জ্যাক-মা’র ব্যর্থতা ও সফলতার ৪০ টি উক্তি ও‌ বানী

 জ্যাক-মা’র ব্যর্থতা ও সফলতার  ৪০ টি উক্তি ও‌ বানী

একজীবনে একটা মানুষ সবকিছু পায়না। কিছু না কিছু ছাড় দিতে হয়। যা ছাড় দিতে হয় তাঁর চেয়েও ভালো কিছু অপেক্ষা করে। এই অপেক্ষার অবসান ঘটাতেই মূলত কিছু চাওয়া-পাওয়া আমরা জীবন থেকে ছাড় দেই। তেমনি জীবন যুদ্ধের কথা বলি! আপনার স্বপ্ন আপনি একদিন ডাক্তার হবেন! ডাক্তার হবার স্বপ্নে বিভোর হয়ে দিন-রাত পড়ে গেলেন।

একসময় দেখলেন সরকারি মেডিকেলেতো চান্স হলোই না,বেসরকারি মেডিকেলেও পড়া হলো না! যে কোনো একটা বেসরকারি কলেজে একটা সাবজেক্ট নিয়ে শেষ পর্যন্ত অনার্স পড়তে হচ্ছে । এ নিয়ে পাড়া-প্রতিবেশির কটূক্তি – পরিবারের চাপ সবমিলিয়ে আপনি একজন হতাশাগ্রস্ত মানুষ। বেসরকারি কলেজ’এ পড়া যতটা না লজ্জার আমরা এটিকে তার’চে বেশি লজ্জার বিষয় করে তুলি।

সফল হতে গেলে কোথায় পড়ছি না পড়ছি এই জিনিসগুলো বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না।ফেল করা, ব্যর্থ হওয়া, পরীক্ষায় মার্কস কম পাওয়া,তাঁর মানে এই নয় যে আপনি হেরে গেলেন,এর অর্থ এটাও না যে আপনি জীবনে অন্যকিছু করার অধিকার রাখেন না! স্বপ্ন যেমনই হোক না কেন চেষ্টা হোক হাজার রকম। আপনি ডাক্তার হতে চান? হবেন! তাঁর পাশাপাশি নিজেকে জানুন। নিজেকে জানতে গিয়ে আবিষ্কার করবেন আপনার ভেতর এমন অনেকগুলো প্রতিভা আছে যা সহজে বড় হওয়ার জন্যে ডাক্তার হবার উদ্যেমের চেয়েও বেশি!

জনপ্রিয় ট্রেডিং সাইট আলিবাবা ডট কম এর কর্ণধার জ্যাক মা এর গল্প শুনুন ; যিনি জাতীয় কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় দুইবার ফেল করেন। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় তিনি গণিতে পেয়েছিলেন ১। কেএফসিতে ২৪ জন আবেদনকারীর মধ্যে ২৩ জন নিয়োগ পেয়েছিলেন।বাকী ১ জন পাননি ; আর পাননি বলেই তিনি চীনের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের একজন।

আমরা যাকে আলিবাবা ডট কম এর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে চিনি। জ্যাক মা একজন সফল উদ্যোক্তার পাশাপাশি তিনি একজন প্রফেশনাল মোটিভেশন স্পিকার! তাঁর বক্তব্য শুনে অনুপ্রাণিত হয়েছেন অনেক তরুণ। তিনি তাঁর এই উদ্যেক্তা জীবনে তরুণদের জন্যে দিয়েছেন অনেক পরামর্শ পাশাপাশি অনুপ্রেরণার জোগান। তাই, আজ আপনার জন্য আমরা নিয়ে এসেছি জ্যাক-মার ৩৫ টি বিখ্যাত উক্তি ও বানী:

#১:“যদি তোমার স্বপ্ন দেখার সাহস থাকে, আর সেই স্বপ্নের জন্য যদি মরতে রাজি থাকো, তবে টাকার অভাব কোনও বাধাই হবে না…”

#২.“আজকের দিনটি কঠিন, কাল হবে অন্ধকার; তারপর সূর্যকে উঠতেই হবে”

#৩.“যদি চেষ্টাই না করো, তবে কিভাবে বুঝবে যে, তুমি পারতে কি পারতে না?”

#৪.“যদি তুমি ৩৫ বছর বয়সেও গরিব থাকো, তবে তা শুধুই তোমার দোষ”

#৫ “সমস্যা আর অভিযোগ যেখানে যত বেশি, সেখানে সুযোগও তত বেশি”

#৬. “পৃথিবীকে বদলাতে চাইলে, আগে নিজেকে বদলাও”

#৭. “জীবনে একবার হলেও কোনওকিছুর জন্য মন প্রাণ উজাড় করে কাজ করো। নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করো। এতে খারাপ কিছু হতেই পারে না”

#৮. “তরুণদের সাহায্য করুন। ছোটদের দেখে রাখুন। কারণ ছোটরা একদিন বড় হবে। তারা তাদের মনে আপনার বপন করা বীজ ধারণ করবে। আর যখন তারা বড় হবে, তারা এই পৃথিবীকে বদলে দেবে”

#৯.“আপনার মাঝে যে জিনিসটি থাকা সবচেয়ে জরুরী, তা হল ধৈর্য”

#১০. “৩০ বছর বয়সের আগে একটি ছোট কোম্পানীতে কাজ করুন। সেখানে আপনি ধৈর্য ধরা ও স্বপ্ন দেখা শিখতে পারবেন”

#১১. “যদি ৯টি খরগোশকে মাঠে চরতে দেখেন, এবং আপনার উদ্দেশ্য হয় তাদের মাঝে ১টি ধরা। তাহলে ১টির ওপরই মনযোগ দিন”

#১২.“যতক্ষণ হাল না ছাড়ছেন, ততক্ষণ আপনার জেতার সম্ভাবনা আছে। হাল ছেড়ে দেয়াই সবচেয়ে বড় পরাজয়”

#১৩.“তুমি কি বলেছ, তা পৃথিবী মনে রাখবে না। কিন্তু তোমার কাজকে চিরদিন মনে রাখবে”

#১৪.“তুমি অনেক মানুষের চিন্তাকে কোনওভাবেই এক করতে পারবে না। কিন্তু তুমি একটি লক্ষ্যকে সবার লক্ষ্য বানাতে পারবে”

#১৫.“তুমি অবশ্যই তোমার প্রতিযোগীর থেকে শিখবে। কিন্তু কখনওই কপি করতে যাবে না। কপি করেছ, কি মরেছ”

#১৬.“একজন নেতাকে অবশ্যই স্বপ্নদর্শী হতে হবে। সেই সাথে, ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ধারণা করার ক্ষমতা তার অনুসারীর চেয়ে বেশি হতে হবে”

#১৭.“মনকে উন্নত করো, সংস্কৃতিকে উন্নত করো, নীতিকে উন্নত করো, আর অবশ্যই, জ্ঞানকে উন্নত করো।”

#১৮.“অতীতের সাফল্য হয়তো তোমাকে ভবিষ্যতের ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যাবে। কিন্তু তুমি যদি প্রতিটি ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিতে পারো, তবে দিন শেষে তুমি একজন সফল মানুষই হবে।”

#১৯.“আমি কখনও ভাবিনি, আমার টাকা শুধুই আমার সম্পদ। এটা আসলে সবার সম্পদ।”

#২০.“তুমি যদি ২১ শতককে জিততে চাও, তবে অবশ্যই তোমাকে অন্যদের উন্নতির জন্য কাজ করতে হবে । নিশ্চিত করো, যেন তারা তোমার চেয়েও ভালো হয়।” #২১.“তারা আমার নাম দিয়েছে, ‘পাগল জ্যাক’। আমি মনে করি পাগল খুব একটা খারাপ নয়। আমরা পাগল, কিন্তু আমরা বোকা নই।”

#২২.”সবাই তোমাকে পছন্দ করবে – এটা অসম্ভব। কিন্তু এটা খুবই সম্ভব যে, সবাই তোমাকে সম্মান করবে।” #২৩.“যাত্রা যত কঠিনই হোক, প্রথম দেখা স্বপ্নটা তোমার প্রতিদিন দেখে যাওয়া উচিৎ। এটা তোমাকে অনুপ্রেরণা দেবে, আর হতাশা থেকে বাঁচাবে।”

#২৪.“যখন তুমি আকারে ছোট, তোমার গায়ের শক্তির বদলে মগজের শক্তির ওপর ভরসা করা উচিৎ।”

#২৫. “একজন নেতার সহ্যক্ষমতা অনেক বেশি হওয়া উচিৎ। তার কর্মীরা যা সহ্য করতে পারবে না, সে যেন তা সহ্য করতে পারে।”

#২৬.“আমি ইতিহাস বদলাতে চাই, আমি চাই জীবনে অর্থপূর্ণ কিছু করতে। সেই সাথে কোটি মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করতে চাই, যেভাবে আমরা লক্ষ লক্ষ ছোট ব্যবসাকে আলিবাবার মাধ্যমে প্রভাবিত করেছি। যাতে তারা আমাদের সম্মান করে, কারণ আমরা তাদের জীবনকে উন্নত করেছি।”

#২৭.“ব্যবসায় সফল হতে হলে প্রতিযোগীদের ওপর নজরদারী বন্ধ করো। এর বদলে তোমার ক্রেতাদের প্রতি মনযোগী হও।”

#২৮.“যদি বিরাট কোম্পানী হতে চাও, তবে চিন্তা করো মানুষের সমস্যাটি তুমি সমাধান করতে পারো। মানুষের সমস্যা সমাধান করতে পারাটাই মূল ব্যাপার।”

#২৯.“আমার কাজ হলো, অন্যদের কাজ খুঁজে পেতে সাহায্য করা।”

#৩০.“আজকাল টাকা কামানো খুব সোজা। কিন্তু বলার মত পরিমান টাকা কামানোর পাশাপাশি, একই সময়ে সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন ও পৃথিবীকে উন্নত করা খুব কঠিন কাজ।”

#৩১.“মানুষের কোনও ধারণাই নেই, সে আসলে কতটা ক্ষমতা রাখে!”

#৩২.“আমি নিজেকে অন্ধ বাঘের পিঠে বসা একজন অন্ধ মানুষ ভাবি।”

#৩৩.“অন্যের সাফল্যের বদলে, অন্যের ভুল থেকে শেখার চেষ্টা করো। বেশিরভাগ মানুষ মোটামুটি একই রকম কারণে ব্যর্থ হয়। অন্যদিকে সফল হওয়ার অনেক কারণ থাকতে পারে।”

#৩৪.“তোমার সাথে যদি একটি বিষয়কে আলাদা আলাদা দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখা বেশ কিছু লোক থাকে, তবে তোমার জন্য বিজয়ী হওয়া সহজ হবে।”

#৩৫. “প্রতিটি মানুষের একটি স্বপ্ন থাকা উচিৎ।”

#৩৬.“আমি ব্যর্থ হলেও কোনও সমস্যা ছিল না। অন্তত আমার আইডিয়াটা মানুষ জানতো। আমি সফল না হলেও, অন্যকেউ নিশ্চই হতো।”

#৩৭.“আমরা যদি একটি ভালো টিম হই, এবং লক্ষ্য সম্পর্কে আমাদের পরিস্কার ধারণা থাকে, তবে আমাদের ১ জন ওদের ১০ জনকে হারাতে পারবে।”

#৩৮.”যদি আমরা সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করি, তবে এটা কোনও হাই-টেক কোম্পানী নয়, এবং আলিবাবা কোনওদিন সফল হবে না। যদি আমাদের মাঝে ৮টা-৫টা কাজ করার মনোভাব থাকে, তবে আমাদের অন্যকিছু করা উচিৎ।”

#৩৯.“অতি বুদ্ধিমানদের টিমের লিডার একজন বোকা লোক হওয়া উচিৎ। যদি একটি টিমে সবাই বিজ্ঞানী হয়, তবে তাদের নেতৃত্বে একজন অবিজ্ঞানী থাকলে ভালো। কারণ তার চিন্তা ভাবনা হবে আলাদা। তার কাজ হবে বিজ্ঞানীরা যে প্রজেক্টে আছে, সেটা নিয়েই যেন গবেষণা করে – তা নিশ্চিত করা।”

#৪০.-“৫০ বছর বয়স হওয়ার পর তোমার জ্ঞান ও সম্পদকে নতুনদের সাহায্য করার কাজে লাগাও। কারণ তারা যে কোনও কাজ তোমার চেয়ে ভালো পারবে।”

ফেল করা, বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পাওয়া অথবা পরীক্ষার ফলাফল কাঙ্ক্ষিত না হওয়া এমন কয়েকটি বিষয় নিয়ে তরুণদের মাঝে বেশ হতাশা কাজ করে। পরীক্ষার খাতার এ’প্লাস কখনো আপনাকে সফলতা এনে দিতে পারবে না তেমনি সামর্থ্যও কখনো সফলতার পথে বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় না।

পাশাপাশি অনেক উদ্যোক্তা আছেন যারা সব সময় হতাশ থাকে।তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই ছোট থেকেই মানুষ বড় হয়! তাই লক্ষ্যে ঠিক রাখুন, লেগে থাকুন, নিজেকে জানুন, অন্তত একটা ভালো গুণ আবিষ্কার করুন। হেরে যাওয়ার আগে একবার ঘুরে দাঁড়ানোর কথা ভাবা যেতেই পারে!

লিখেছেনঃ ফাহমিদা কারীম

RedLive

Related post