নিজের স্বাধীনতার খোজে চাকুরী ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা সঞ্চিতা সুত্র ধর

 নিজের স্বাধীনতার খোজে চাকুরী ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা সঞ্চিতা সুত্র ধর

বর্তমানে আমাদের দেশে লক্ষ্য লক্ষ্য বেকার তরুনী ঘুরে বেড়াচ্ছেন চাকুরির খোজে।সরকারী চাকুরীই যেন সবার স্বপ্ন।কেউ চেষ্টা করে চলেছেন যেকোনো চাকুরির জন্য।কিন্তু প্রায়ই উদ্যোক্তা পথটা এড়িয়ে যাচ্ছেন।যদিও বর্তমানে অনলাইন বিজনেস এর বৃদ্ধিতে অনেকেই নিজেই বিজনেস শুরু করছেন।স্বপ্ন দেখছেন নতুন করে,নিজে একা ডানা মেলে উড়ার স্বপ্ন। নিজে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন।অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া সেই সুযোগ করে দিচ্ছে।আকৃষ্ট করছেন ক্রেতাদের বিভিন্ন পন্য নিয়ে।এমনই একজন হচ্ছেন সঞ্চিতা, যিনি নিজের স্বাধীনতার খোজে চাকুরী ছেড়ে বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তা পথ। সকল কটু কথা,বাধা মোকাবিলা করে স্বপ্ন দেখছেন তার উদ্যোগ ” স্বপ্ন ডানা ” নিয়ে।আজ জানব তার চাকুরী ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ নিয়ে ও তার উদ্যোগ “স্বপ্ন ডানা” সম্পর্কে।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার প্রতিনিধি রোয়েনা রহমান

আপনার সম্পর্কে জানতে চাই?

আমি সঞ্চিতা সুত্র ধর। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার মেয়ে। বাবা সেনাবাহিনী তে চাকুরী করতেন।আমরা সেই সুবাদে অনেক জায়গা ঘুরেছি। ডিগ্রী পাস সম্পন্ন করে আমি একটি সুনাম ধন্য বেসরকারি সংস্থায় চাকুরী করি।

উদ্যোক্তা হওয়া কিভাবে চাকুরী থেকে? বাবা মায়ের ইচ্ছা থেকেই কিনা?

নাহ। আমার বাবার ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হই। মা চাইতেন, ব্যাংকে চাকুরী করি। ২০০৮ সালে আমার চাকুরী হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু জমজ মেয়ে নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম বলে বিশ্রামে ছিলাম।আর করা হল না সরকারী চাকুরী। এর আগে ২০০২ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে আমার ফিল্ড অফিসার হিসেবে ও চাকুরী হয়।যাই হোক, চারটি বেসরকারি চাকুরী আমি করি।

একটা সময় মনে হল যে আমি আর অন্যের গোলামি না করে নিজের স্বাধীনতায় নিজেই কাজ করব। জবাবদিহিতা নিজের কাছে। বাহবা,সমালোচনা সব ই নিজের কাছে। তাই ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসেই চাকুরী ছেড়ে দিই। তারপরই সিদ্ধান্ত নেই যে নিজে কিছু করব,উদ্যোক্তা হব।

গত বছর করোনাকালীন সময়ে এক বন্ধু আমায় উই এ ইনভাইট করে।আমি প্রতিদিন সবার কমেন্ট পড়তাম, লাইক দিতাম। যত দিন যাচ্ছিল আমার ভিতরে উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন বৃদ্ধি পেতে থাকে।

উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুটা কখন?

এপ্রিল মাসে আমি পুরোদমে উদ্যোক্তা হবার নেশায় নেমে পড়ি কাজে। “উইও” তে জয়েন করি ৭ ই এপ্রিল। এতটা ই ভাগ্যশালী আমি মাত্র ৫ দিনে মডারেটর হিসেবে নির্বাচিত হই।আমি কিছুই জানতাম না।কিন্তু, প্রিয় এডমিন রোয়েনা আপু আমাকে সব সহজ করে বুঝিয়ে দেন কিভাবে কি করতে হবে। কাভার পেইজে আসি কমপক্ষে চার বার এসেছি।এতে আমার মন আর ও খুশিতে ভরে যায়।উৎসাহ বেড়ে যায়।

কি কি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন?

আমি এখন কুমিল্লার বিখ্যাত খাদি পাঞ্জাবী, বেবি নকশি কাঁথা, এ্যানটিক গহনা, উত্তর বংগের আসল চাকের মধু দিয়ে কাজ করছি।

উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে কিনা এবং সবচেয়ে বেশি কার সাপোর্ট পেয়েছেন?

পরিবারের সবাই অতটা রাজি ছিল না। বাবা, মা, স্বামী কেউ ই তেমন খুশি ছিল না। চারদিকের লোক জনেরা বলছিল এত পড়ালেখা করে কাপড়/ মধু বিক্রি করবা? এমন অনেক বাঁকা কথা শুনেছি। আমার ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা ও সাপোর্ট পেয়েছি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

ভবিষ্যতে আর ও বেশি কাজ করতে চাই, যারা মধুয়ালী, পাঞ্জাবীওয়ালী বলে নাক সিটকাইল তারাই যেন থমকে দাঁড়ায়। নারী হিসেবে সমাজে, পরিবারে নিজের শক্ত একটা পরিচিতি দাঁড় করাতে চাই। ভবিষ্যতে খাদি পাঞ্জাবী, শাড়ি, কুর্তি নিয়ে ও কাজ করতে চাই।

RedLive

Related post

নিজের স্বাধীনতার খোজে চাকুরী ছেড়ে সফল উদ্যোক্তা সঞ্চিতা সুত্র ধর

বর্তমানে আমাদের দেশে লক্ষ্য লক্ষ্য বেকার তরুনী ঘুরে বেড়াচ্ছেন চাকুরির খোজে।সরকারী চাকুরীই যেন সবার স্বপ্ন।কেউ চেষ্টা করে চলেছেন যেকোনো চাকুরির জন্য।কিন্তু প্রায়ই উদ্যোক্তা পথটা এড়িয়ে যাচ্ছেন।যদিও বর্তমানে অনলাইন বিজনেস এর বৃদ্ধিতে অনেকেই নিজেই বিজনেস শুরু করছেন।স্বপ্ন দেখছেন নতুন করে,নিজে একা ডানা মেলে উড়ার স্বপ্ন। নিজে স্বনির্ভর হওয়ার স্বপ্ন।অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়া সেই সুযোগ করে দিচ্ছে।আকৃষ্ট করছেন ক্রেতাদের বিভিন্ন পন্য নিয়ে।এমনই একজন হচ্ছেন সঞ্চিতা, যিনি নিজের স্বাধীনতার খোজে চাকুরী ছেড়ে বেছে নিয়েছেন উদ্যোক্তা পথ। সকল কটু কথা,বাধা মোকাবিলা করে স্বপ্ন দেখছেন তার উদ্যোগ ” স্বপ্ন ডানা ” নিয়ে।আজ জানব তার চাকুরী ছেড়ে উদ্যোক্তা হওয়ার পথ নিয়ে ও তার উদ্যোগ “স্বপ্ন ডানা” সম্পর্কে।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার প্রতিনিধি রোয়েনা রহমান

আপনার সম্পর্কে জানতে চাই?

আমি সঞ্চিতা সুত্র ধর। চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার মেয়ে। বাবা সেনাবাহিনী তে চাকুরী করতেন।আমরা সেই সুবাদে অনেক জায়গা ঘুরেছি। ডিগ্রী পাস সম্পন্ন করে আমি একটি সুনাম ধন্য বেসরকারি সংস্থায় চাকুরী করি।

উদ্যোক্তা হওয়া কিভাবে চাকুরী থেকে? বাবা মায়ের ইচ্ছা থেকেই কিনা?

নাহ। আমার বাবার ইচ্ছা ছিল শিক্ষক হই। মা চাইতেন, ব্যাংকে চাকুরী করি। ২০০৮ সালে আমার চাকুরী হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। কিন্তু জমজ মেয়ে নিয়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিলাম বলে বিশ্রামে ছিলাম।আর করা হল না সরকারী চাকুরী। এর আগে ২০০২ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে আমার ফিল্ড অফিসার হিসেবে ও চাকুরী হয়।যাই হোক, চারটি বেসরকারি চাকুরী আমি করি।

একটা সময় মনে হল যে আমি আর অন্যের গোলামি না করে নিজের স্বাধীনতায় নিজেই কাজ করব। জবাবদিহিতা নিজের কাছে। বাহবা,সমালোচনা সব ই নিজের কাছে। তাই ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসেই চাকুরী ছেড়ে দিই। তারপরই সিদ্ধান্ত নেই যে নিজে কিছু করব,উদ্যোক্তা হব।

গত বছর করোনাকালীন সময়ে এক বন্ধু আমায় উই এ ইনভাইট করে।আমি প্রতিদিন সবার কমেন্ট পড়তাম, লাইক দিতাম। যত দিন যাচ্ছিল আমার ভিতরে উদ্যোক্তা হবার স্বপ্ন বৃদ্ধি পেতে থাকে।

উদ্যোক্তা হওয়ার শুরুটা কখন?

এপ্রিল মাসে আমি পুরোদমে উদ্যোক্তা হবার নেশায় নেমে পড়ি কাজে। “উইও” তে জয়েন করি ৭ ই এপ্রিল। এতটা ই ভাগ্যশালী আমি মাত্র ৫ দিনে মডারেটর হিসেবে নির্বাচিত হই।আমি কিছুই জানতাম না।কিন্তু, প্রিয় এডমিন রোয়েনা আপু আমাকে সব সহজ করে বুঝিয়ে দেন কিভাবে কি করতে হবে। কাভার পেইজে আসি কমপক্ষে চার বার এসেছি।এতে আমার মন আর ও খুশিতে ভরে যায়।উৎসাহ বেড়ে যায়।

কি কি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন?

আমি এখন কুমিল্লার বিখ্যাত খাদি পাঞ্জাবী, বেবি নকশি কাঁথা, এ্যানটিক গহনা, উত্তর বংগের আসল চাকের মধু দিয়ে কাজ করছি।

উদ্যোক্তা হতে গিয়ে কোনো বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে কিনা এবং সবচেয়ে বেশি কার সাপোর্ট পেয়েছেন?

পরিবারের সবাই অতটা রাজি ছিল না। বাবা, মা, স্বামী কেউ ই তেমন খুশি ছিল না। চারদিকের লোক জনেরা বলছিল এত পড়ালেখা করে কাপড়/ মধু বিক্রি করবা? এমন অনেক বাঁকা কথা শুনেছি। আমার ছেলে মেয়েদের কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা ও সাপোর্ট পেয়েছি।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

ভবিষ্যতে আর ও বেশি কাজ করতে চাই, যারা মধুয়ালী, পাঞ্জাবীওয়ালী বলে নাক সিটকাইল তারাই যেন থমকে দাঁড়ায়। নারী হিসেবে সমাজে, পরিবারে নিজের শক্ত একটা পরিচিতি দাঁড় করাতে চাই। ভবিষ্যতে খাদি পাঞ্জাবী, শাড়ি, কুর্তি নিয়ে ও কাজ করতে চাই।

RedLive

Related post