমফোর্টেবল হয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে আপনি শার্ট -প্যান্ট ও অবশ্যই পরতে পারেন৷

ইউনিভার্সিটি
ইউনিভার্সিটিতে আমরা আমাদের জীবনের সবচাইতে বর্ণিল সময়টা কাটিয়ে থাকি। এখানেই আমরা দিনের লম্বা একটা সময় পড়াশোনা,খাওয়াদাওয়া, হাসিঠাট্টা এবং আড্ডার মধ্য মাঝে পার করি। তাই ইউনিভার্সিটির জন্য পোশাক হওয়া উচিত আরামদায়ক এবং রঙিন।

যেহেতু এখানে পোশাকের রঙ ও ধরণের কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই তাই পরতে পারেন বিভিন্ন রঙের, বিভিন্ন প্যাটার্নের সালোয়ার কামিজ, কুর্তি, টপস ইত্যাদি। তবে পোশাকের কাপড়টা অবশ্যই আরামদায়ক হতে হবে এবং এমন হতে হবে যেন পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে। খসখসে যেকোনো ধরনের কাপড়ের পোশাক এক্ষেত্রে পরিহার করা উচিত। বেছে নিতে পারেন সুতি, লিলেন ইত্যাদি কাপড়ের যেকোনো পোশাক৷

Image Source: pexels.com

বিয়ে বাড়ি
বিয়ে বাড়িতে গেলে আমরা সবাই চাই যেন আমাদের অন্যদের চেয়ে আলাদা এবং সুন্দর লাগে। তাই বিয়েবাড়িতে যাওয়ার জন্য পোশাক বাছাইয়ে হতে হবে অধিক কৌশলী। বিয়ে বাড়িতে পোশাক হওয়া চাই গর্জিয়াস। তাই নিশ্চিন্তে কোন জমকালো কাজ করা সিল্ক, মসলিন, কাতান না জর্জেটের শাড়ি বেছে নিতে পারেন। শাড়িতে স্বাচ্ছন্দবোধ না করলে ভারি কাজ করা কোনো সালোয়ার কামিজ, গাউন বা কুর্তি পরতে পারেন।

দিনের বেলার অনুষ্ঠান হলে কিছুটা হালকা রঙ এবং রাতের বেলার অনুষ্ঠান হলে কিছুটা গাঢ় রঙ এর পোশাক প্রাধান্য দিতে পারেন৷ তবে পোশাকের রঙ, ডিজাইন, ধরণ ইত্যাদি একেকজনের রুচি এবং পছন্দভেদে আলাদা হয়ে থাকে। সুতরাং নিজের রুচি এবং প্রাধান্য অনুসারে বিয়ে বাড়ির জন্য পোশাক নির্বাচন করুন।

দাওয়াত
অনেকেই আছেন যারা বিয়েবাড়ি এবং দাওয়াত এ দুটি উপলক্ষ্যের জন্য একই ধরনের পোশাক বাছাই করেন যা সঠিক নয়। দাওয়াতের ক্ষেত্রে পোশাক হবে কিছুটা জমকালো তবে এক্ষেত্রে মাথায় রাখতে হবে পোশাকটি বেশ অনেকক্ষন সময়ের জন্য আরামদায়ক হবে কিনা। দাওয়াতে যাওয়ার জন্য বেছে নিতে পারেন জামদানি,মনিপুরী বা হালকা কাজ করা সিল্কের শাড়ি। এছাড়াও পরতে পারেন সুতা, অ্যাপ্লিক বা পুঁতির কাজ করা সালোয়ার কামিজ যা সহজেই মানিয়ে যাবে ।


পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে দাওয়াতের মূল উদ্দেশ্য হলো কিছু মানুষের একসাথে ভালো সময় কাটানো। তাই খুব জমকালো পোশাক দাওয়াতের জন্য না পরাটাই ভালো। পাশাপাশি দাওয়াতে গেলে অনেক সময় ছোটাছুটি করতে হয় এদিক ওদিক৷ তাই খুব জমকালো পোশাক পরে গেলে তা আপনার চলাফেরার ক্ষেত্রে অস্বস্তিকর হতে পারে। তাই এমনভাবে দাওয়াতের পোশাক নির্বাচন করতে হবে যেন একইসাথে দেখতে আকর্ষণীয় লাগে এবং পোশাকটিও আরামদায়ক হয়।

আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে এই উপলক্ষ্যগুলোকে মাথায় রেখেই মূলত পোশাক নির্বাচন করতে হয়। উপলক্ষ্যভেদে পোশাক নির্বাচনের মূল উদ্দেশ্য কিন্তু নিজের ব্যক্তিত্ব সবার সামনে পরিপূর্ণভাবে ফুটিয়ে তোলা। তাই পোশাক নির্বাচনের সময় ওপরের বিষয়গুলো মাথায় রাখুন, দেখবেন আপনাকে আর পোশাক নির্বাচন নিয়ে কোনোরকম বিভ্রান্তিতে পড়তে হবেনা!

লিখেছেনঃ সুমাইয়া রহমান

RedLive

Related post