শখের বসে উদ্যোক্তা, নিজের পরিচয় তুলে ধরতে চান উদ্যোক্তা মাকসুদা ইসলাম।

 শখের বসে উদ্যোক্তা, নিজের পরিচয় তুলে ধরতে চান উদ্যোক্তা মাকসুদা ইসলাম।

উদ্যোক্তা হওয়ার বাসনা মনের গভীরে অনেকেই লালন করেন। তবে লালিত স্বপ্নকে পেছনে ঠেলতে নানা অজুহাত নিজের মনেই তৈরি করে মানুষ। টাকা নেই, আমাকে দ্বারা ব্যবসা হবে না, বিশ্বস্ত মানুষ পাব কই, পরিবারে ব্যবসা করেনি কেউ, আমি কি পারব? আমার জিনিস কিনবে কে—এসব সাত পাঁচ ভেবে অনেকেই এক ধাপ এগিয়ে তিন ধাপ পিছিয়ে যান। আসলে উদ্যোক্তা হওয়ার মতো সাহস দেখাতে পারে খুব কম মানুষ। ঝুঁকি থাকবেই, তবে মনকে সেভাবেই গড়তে হবে। নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে দেখতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন মনের মাঝে সৃজনশীলতা, নেতৃত্বের ক্ষমতা এবং আকাঙ্ক্ষা গড়ে তোলা।এমনই একজন নারী উদ্যোক্তা মাকসুদা ইসলাম। আজ জানব মাকসুদা ইসলাম ও তার উদ্যোগ “Minar shajghar” ও “Rupkatha Jessore” নিয়ে।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন টাঙ্গাইল জেলার প্রতিনিধি রোয়েনা রহমান

আপনার সম্পর্কে জানতে চাই?

আমি মাকসুদা ইসলাম।আমি ইডেন মহিলা মহাবিদ্যালয় হতে এইচএসসি পাশ করি। ১৯৮৯ তে বিয়ে করি।আমার দুই মেয়ে,১ ছেলে।

উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা কিভাবে?

আসলে শখ করে বিজনেস শুরু করি।বিজনেস কি? সিষ্টেম কি?টাকা কিভাবে ইনকাম করতে হবে। এগুলো বুঝতাম না।অভাব অনটন না থাকায় । লোকের ভালো করব।কাজ এর ব্যাবস্থা করব এগুলো চিন্তা ভাবনা ছিল। আমার উদ্যোক্তা জীবনের শুরু ১৯৯৬ থেকে। আর শোরুমের উদ্বোধন করি ২০০৯ সালে। তখন ও বিজনেস ,ম্যানেজমেন্ট কিছু বুঝিনা। আর এই না বুঝে অনেক বড় পরিসরে শুরু করে নিজের বিপদ ডেকে আনি। এখন আমি সফল উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে পারি।

উদ্যোক্তা হওয়া কেনো?

নিজের পরিচয় টা বড় দরকার। আর অসহায় মেয়েদের ও বোনদের জন্য জন্য কিছু করতে হবে, তাদের কাজের ব্যাবস্থা করতে হলে কিছু আয়ের উৎস দরকার।

আপনি কি কি প্রোডাক্ট নিয়ে কাজ করছেন?

যেহেতু যশোর জেলায় বসবাস। এখানে কর্মী পাওয়া যায়। তাই হাতের কাজ এর পন্য নিয়ে কাজ শুরু করি। আমার সিগনেচার পন্য হাতের কাজের বেকসী কটন টূপিস ও থ্রী পিছ। সিঙেল কামিজ পিস। কাঁথা,বেডকভার, কটি, পার্স,শাল।

উদ্যোক্তা হতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট কার পেয়েছেন, কোনো বাধার সম্মুখীন হয়েছেন কিনা?

আসলে শুরু তে কেউ সাপোর্ট করেনা। ফূল ফল, না পেলে কেউ গাছ রাখতে চায়না। তেমনি আমার কাজের শুরু তে সবাই অকারন ছোটাছুটির মানে পেত না। উদ্যোক্তা জীবনের কিন্তু অনেক ব্যাস্ততা থাকে। রুটিন মাফিক চলার সুযোগ থাকে না। সেজন্য শরীর খারাপ হবে এভাবে চললে, এসব বিধি নিষেধ থাকে। সবচেয়ে বেশি সাপোর্ট করেছেন আমার হাজব্যান্ড। এখন আমার পরিবারের সদস্যরা সবাই সাপোর্ট করে।

বর্তমানে প্রেক্ষিতে ব্যাবসায় কেমন চলছে?

যেটা বলছিলাম , নিজের বিপদ ডেকে আনি। বিজনেস চলছে। কর্মচারী আছে। কম্পিউটার এ সব পন্য এন্ট্রি করা আছে। সেল হচ্ছে। পন্য কালেক্ট করছি। মাশাআল্লাহ খুব ভালো চলছে। ইচ্ছে মত লোকের গিফট করছি। এত বড় শোরুমে মে নিজের আত্বীয় স্বজনের আবির্ভাব হলে গিফট না করলে কেমন দেখায়। মোদ্দা কথা হিসাব ছাড়া চলতে থাকি। একবারে ইন্ডিয়া যেয়ে ৭০/৮০ লাখ টাকার মালামাল ক্রয় করি। এভাবে প্রতি বছর একবার ইন্ডিয়া থেকে, আর ঢাকা থেকে চায়না আর দেশীয় পন্য কালেক্ট করা হতো। এক কথায় আমি বিজনেস করছিলাম। বাট বালানস্ করতাম না। আর সেই সুযোগ নিয়েছে অনেক লোক। বিজনেস করতে নেমে ডান,বাম না দেখলে যা হয়। ধার দেনায় জরিয়ে পরি। আর এর ফলেই মাজায় কাপড় বেঁধে নামার একটা কথা বলি আমরা। সেভাবে পূরো উদ্যোক্তা বনে যাওয়া। আমার সব পন্য তে হাতের কাজ থাকতে হবে। এবছর আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি।হাতের কাজের পাঞ্জাবি ও ফতুয়া ও হোলসেল করি।

আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

আমি চাই অন্য এক উচ্চতায় নিজের পরিচয় তুলে ধরতে। আমার আশে পাশে অনেক অসহায় মানুষ। এদের ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করে কাজ এর ব্যাবসহা করতে ১০০০ অসহায় বোনদের আমি যেন সঠিক ভাবে পরিচালনা করতে পারি। আমার চারপাশে ছড়িয়ে আছে যারা তাদের নিত্য আয়ের উৎস হতে চাই আমি। এরা টাকা ইনকাম এর চিন্তার সাথে ভেতরটা ও সুন্দর চিন্তা ভাবনায় ভরে রাখতে পারে।

RedLive

Related post