ছেলের অনুপ্রেরণায় মায়ের উদ্যোক্তা হিসেবে পথচলা

 ছেলের অনুপ্রেরণায় মায়ের উদ্যোক্তা হিসেবে পথচলা

নারীরা এখন আর পিছিয়ে নেই। নিজের পরিশ্রম ও মেধার জোরে হয়ে উঠছেন পারদর্শী ও স্বনির্ভরশীল। অনেকেই ছোট ছোট উদ্যোগ নিয়ে তার থেকেই হয়ে উঠছেন বড় উদ্যোক্তা। উদ্যোক্তা তাজমিনা আক্তার রুমা তার Ruma’s Art নিয়ে এগিয়ে চলেছেন স্বপ্নের পথে

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন মিরপুরের প্রতিনিধি জান্নাতুল ফেরদৌস

°আপনার সম্পর্কে জানতে চাই।

আমি তাজমিনা আক্তার রুমা। জন্মসূত্রে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আমার বাড়ি। বাবার চাকরির সুবাদে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় ঘুরে বেড়ানোই ছিল আমাদের জীবন চলার পথে একটি অধ্যায়। সেই ছোটবেলায় কিছুদিন ছিলাম আমরা খুলনাতে। তারপর আবারও আমার বাবার পোস্টিং হলো চট্টগ্রাম, কুমিল্লাতে৷ শেষ পর্যন্ত আমরা কুমিল্লায় স্যাটেল হয়ে গেলাম। 

আমি কুমিল্লা ফরিদা বিদ্যায়তন থেকে এসএসসি এবং ওমেন্স কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন ‌করি । তারপর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে স্নাতক সম্পন্ন করি। আমার বাবার নাম মোঃ সাদেক খান। উনি পেশায় একজন চাকরিজীবী ছিলেন। আমার মায়ের নাম আফিয়া বেগম, তিনি একজন গৃহিণী ছিলেন। আমরা তিন বোন তিন ভাই, বোনদের মধ্যে আমি ছোট। আলহামদুলিল্লাহ! আমি সবার সাথে মিশতে ভালোবাসি, সবাইকে উপকার করতে ভালোবাসি।  

°কিভাবে আপনার উদ্যোগটি শুরু করেছেন?

আমি একটি ছোটখাটো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিজনেস শুরু করার পর অনেক সারা পেলাম। ভালোই চলছিল। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! শুরু হয়ে গেল করোনাকালীন কঠিন বাস্তবতা। সেখানে আমি কিছুটা থমকে গিয়েছিলাম। কি করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না,আর তখনই শুরু হয়ে গেল অনলাইন ব্যবসা- আমার উদ্যোক্তা জীবন।


  ফেলে দেয়া  সসের বোতল, মেওনেস এর বোতলগুলো দিয়ে পুতি, লেইস, বিভিন্ন রঙের সংযোগে তৈরি করলাম সম্পূর্ণ ইউনিক ডিজাইনের ফুলদানি, ফুলের টপ, বক্স ইত্যাদি। এরপর ছোটখাটো অল্প কিছু প্রোডাক্ট নিয়ে আমাদের দেশীয় শতরঞ্জি নিয়ে কাজ আরম্ভ করলাম। তারপর নতুন করে সংযোজন করলাম কুমিল্লার বিখ্যাত বাটিক সিল্ক শাড়ি ও সিলেটের মনিপুরী শাড়ি। আলহামদুলিল্লাহ! ভালোই সাড়া পেলাম। একজন আমাকে প্রশ্ন করছিল, আপনার বাড়ি কোথায়? আমি হেসে উত্তর দিলাম, আমার বাড়ি সারা বাংলাদেশে। কারণ আমি একজন বাংলাদেশী। একজন ভালো উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচয় পেলাম।

°আপনার উদ্যোগের পিছনের কারণ কি?

আমার উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে অনেক অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত,ফ্যামিলিতে সবাই কেমন যেন ডিজঅনার করছিলো আমাকে, পরিবারের সকলের ধারনা ছিল আমি কিছুই করতে পারবো না। সেজন্য আমি একটি ছোটখাটো ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট বিজনেস শুরু করলাম সেখানে অনেক সারা পেলাম।

°আপনাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রেরণা কে দিয়েছে?

আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট আমার ছেলে।

°কি কি পণ্য নিয়ে বর্তমানে কাজ করছেন?

বিভিন্ন ধরনের হাতে বানানো শোপিস, বাটিক সিল্ক শাড়ি ,শতরঞ্জি ও মনিপুরী শাড়ি ইত্যাদি দেশি পণ্য নিয়ে কাজ করছি।

°একজন উদ্যোক্তা হিসেবে কি কি বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল?

পরিবার, সমাজ এসব দিক থেকে বাঁধা পেয়েছি অনেক কিন্তু আমি হার মানি নি। আমার নিকটাত্মীয় খুব কাছের মানুষ কাছের কিছু মানুষগুলো থেকে অনেক তিরস্কৃত হয়েছি বহুবার। কিন্তু আমি এসবে কর্ণপাত করি নি। আমি অত্যন্ত ভাগ্যবান যে,আমার সবচেয়ে বড় সাপোর্ট ছিল আমার ছেলে।

°উদ্যোগ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

নিজেকে একজন দেশসেরা উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই এবং একজন সফল আন্তর্জাতিক নারী উদ্যোক্তা হিসেবে জাতির সামনে তুলে ধরতে চাই।

Brinty Saha

Related post